রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ বুধবার সংগঠনের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটছে এবং উদ্বেগজনকভাবে তা বাড়ছে। এর ফলে নারী ও কন্যাশিশুর সার্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

বিবৃতিতে গত কয়েক দিনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত ঘটনা তুলে ধরে বলা হয়, গত ২৯ এপ্রিল নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় স্থানীয় ছাত্রদল নেতা ফয়সাল এক তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২৬ এপ্রিল গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় এক নারী পোশাককর্মীকে বিয়ের কথা বলে অভিযুক্ত ফাহিম ওরফে সোহাগ এক বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যান। পরে সেখানে ফাহিম, রাইহান ও হাফিজুল ওই নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় এক ভণ্ড কবিরাজ ‘জিন তাড়ানোর’ নাম করে আদিবাসী মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

২৫ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারে কিশোর গ্যাং এক কিশোরীকে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। মোহাম্মদপুরে ১২ বছরের এক শিশুকে পূর্বপরিচিত রমজান নামের এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ব্যক্তি দুই বছরে শিশুটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

১৪ এপ্রিল সাভারের বিরুলিয়ায় এক বৃদ্ধ এক শিশুকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। বিবৃতিতে দেশে নারী ও মেয়েশিশুর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং নারী ও কন্যার নিরাপত্তার বিষয়টিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। নারীর প্রতি সহিংসতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।

মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।

এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ