গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে ইসলাম ও ইহুদিবিদ্বেষ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত দুটি টাস্কফোর্সের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস যখন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে, তখন টাস্কফোর্স দুটি গঠন করা হয়েছিল।

আলজাজিরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের গভীরতা এবং ছাত্র-শিক্ষকরা কী ধরনের বৈষম্য ও বৈরিতার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। প্রতিবেদন দুটি এমন সময় প্রকাশ করা হলো, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আইনি লড়াই চলছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের। গাজা যুদ্ধ ও এ নিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য নির্ধারিত ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি তহবিল স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। 

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থীই আশঙ্কা করেন, গাজা ইস্যুতে নিজেদের রাজনৈতিক মত প্রকাশ করলে একাডেমিক এবং পেশার ক্ষেত্রে শাস্তি পেতে হতে পারে। এ ছাড়া, মোট শিক্ষার্থীর অর্ধেকই মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের ওপর যে কোনো সময় হামলা হতে পারে। নাম প্রকাশ না করে এক শিক্ষার্থীর উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়েছে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে। ওই শিক্ষার্থী বলেছেন, একজন মুসলিম শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা প্রতিনিয়ত আতঙ্ক বোধ করি। 

প্রতিবেদনের ফলাফল ঘোষণা করে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গারবার এক বিবৃতিতে জানান, যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ইহুদি, ইসরায়েলি ও জায়নবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা পরিচয় লুকিয়ে চলতে বাধ্য হচ্ছেন।

অন্যদিকে মুসলিম, আরব ও ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এবং কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতির বদলে একে অন্যকে অবজ্ঞা করার প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরকে তীব্রভাবে কটাক্ষ করছেন এবং একঘরে করে দিচ্ছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ