শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকার আশুলিয়ায় শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলসহ ছয়জনকে হত্যা শেষে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা রয়েছে। তিনি সেই মামলার ২৭ নম্বর আসামি। 

বেশ কয়েক দিন ধরে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। 

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে নির্বিচারে গুলিতে সাজ্জাদ হোসেন সজল, আবদুল মান্নান, মিজানুর রহমান, তানজিল মাহমুদ সুজয়, আস-সাবুর এবং বায়েজিদ নিহত হয়। পরে পুলিশ ভ্যানেই নিহতদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম বাদী হয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার ২৭ নম্বর আসামি করা হয় তৎকালীন সাভারের আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমানকে। এরপর তিনি বদলি হয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর শরীয়তপুর জেলা পুলিশে জেলা পুলিশে যোগ দেন। গত ১২ ডিসেম্বর শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার তাকে পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে পদায়ন করেন। তবে গত ২৪ এপ্রিলের পর থেকে তিনি কর্মস্থলে আসছেন না।

আরো পড়ুন:

শামীম ওসমানের ছেলে অয়নের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ঘুষ দাবির অভিযোগে ওসি এসআইয়ের বিরুদ্ধে নারীর নালিশি

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘‘স্যার গত ২৪ তারিখ থেকে অফিসে আসছেন না। কী কারণে, সেটি সঠিক বলতে পারব না। শুনতে পেয়েছিলাম তার আম্মা নাকি অসুস্থ, সেই কারণে তিনি তার আম্মাকে দেখতে গিয়েছেন। বাকিটা সিনিয়র যারা আছেন, তারা বলতে পারবেন।’’

পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভীর হোসেন জানান, পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হবে।

তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘৫ আগস্টের পর তিনিসহ অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এগুলো কর্মস্থলে রুলস, ফরমেট ফলো করা হয়। কারো বিরুদ্ধে মামলা হলেই সঙ্গে সঙ্গে তিনি অভিযুক্ত কিংবা অপরাধী, এমন নয়। তদন্ত করার আলোকে প্রমাণ যেটি আসবে, সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
 

ঢাকা/আকাশ/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম স দ র রহম ন অপর ধ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে অপদস্থ বাবা, ছেলেকেও পিটিয়ে হত্যা

হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে অপদস্থ হওয়া বাবাকে রক্ষা করতে গিয়ে জাকির হোসেন (৩৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে। 

নিহত জাকির হোসেন ওই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক হারুনুর রশিদের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে গনি মিয়া গং ও শাজাহান মিয়া গংয়ের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে পিরিজপুর পয়েন্টে গনি মিয়ার ছেলে হোসাইন মিয়া ও শাজাহান মিয়ার ছেলে মহসিন মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।

সংঘর্ষ থামাতে স্থানীয় হারুনুর রশিদ নামে একজন এগিয়ে গেলে তাকে অপদস্থ করা হয়। তখন বাবাকে রক্ষায় তার ছেলে জাকির হোসেন দোকান থেকে বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর চড়াও হয়। তাদের মারপিটে গুরুতর আহত অবস্থায় জাকিরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আহতদের মধ্যে তজিমুল মিয়া (৫৫), রুবেল মিয়া (২৭) ও উজ্জ্বল মিয়া (৩০) নামে ৩ জনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়না মিয়া বলেন, ‘‘দীর্ঘদিনের জমিসংক্রান্ত বিরোধ থেকেই এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।’’ 

রাতে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম।

ওসি বলেন, ‘‘ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নারী-পুরুষ ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া গ্রাম থেকে কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।’’

ঢাকা/মামুন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ