সামাজিক ব্যবসা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বিকশিত হয়েছে: সালাহউদ্দিন নোমান
Published: 29th, April 2025 GMT
সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ সক্রিয় করার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী। এছাড়াও টেকসই উন্নয়নের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ সক্রিয় করতে সামাজিক ব্যবসার সম্ভাবনাকে উদ্ভাবনী উপায় হিসেবে গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ইকোসক ফোরামের (ইকোসক ফোরাম অন ফিন্যান্সিং ফর ডেভেলপমেন্ট) এক প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব বিষয় তুলে ধরেন।
সামাজিক ব্যবসাকে একটি পরীক্ষিত মডেল হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বিকশিত হয়েছে এটি। এই মডেলে বিনিয়োগের লক্ষ্য থাকে ব্যক্তিগত মুনাফার পরিবর্তে সামাজিক উন্নয়ন।
বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ পদ্ধতিতে নারীর ক্ষমতায়ন, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহায়তা এবং খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নবায়নযোগ্য শক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফলভাবে বেসরকারি সম্পদ কাজে লাগানো হয়েছে।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আরও উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনী অর্থায়ন পদ্ধতির প্রসার ঘটানো এবং যথাযথ নীতিমালা, মিশ্র অর্থায়ন পদ্ধতি ও ঝুঁকি হ্রাসকারী ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি।
বাংলাদেশের এই স্থায়ী প্রতিনিধি বাংলাদেশের আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এফএফডি ফোরাম এবং চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের (এফএফডি৪) চতুর্থ প্রস্তুতিমূলক কমিটির বৈঠকে।
বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে এফএফডি৪ সম্মেলনের আলোচনা প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছে এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে সম্মেলনে অংশগ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ম জ ক ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫