Prothomalo:
2025-08-01@21:57:24 GMT

কানাডায় ভোটগ্রহণ শুরু

Published: 28th, April 2025 GMT

পুরোপুরি বদলে যাওয়া এক নির্বাচনী পরিবেশে আজ সোমবার ভোট দিচ্ছেন কানাডার জনগণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা নির্বাচনের আগে প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছিল।

ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি সমর্থন বেড়ে গেছে। কার্নি রাজনীতিতে নতুন মুখ। তিনি এর আগে কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ছিলেন।

গতকাল রোববার নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ওই দিন দেশটির ভ্যাঙ্কুভারে ভিড়ের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ১১ জন নিহত হন, আহত হন অনেকে।

এ ঘটনায় মার্ক কার্নি তাঁর নির্বাচন প্রচারণা স্থগিত করেন। তিনি ও কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী পিয়েরে পলিয়েভরে তাঁদের চূড়ান্ত প্রচারণায় ওই মর্মান্তিক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন।

প্রাণহানির এ ঘটনা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, সেটি নিশ্চিত নয়। তবে ক্যালগেরির মাউন্ট রয়্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডুয়েন ব্র্যাট বলেন, তিনি মনে করেন না এ ঘটনা ভোটারদের নিরুৎসাহিত করবে।

আরও পড়ুনকানাডায় উৎসবে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৯ জন নিহত২৭ এপ্রিল ২০২৫

ইপসোস ও অ্যাংগাস রিডের করা আলাদা জরিপে দেখা গেছে, পলিয়েভরের কনজারভেটিভ দলের তুলনায় কার্নির লিবারেল দল ৪ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল। শেষ মুহূর্তে সামান্য এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। রোববার ইপসোসের করা এক জরিপে লিবারেল দল ৪২ শতাংশ ও কনজারভেটিভ দল ৩৮ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছে।

এর আগে শনিবার অ্যাংগাস রেইডের জরিপে লিবারেলরা ৪৪ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছে আর কনজারভেটিভ দল সমর্থন করেছেন ৪০ শতাংশ মানুষ।

জরিপের ফলাফল সঠিক হলে টানা চতুর্থবারের মতো লিবারেল পার্টি সরকার গঠন করতে পারে। তবে কার্নি হয়তো ৩৪৩ আসনবিশিষ্ট হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবেন না। ফলে তাঁকে সরকার গঠনের জন্য ছোট দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।

আরও পড়ুনপদত্যাগের ঘোষণা দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো০৬ জানুয়ারি ২০২৫

গত সপ্তাহে ট্রাম্প আবারও কানাডার নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেন, কানাডায় তৈরি গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এগুলো চায় না। এর আগে বলেছিলেন, তিনি ‘অর্থনৈতিকভাবে চাপ’ দিয়ে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বানাতে পারেন।

ব্র্যান্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কেলি সন্ডার্স বলেছেন, ‘সম্ভবত এটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। সবকিছুই যেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা হুমকির কারণে আড়াল হয়ে গেছে।’

ভ্যাঙ্কুভারভিত্তিক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা ৩৭ বছর বয়সী অ্যান্ডি হিল বলেন, ‘সম্ভবত আমি এবার কার্নিকে ভোট দেব; কারণ, এই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছে, আমাদের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।’

৬৬ বছর বয়সী বব লো দক্ষিণ ক্যালগেরিতে বসবাস করেন। সেখানে তাঁর গবাদিপশুর খামার রয়েছে। তিনি ইতিমধ্যে কনজারভেটিভদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ