নীলফামারীতে দুটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরেণের ঘটনায় উত্তরা ইপিজেডের একটি কারখানায় ও ইপিজেডের পাশে একটি বাসায় পৃথক দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই বোনসহ চার শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ইপিজেডের সনিক কারখানায় (খেলনা তৈরির কারখানা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই কারখানার দুই শ্রমিক দগ্ধ হন। তাঁরা হলেন লিটন চন্দ্র রায় (২৫) ও দেলোয়ার হোসেন (২৮)।

উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল জব্বার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো.

খুরশীদ আলম বলেন, সনিক নামের একটি কারখানা থেকে দগ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়।

বিস্ফোরণের পর ওই কারখানার শ্রমিকেরা বাইরে বের হয়ে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারখানায় হঠাৎ করে কাজের চাপ বেড়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় তিন পালায় শ্রমিকেরা কাজ করছেন। ফলে খেলনা তৈরির যন্ত্রগুলো বিশেষ করে ‘ডায়াস্টিক’ যন্ত্রটি বন্ধ করা হয় না। ধারণা করা হচ্ছে ওই যন্ত্র অতিরিক্ত গরম হয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে। এ ঘটনার পর কাজ বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকেরা।

শ্রমিকদের অভিযোগ, এর আগে ৬ এপ্রিল রাত আটটার দিকে ওই কারখানার ডায়াস্টিক যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় রমজান আলী ও খায়রুল ইসলাম নামের দুই শ্রমিক দগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১০ এপ্রিল খায়রুল ইসলাম এবং ১২ এপ্রিল রমজান আলী মারা যান। এরপরও সনিক কারখানাটির কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।

এ বিষয়ে কথা বলতে নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. আখতারুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
একই দিন সকাল ৬টার দিকে উত্তরা ইপিজেডসংলগ্ন এক ভাড়া বাসায় রান্না করার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার দুই নারী শ্রমিক দগ্ধ হন। সম্পর্কে তাঁরা আপন দুই বোন। দগ্ধরা হলেন সুইটি আক্তার (২০) ও তাজকিনা আক্তার (২৩)। তাঁরা জেলার ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের সেওটগাড়ি গ্রামের বাবুল হোসেনের মেয়ে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের একটি দল দগ্ধ দুই বোনকে উদ্ধার করে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়।

দুটি বিস্ফোরণের বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, পৃথক দুই ঘটনায় দগ্ধ চার শ্রমিককে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য চারজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর উত্তেজিত শ্রমিকেরা কারখানার সামনে আহতদের ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন য় র একট

এছাড়াও পড়ুন:

খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলের পরিকল্পনা কয়েক দিন আগে আটকে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইসরায়েল গত শুক্রবার ভোর রাতে হামলা করে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পদের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় খামেনির একজন উপদেষ্টাও নিহত হন।

মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকানকে হত্যা করেছে? না, যতক্ষণ না তারা এটা করছে, ততক্ষণ আমরা কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আক্রমণের কথা ভাবছিও না।’

এদিকে গতকাল রোববার ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেখান তাকে খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করেলে নেতানিয়াহু বলেন, ‘কখনো আলাপই হয়নি, এমন অনেক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা হয়েছে। আমি সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।’

ফক্সের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করার দরকার, তা করি।’ নেতানিয়াহু বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলার একটি ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। তেহরানের সৃষ্ট ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল যা যা প্রয়োজন, তা-ই করবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে চলমান এই সংঘাত ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এটি সহজেই শেষ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও এ সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ