মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
Published: 27th, April 2025 GMT
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ওবায়দুল (৩০) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরো এক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সীমান্তের ৪৮ নম্বর পিলারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিএসএফ সদস্যরা তার লাশ নিয়ে যান। নিহত ওবায়দুল মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আবু হানিফের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত রাতে স্থানীয় ৩-৪ জন যুবক সীমানা পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এসময় বিএসএফ সদস্যরা গুলি ছুঁড়লে ওবায়দুল নামের এক জন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
আরো পড়ুন:
আখাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক আহত
মাধবপুরের ২ কৃষককে ভারতে নির্যাতন, ফেরত এনেছে বিজিবি
স্বজনদের বরাতে যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘শনিবার রাতে সীমানা পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করেন কয়েকজন যুবক। এসময় বিএসএফ সদস্যরা গুলি ছুঁড়লে ওবায়দুল ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে ভারতের মধুপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তার লাশ নিয়ে যান। এ ঘটনায় আরো এক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন।’’
ঝিনাইদহ বিজিবি ৫৮ ব্যাটালিয়নের কোম্পানী কমান্ডার (সিও) কর্নেল রফিকুল ইসরাম বলেন, ‘‘ভারতের ২০০ গজ অভ্যন্তরে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়েছি। বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’’
মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘লোকমুখে শুনেছি, সীমান্তে এক বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে হত্যার পর লাশ বিএসএফ সদস্যরা নিয়ে গেছেন। বিষয়টি ঝিনাইদহ বিজিবি ৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ককে মুঠোফোনে জানিয়েছি।’’
ঢাকা/শাহরিয়ার/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ ন হত
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস