ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে নাজেহাল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ। বুধবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওয়াসিফ আল আবরারের ভাষ্য, এ সময় তাঁকে মারধর করা হয়েছে। 

ওয়াসিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি একটি অনলাইন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। অভিযোগ রয়েছে, শাহ আজিজুর রহমান হলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন ওয়াসিফ। এ বিষয়ে হল প্রভোস্টের কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে প্রভোস্ট তাঁকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু ওয়াসিফ ওই হলেই অবস্থান করছিলেন। বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতাকর্মী কক্ষ থেকে তাঁকে চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে হট্টগোল চলার মধ্যেই তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করার সময় টি-শার্ট গলায় আটকে ব্যথা পান তিনি। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেকটি পক্ষ ওয়াসিফের পক্ষে অবস্থান নেয়।

ওয়াসিফকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হলে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শিক্ষার্থীদের একটি অংশের দাবি, কলেজে থাকার সময় ওয়াসিফ পাবনার বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরও সাংবাদিকতার নামে তাদের হয়ে কাজ করেছেন। জুলাই আন্দোলনেও তাঁর ভূমিকা ছিল বিতর্কিত। 

ওয়াসিফ আল আবরারের ভাষ্য, সাত-আটজন গিয়ে তাঁকে হল থেকে বের হওয়ার জন্য দুই মিনিট সময় বেঁধে দেয়। তিনি জিনিসপত্র গোছানোর সময় ‘আপনি হলুদ সাংবাদিক, পরে আবার ঝামেলা করবেন’ বলে ফোন নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ৮-৯ জন মিলে লাইট বন্ধ করে মারধর করে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, ওয়াসিফের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, তা নগণ্য। তাঁর বিষয়টি সমাধানে তিনি অন্যদের সঙ্গে শাহ আজিজুর রহমান হলে যান। 

প্রক্টর অধ্যাপক ড.

শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। বিষয়টি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন পৃথক কমিটি করবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেব।’

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবি উপাচার্য-প্রক্টরসহ ৩ জনকে আইনি নোটিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলে নিজের সিট ফিরে পাওয়াসহ তিন দফা দাবিতে উপাচার্য, প্রক্টর ও হলটির প্রাধ্যক্ষ বরাবর আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক শিক্ষার্থী।

ওই শিক্ষার্থী হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আলোচিত ভিপি পদপ্রার্থী জালাল আহমদ ওরফে জ্বালাময়ী জালাল। 

আরো পড়ুন:

রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, উত্তাল রাতের ক্যাম্পাস

চাকসু: ৩ পদ শূন্য রেখে বামপন্থিদের ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট বেল্লাল হোসাইন (মুন্সী বেল্লাল) স্বাক্ষরিত এক আইনি নোটিশে তিনি ঢাবি প্রশাসনের কাছে তিন দফা দাবি জানান।

জালাল আহমদ অভিযোগ করে জানান, হলে বহিরাগত ও মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। এ সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের মদদে তার ওপর মব হামলাও চালানো হয়। কিন্তু তদন্ত ছাড়াই হল প্রাধ্যক্ষ তাকে বহিষ্কার করেন এবং প্রশাসন তার নামে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করে।

এর আগে, হলের রুমমেটকে মারধর এবং ভাঙা টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করার ঘটনায় জালাল আহমদ ওরফে জ্বালাময়ী জালালের বিরুদ্ধে ‘হত্যাচেষ্টা’ মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন এবং ২৭ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর আদালত জামিন মঞ্জুর করলে কারাগার থেকে মুক্ত হন জালাল।

ওই শিক্ষার্থীর দাবিগুলো হলো— হামলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি ও প্রশাসনের ক্ষমা প্রার্থনা; অবৈধভাবে বাতিল হওয়া তার বৈধ সিট ফেরত দেওয়া; বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বহিরাগত ও মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্ছেদ করা।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ