ঢাকার সাভারে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় দুর্ঘটনাকবলিত দুটি গাড়ি জব্দ করেছে হাইওয়ে পুলিশ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের গেন্ডা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় নাবিল পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকের সাথে ধাক্কা লাগলে বাসটির হেলপারের মৃত্যু হয়। 

অন্যদিকে গতকাল গভীর রাতে একই মহাসড়কের ব্যাংকটাউন এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়।

প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহতরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার ধিরেনের ছেলে হৃদয় চন্দ্র দাশ (২০) ও একই এলাকার অর্চণা রানী (৩০)। অপরজন হলেন নাবিল পরিবহনের হেলপার আনোয়ারুল ইসলাম (২৬)। এ ঘটনায় নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল রাতে নওগাঁ থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে নাবিল পরিবহনের একটি বাস। বাসটি সাভারের গেন্ডা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপরে ওঠে। এসময় হেলপার আনোয়ারুল ঘটনাস্থলেই মারা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে বাসটি জব্দ করা হয়। 

এছাড়া গতকাল রাতে হৃদয় ও অর্চণা সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগতির প্রাইভেটকার তাদের চাপা দেয়। এসময় ঘটনাস্থলেই তারা মারা যায়। এঘটনায় চালক পালিয়ে গেলেও প্রাইভেটকারটি জব্দ করেছে পুলিশ।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, “রাতে দ্রুতগতির একটি প্রাইভেটকার চাপায় নারীসহ দুইজন ও সকালে নাবিল পরিবহনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপর তুলে দিলে হেলপার মারা যান। দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহন দুটি জব্দ করে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/সাব্বির/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ব ল পর বহন র দ র ঘটন এল ক য় ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ