‘সময় পাল্টে গেছে, একটা ভিডিও ক্লিপ দিয়েও এখন জাতীয় দলে ডাক পাওয়া যায়’
Published: 1st, May 2025 GMT
সব খেলোয়াড়েরই ইচ্ছা থাকে দেশের হয়ে খেলার। বেশি খেলার সুযোগ, বেশি আয়ের সুযোগ কিংবা ব্যাপক পরিচিতি যতই ক্লাব বা লিগের খেলার মধ্য দিয়ে আসুক না কেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার গৌরব সব ক্রীড়াবিদের কাছে বিশেষ কিছু।
আর সেই গৌরবের অংশীদার হতে একজন খেলোয়াড়কে ধারাবাহিক সাফল্য, পরিশ্রম, নিবেদন ও অপেক্ষার বড় পরীক্ষায় পাস করতে হয়। তবে যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা এই ধারা এখন বদলে গেছে মনে করেন স্টিভেন ফিন। ইংল্যান্ডের এই সাবেক ক্রিকেটারের মতে, এখন একজন খেলোয়াড়ের একটি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স বা একটি বিশেষ মুহূর্তই তাঁকে দলে ঢোকার সুযোগ এনে দিতে পারে। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে জাতীয় দলে ঢোকার ক্ষেত্রে একটা ভিডিও ক্লিপই যথেষ্ট হয়ে ওঠে।
ইংল্যান্ডের হয়ে ২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ৩৬টি টেস্টসহ ১২৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ফিন। ৩৬ বছর বয়সী এই সাবেক পেসার বিবিসিতে লেখা কলামে বলেছেন ইংল্যান্ড দলে জায়গা পেতে তখন কী পরিমাণ দৃঢ় সংকল্প থাকতে হতো, ‘জেমস অ্যান্ডারসন আর স্টুয়ার্ট ব্রডের জায়গা পাকা ছিল। ফলে টিম ব্রেসনান, গ্রাহাম অনিয়নস, ক্রিস ট্রেমলেট, ক্রিস ওকস, আমি এবং আরও কয়েকজন বাকি একটি জায়গার জন্য লড়ছিলাম। এই প্রতিযোগিতা তৈরি করেছিল ক্ষুধা আর সংকল্প।
কারণ, আমি জানতাম বাকি সবাইও ঠিক একই চেষ্টা করছে। একের পর এক ভালো পারফরম্যান্স করা এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে সপ্তাহের পর সপ্তাহ নিজের সামর্থ্য দেখিয়ে প্রমাণ করতে হতো যে আপনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ সামলাতে প্রস্তুত।’
স্টিভেন ফিন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে ‘আওয়ামী লীগের আমলে চাকরি পেয়েছে’ অ্যাখ্যা দিয়ে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ মারধরের ভিডিও ধারণের চেষ্টা করলে হামলাকারীরা তিনজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী মো. গোলাম আজম ফয়সাল চিকিৎসা কেন্দ্রেই ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে কর্মরত। হামলার পর গুরুতর আহতাবস্থায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।
আরো পড়ুন:
তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
রাবি ছাত্রদলের কমিটি: সভাপতি-সম্পাদকসহ অধিকাংশেরই ছাত্রত্ব নেই
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসা কেন্দ্রের ২৩ নম্বর কক্ষে ফয়সাল ডিউটিরত অবস্থায় ছিলেন। প্রথমে একজন বহিরাগত এসে ফয়সালের পরিচয় নিশ্চিত করে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই ৭-৮ জন কক্ষে প্রবেশ করে ফয়সালকে ‘আওয়ামী লীগের আমলে চাকরি পেয়েছে’ অ্যাখ্যা দিয়ে এবং কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই মারধর শুরু করে।
এক পর্যায়ে তারা ফয়সালকে টেনেহিঁচড়ে চিকিৎসা কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে আসে এবং এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। মারধর শেষে যাওয়ার সময় যারা হামলার দৃশ্য ভিডিও করার চেষ্টা করলে তারা তিনজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী গোলাম আযম ফয়সাল বলেন, “হামলাকারীদের মধ্যে একজন আরেকজনকে ‘জনি, আর মারিস না’ বলে থামায়। চলে যাওয়ার সময় তারা আমাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকিও দিয়ে যায়।”
নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই একটি ভাড়া বাসায় থাকি। খুব আতঙ্কে দিন পার করছি।” হামলাকারীদের কাউকে চেনেন না বলে মামলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মীদের মধ্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক মাফরুহা সিদ্দিকা লিপি। তিনি বলেন, “ফয়সাল আগে আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিংয়ে যেত বলে আমরা শুনেছি। এ ঘটনায় আমরা সবাই আতঙ্কিত। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে আমাদের পক্ষে দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়বে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে বহিরাগতরা অত্যন্ত নির্মম ও অমানবিকভাবে প্রহার করেছে। আমরা জনি নামে একজনের কথা শুনেছি, যার নেতৃত্বে এই হামলা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা পুলিশের সহায়তায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমি মাত্র বিষয়টি জানতে পারছি। এ বিষয়ে প্রক্টর স্যারের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে গতকাল পুলিশর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মিটিং হয়েছে। তারা নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে কাজ করছে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী