বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিহা) “ওরিক্স প্রেজেন্টস বিহা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (বিসিএল) ২০২৫”এর ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

রবিবার (২৭ এপ্রিল) শেরাটন ঢাকায় এ ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এই প্রতিযোগিতা শুরু হবে ৮ মে ২০২৫ থেকে এবং চলবে টানা ১৪ দিন। চূড়ান্ত ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২৬ মে ২০২৫ তারিখে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠে।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে- আমারি ঢাকা, অ্যাসকট প্যালেস ঢাকা, বেস্ট ওয়েস্টার্ন প্লাস মেপল লিফ, ক্রাউন প্লাজা ঢাকা গুলশান, হানসা-এ প্রিমিয়াম রেসিডেন্স, হলিডে ইন ঢাকা সিটি সেন্টার (আইএইচজি হোটেল), হোটেল ওমনি রেসিডেন্সি ঢাকা, হোটেল সারিনা ঢাকা, ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা, লেকশোর বনানী, লে মেরিডিয়ান ঢাকা, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও ঢাকা, প্লাটিনাম হোটেলস বাই শেলটেক, রেনেসাঁ ঢাকা গুলশান হোটেল, সায়মান বিচ রিসোর্ট লিমিটেড, শেরাটন ঢাকা, সিক্স সিজনস হোটেল, দি পেনিনসুলা চট্টগ্রাম পিএলসি, দি রেইনট্রি ঢাকা এবং দি ওয়েস্টিন ঢাকা।

মোট ২০টি বিখ্যাত হোটেল এরই মধ্যে বিসিএল ২০২৫-এ অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। সবাই একসাথে হাত মিলিয়েছে এক ছন্দে, এক স্বপ্নে। এখানে প্রতিযোগিতা নয়, বন্ধুত্বের গল্প লেখা হবে; প্রতিটি ছক্কায়, প্রতিটি উইকেটে বাজবে একতার জয়ধ্বনি।

ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বোর্ড প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ বলেন, “আতিথেয়তা খাতের পেশাজীবীদের এমন ভিন্নধর্মী উদ্যোগে একত্রিত হতে দেখে সত্যিই ভাল লাগছে, যেখানে তারা কেবল মাঠে প্রতিভা প্রদর্শন করছেন না বরং নিজেদের সম্প্রদায়ের শক্তিও তুলে ধরছেন।”

বিহা এর প্রেসিডেন্ট এইচ এম হাকিম আলী তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “বিহা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২০২৫ আতিথেয়তা খাতের ঐক্য ও উদ্দীপনার প্রকৃত প্রতিচ্ছবি।”

বিহা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২০২৫-এর চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমরা সবাই আতিথেয়তা খাতে কাজ করি খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নিয়ে, দৃঢ় দলীয় চেতনা বজায় রেখে এবং স্টেকহোল্ডারদের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলি। তাই, খেলাধুলায় অংশগ্রহণ মানসিকতা ও শারীরিক সক্ষমতা উভয়ই বৃদ্ধি করে। এটি আমাদের দলগত কাজ ও দায়িত্ববোধও শিক্ষা দেয়। বিহা -কে অসংখ্য ধন্যবাদ, এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্য, যা সকল হোটেলকর্মীদের একই প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করেছে এবং সরকারের অনুমোদন পেয়েছে।”

ওরিক্স প্রেজেন্টস বিহা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২০২৫ পাওয়ার্ড বাই লিলি, সহযোগিতায় নুর আলী ফ্যামিলি ট্রাস্ট, মিডিয়ার আলো ছড়াচ্ছে যমুনা টেলিভিশন। উৎসবের সম্প্রচার সঙ্গী সাইলেন্ট স্পোর্টস। গর্বের জার্সি প্রস্তুত করেছে এমভি ট্রেডার্স। চলাফেরার নির্ভরতা হানসা ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং অ্যাট ইয়োর সার্ভিসেস লিমিটেড।

এছাড়া এই মহাযাত্রায় আস্থা ও সমর্থন যুগিয়েছে সানবিট, টাইলক্স, অ্যাকনল, হারলান, ডাইভার্সি, ইউএস-বাংলা, নুর ট্রেড হাউস, কোয়ালিটি এগ্রো, প্রাণ এগ্রো, বেঙ্গল মিট এবং তাজ এন্টারপ্রাইজ।

বিহা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ একটি পথপ্রদর্শক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, যেখানে বাংলাদেশের সকল বিহা সদস্য হোটেলকে অংশগ্রহণের জন্য উন্মুক্ত আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এটি আতিথেয়তা ও ক্রীড়ার এক অনন্য মেলবন্ধন। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে হোটেলগুলো শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা করে না বরং দলীয় চেতনা ও সৌহার্দ্যের এক দুর্দান্ত উদাহরণ স্থাপন করে। বিলাসবহুল চেইন হোক বা বুটিক হোটেল, প্রতিটি দল তাদের হোটেলের গর্ব এবং খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।

হোটেল স্টাফদের একত্রিত হওয়ার, কর্মস্থলের গণ্ডি ছাড়িয়ে দলগত চেতনা ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলার এই দুর্লভ সুযোগ, যেখানে তারা ক্রিকেট গিয়ারে সজ্জিত হয়ে প্রতিভা প্রদর্শন করতে এবং খেলার উত্তেজনা উপভোগ করতে পারে।

ঢাকা/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ একত র

এছাড়াও পড়ুন:

‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়

‘তাণ্ডব’ সিনেমার গান ‘লিচুর বাগানে’ প্রকাশের পর রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। কফি শফ থেকে বাস, মেট্রোরেল আশপাশে কান পাতলে গানটা শোনা যাচ্ছে। কেউ না কেউ শুনছেন। সামাজিক মাধ্যমের স্টোরি ও রিলসেও গানটি ভেসে বেড়াচ্ছে। চরকি ও এসভিএফের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত গানটির আজ পর্যন্ত (১২ এপ্রিল ২০২৫) ভিউ হয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিয়ন ও ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন।

উচ্ছ্বসিত অনেক দর্শক গানটি নিয়ে মন্তব্যও করেছেন। তাহসিন নামের এক শ্রোতা লিখেছেন, ‘গানটির প্রতিটি সুর, দৃশ্য ও পরিবেশনায় বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অপূর্ব রূপ ফুটে উঠেছে। যাত্রাপালার ফিল্মের আবহে তৈরি এই গানটি যেন গ্রামীণ বাংলার প্রাণস্পন্দন তুলে ধরেছে। লোকেশন থেকে শুরু করে কস্টিউম, প্রতিটি ডিটেইলে আছে নিখুঁত যত্ন।’

গানটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের মধ্যে খুনসুটিও চলছে। বন্ধুকে মেনশন দিয়ে কেউ যেমন প্রশ্ন করছেন, ‘কী রে, বেড়া ডিঙাতে পারলি?’ আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন বল তো, ‘“লিচুর বাগানে” কেন “পিরিতের বেড়া” দিতে হয়?’

প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। শুরুতেই ‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, ‘কে এই ছত্তার পাগলা’ শীর্ষক প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। গবেষক সরোজ মোস্তফার মতে ‘কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুরও বাগানে’ পঙ্‌ক্তির রচয়িতা ও সুরকার ছত্তার পাগলা। তবে সংগীতগবেষক গৌতম কে শুভর মত ভিন্ন। তাঁর মতে, ‘এটি মূলত প্রচলিত ঘেটু গান। “কে দিল পিরিতির বেড়া লিচুর বাগানে?” অংশটি মূল গানের অংশ। ছত্তার পাগলা নিজের মতো করে এর সঙ্গে কথা সংযোজন করেছেন। নেত্রকোনায় ছত্তার পাগলার লেখা রূপটিই বিখ্যাত হয়েছে।’ ২০১৪ সালের এপ্রিলে মারা গেছেন ছত্তার পাগলা। জীবদ্দশায় রচনা ও সুরারোপ করেছেন কয়েক শ গান। মৃত্যুর বছর তিনেক আগে তাঁর কাছ থেকে গানটি শুনে হাতে লিখে রেখেছিলেন আল মামুন চৌধুরী।

আল মামুন চৌধুরীর লেখা অনুযায়ী গানটির কথা:
কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে
লিচুরও বাগানে গো সই…লিচুরও বাগানে …(ঐ)
পাখি খাইছ না লিচু, বন্দে খাইবো
বন্দে লিচু খাইয়া, খুশি হইবো
আমার কাছে আইসা কইবো
কত শান্তি দিবো আমার মনেপ্রাণে (ঐ)
ছোট ছোট লিচুগুলি, বন্দে তুলে আম্বো তুলি
বন্দে দেয় গো আমার মুখে,
আমি দিতে চাই বন্ধুর মুখের পানে…(ঐ)
মিষ্টি লিচু খাইয়া বন্দে, বাঁশি বাজায় মন আনন্দে
আমার মনে লাগে সন্দে বন্ধু সম্ভব জাদু জানে (ঐ)
বাঁশি হাতে পলায় মালা, তারে চায় ছত্তার পাগলা,
করব লইয়া উলামেলা, (২) প্রাণবন্ধুর সনে…(ঐ)

সরল অর্থে ‘বেড়া’ হচ্ছে  প্রতিবন্ধকতা তথা বাধা তৈরির উপকরণ। আর ‘পিরিতের বেড়া’ মানে ভালোবাসায় বাধা। কিন্তু ভালোবাসার এই বাধা তথা প্রতিবন্ধকতা ‘লিচুর বাগানে’ কেন? কবিতা তথা গানে অর্থের তারতম্য অর্থের অনুগত না হয়ে বোধ কিংবা ভাবনার পরবশে প্রস্ফুটিত হয়। ব্যক্তিবিশেষে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ লাভ করে, ভিন্ন ভিন্ন মূল্য পায়।

আরও পড়ুন‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, কে এই ছত্তার পাগলা ০৬ জুন ২০২৫

‘কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে’ একটি ‘ঘাটু গান’ বা ‘ঘেটু গান’। এই গান প্রসঙ্গে জানা যায়, এই গানের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল নৃত্য। অল্প বয়সী একটি ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে তার নৃত্যের মধ্য দিয়ে ঘেটু গান পরিবেশিত হতো। সঙ্গে থাকত ঢোল, হারমোনিয়াম, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। কয়েকটি ‘ঘেটু গানে’র দৃষ্টান্ত দেখা যাক।
(১)
‘তুই আমারে চিনলে নারে
আমি তো রসের কমলা।
বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি
মধ্যে নলের বেড়া।’
(২)
ঘুমাইলা ঘুমাইলারে বন্ধু
পান খাইলায়না
এক বালিশে দুইটি মাথা
সুন্দর কইরা কওরে কথা।
গানগুলো থেকে উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না যে ‘ঘেটু গানে’ যেমন ভাষার সারল্য আছে, তেমনিভাবে রূপকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যাপিত জীবনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা নানা উপকরণ। আর এ ক্ষেত্রে গান রচনার সময় রচয়িতা তাঁর আশপাশ থেকেই গান নির্মাণের উপকরণগুলো যে নিয়ে থাকবেন, সেই ধারণাও পাওয়া যায়। ‘লিচুর বাগানে’ গানের ক্ষেত্রেও বোধ করি এটা ঘটেছে। তাই এই গানে যেমন ‘লিচু বাগানে’র কথা আছে, একইভাবে আছে ‘পাখি’, ‘বাঁশি’ ও ‘লিচু’র কথাও। পাখিকে লিচু না খাওয়ার অনুরোধ করলেও পাখি যেন খেতে না পারে সে কারণেই যে বেড়া দেওয়া হয়েছে; সেই ব্যথাও গানটিতে ফুটে উঠেছে। সব মিলিয়ে ‘লিচুর বাগান’ শেষ পর্যন্ত ‘লিচুর বাগানে’ সীমাবদ্ধ থাকেনি। হয়ে উঠেছে ভালোবাসার প্রতীক।

কথায় আছে, ভালোবাসা জয় করে নিতে হয়। জিতে নেওয়ার মধ্যেই আছে অপার আনন্দ। ভালোবাসায় প্রতিবন্ধকতা থাকাটা মোটেও দোষের নয়। বরং বাধা না থাকাটাই যেন আশ্চর্যের। একইভাবে ভালোবাসা জিতে নেওয়ার পরও পেয়ে গেছি বলে হাল ছেড়ে দিলে চলে না। ‘লিচুর বাগান’কে এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করলে, ‘লিচুর বাগানে’ ‘পিরিতের বেড়া’ তথা ভালোবাসার বেষ্টনী দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত। কেননা ‘ভালোবাসা’কে ভালোবাসা দিয়েই আগলে রাখতে হয়। প্রবল যত্নে আঁকড়ে রাখতে হয়। যেন কোনো কৌতূহলেই তা দুলে না ওঠে, হারিয়ে না যায়।

আরও পড়ুনসাবিলা তো ‘লিচুর বাগানে’ দিয়ে কী যে আগুন লাগিয়ে দিল...০৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৬ জুন ২০২৫)
  • ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সেরা
  • একঝলক (১৫ জুন ২০২৫)
  • ‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৫ জুন ২০২৫)
  • অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আরও যাঁরা পেয়েছেন ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন পুরস্কার ২০২৫’
  • সৌদি আরবের ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ, আবেদনের শেষ তারিখ আজ 
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৪ জুন ২০২৫)
  • মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মাস্টার্স, ক্লাস শুক্র ও শনিবার