শর্ট সার্কিটের কারণে শনিবার গ্রিড বিপর্যয় ঘটে। এতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। এ সময়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুৎসহ অন্তত ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

রোববার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল্লাহ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমিনবাজার উপকেন্দ্র থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে এবং গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে দুটি সার্কিটের মধ্যে সংগঠিত সাময়িক শর্ট-সার্কিটের কারণে স্বয়ংক্রিয় সুরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

বিস্তারিত অনুসন্ধানে মন্ত্রণালয় থেকে একটি ও পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের কমিটিতে সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী।

এতে বলা হয়, এই শর্ট-সার্কিটের ফলে পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, বরিশাল ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভোলার নতুন বিদ্যুৎ ও ভোলা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। একইসঙ্গে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করার উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এইচভিডিসির ৫০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে মোট দুই হাজার ২৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতির সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার বিকেল ৫টায় বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ১৪ হাজার ৫২০ মেগাওয়াট আর ফ্রিকুয়েন্সি ছিল ৫০ দশমিক ৪ হার্জ, যা স্বাভাবিক। এ অবস্থায় ৫টা ৪৫ মিনিটে আমিনবাজার-গোপালগঞ্জের ৪০০ কিলোভোল্টের (কেভি) লাইনে ফল্ট সংঘটিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের যশোর, বেনাপোল ও নোয়াপাড়া উপকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ১০টি জেলায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিচ্যুতি হয়।

তবে, ২৩০ কেভি ঈশ্বরদী-ভেড়ামারা-ঝিনাইদহ লাইনটি চালু থাকায় ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া, মাগুড়া, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা উপকেন্দ্রগুলো চালু ছিল। এই লাইনটি ব্যবহার করেই পাওয়ার গ্রিডের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক প্রচেষ্টায় যশোর, বেনাপোল, নোয়াপাড়া উপকেন্দ্রগুলো চালু করে। আর ৬টা ২৫ মিনিটের মধ্যে আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ-আমতলী লাইনটি সচল হয়।

পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু সাপেক্ষে রাত ৯টার দিকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। 'কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিস্তারিত কারণসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো আরও পরিস্কারভাবে জানা যাবে।'

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ন দ রগ ল উপক ন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ