কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো.

আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় গ্রেপ্তার ২ 

বন্দরে ডাকাতির প্রস্তুতি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ডাকাত দলের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ধামগড় ফাঁড়ি পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বন্দর উপজেলার কুড়িপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে সজিব হোসেন (৩২) ও একই এলাকার আবুল কাশেম মিয়ার ছেলে সাকিব (২৮)।

ধৃতদের সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে বন্দর থানার রুজুকৃত ৪০(৮)২৫ নং ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।  গত রোববার (২ নভেম্বর)  রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বন্দর থানার সোনাচরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে  এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

এর আগে গত রোববার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টায় বন্দর থানার দেওয়ানবাগস্থ বন্দর স্ট্রিল মিলের গেইটের সামনে রাস্তার উপরে ওই ডাকাতি প্রস্তুতি ঘটনাটি ঘটে।

উল্লেখ্য, গত  রোববার (২৪ আগস্ট) রাত দেড় টার দিকে একদল ডাকাত দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র সহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুরাদপুরের  দেওয়ানবাগ এলাকায় অবস্থিত  বন্দর স্টিল মিলে সামনে সমবেত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

 ওই সময় খবর পেয়ে বন্দর থানার  টহল ডিউটি পুলিশের তিনটি টিম ঘটনাস্থানে পৌঁছিলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল পালানোর চেষ্টা করে।  তারা ডাকাতির উদ্দেশ্যে  অবস্থান করছিল।  

পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জের বন্দরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ডাকাতির পাশাপাশি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ