পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা শান্তির বার্তা নাকি চতুর কৌশল
Published: 29th, April 2025 GMT
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে প্রশ্ন উঠছে– পুতিন কি আসলেই শান্তি চান, নাকি কেবলই লোক দেখানো? ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা যেন ক্রেমলিনের চালাকিতে পরিণত হয়েছে। সোমবার পুতিন আবারও তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর এ নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। এর আগে গত ২০ এপ্রিল খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন পুতিন।
এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ৭২ ঘণ্টার জন্য সব সামরিক তৎপরতা বন্ধ থাকবে। মস্কো আশা করে, ইউক্রেনও একই পদক্ষেপ নেবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবার বলেছেন, রাশিয়া কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই শান্তি আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত। কিন্তু কিয়েভ সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনো সাড়া পাইনি।
ইউক্রেন পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, রাশিয়া যদি সত্যিই শান্তি চায়, তাহলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছে না কেন? ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, রাশিয়া যদি শান্তিই চায়, তাহলে এখনই গোলাগুলি থামাতে হবে। ৮ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা কেন?’ এ সময় তিনি অন্তত ৩০ দিনের একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, ইউক্রেনে এমন ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট আসলে কী চাচ্ছেন? তাঁর পরিকল্পনা কি সত্যিই এই সংঘাতের অবসান, নাকি কেবলই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করতে চান তিনি?
সমালোচকরা বলছেন, এটি নিছকই পিআর (প্রচারণা) কৌশল। এর আগের ইস্টার ট্রুসের সময়ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। নিজেদের ঘোষিত যুদ্ধবিরতি তারা নিজেরাই ভেঙেছে। ইউরোপীয়দের অভিযোগ, মূলত ৩০ ঘণ্টার ওই বিরতিকে ব্যবহার করে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে এমন বার্তা পাঠাতে চেয়েছে, ইউক্রেন নয়, রাশিয়াই এই যুদ্ধের একমাত্র শান্তিপ্রিয় পক্ষ।
এএফপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোরে রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় বাহিনী একে অপরের দিকে কয়েক ডজন ড্রোন গুলি চালিয়েছে। এতে ইউক্রেনে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরী নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দু’জন মারা গেছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। পুতিনের তিন দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরই এ হামলার ঘটনা ঘটল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি