৫০ হাজার থেকে কমে সাড়ে ৩ হাজারে নেমেছে সেবাগ্রহীতা
Published: 29th, April 2025 GMT
মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলে নেওয়ার (এমএনপি) সুবিধা সাত বছরেও খুব একটা জনপ্রিয় হয়নি। শুরুতে মাসে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই সেবা নিতেন। এখন সেটা নেমে এসেছে সাড়ে তিন হাজারে।
রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি): চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুবিধা জনপ্রিয় না হওয়ার পেছনে সাতটি কারণকে দায়ী করেন এমএনপি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
কারণগুলো হলো উচ্চ সিম কর, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধা, আবেদন বাতিলের উচ্চ হার, অপারেটরদের অসহযোগিতা, খুদে বার্তা বা এসএমএস জটিলতা, ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড)–সংক্রান্ত জটিলতা এবং মুঠোফোনে আর্থিক সেবা বা এমএফএস–সংক্রান্ত জটিলতা।
কর্মশালাটি আয়োজন করে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি)।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০১৮ সালের অক্টোবরে ঘটা করে এমএনপি সেবা চালু করে। এই সেবা নিলে গ্রাহক নম্বর ঠিক রেখে এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে যেতে পারেন।
প্রথম বছরেই এমএনপি সেবায় সাড়া ছিল ভালো। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মে মাসে ১ লাখ ১১ হাজার ১২৭ জন গ্রাহক নম্বর একই রেখে অপারেটর বদল করেন। কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই সংখ্যা নেমে আসে কয়েক হাজারে। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে এই সেবাগ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫২২ জনে।
এমএনপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়নের টেকনিক্যাল লিড ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের ৭২তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এমএনপি চালু হয়। প্রথম বছরে যেখানে সাত লাখ গ্রাহক এ সেবা গ্রহণ করেছিলেন, পরবর্তী ছয় বছরে সেই সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃদ্ধি ঘটেনি। বর্তমানে ৯৭ শতাংশ গ্রাহক এমএনপি সেবা ব্যবহার করছেন না, যার প্রধান কারণ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণগত বাধা।
ইনফোজিলিয়নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন বলেন, ‘গ্রাহকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, কিন্তু নানা বিধিনিষেধে সেই স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাধাগুলো দূর করা গেলে পরোক্ষভাবে সরকারের রাজস্বও বাড়বে, পাশাপাশি গ্রাহক পাবেন সর্বোত্তম সেবা।’
কর্মশালায় টিআরএনবির সাবেক সভাপতি রাশেদ মেহেদী বলেন, এই সেবায় (এমএনপি) সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দেওয়া যেত। তৃতীয় পক্ষের নেটওয়ার্ক ব্যবহারযোগ্য হলে প্রতিযোগিতা বাড়বে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন টিআরএনবি সভাপতি সমীর কুমার দে। এতে ইনফোজিলিয়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তফা কামাল, টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুনমুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ, কিন্তু জনপ্রিয় হয়নি কেন৩১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।