দীর্ঘ ১৭ বছর পর আগামীকাল মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে শাশুড়ি ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছাবেন তিনি। দেশে ফিরে জোবাইদা রাজধানীর ধানমন্ডিতে তার বাবার বাসা ‘মাহবুব ভবনে’ উঠবেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে বাসার পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন থেকে শুরু করে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন সাংবাদিকদের জানান, জোবাইদা রহমানের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। বাড়ির চারপাশে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। দায়িত্বে থাকবেন সিএসএফ সদস্যরা, সঙ্গে থাকবেন পুলিশ সদস্যরাও। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে গিয়ে যেন এলাকাবাসীর কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, সে বিষয়ে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তার কথায়, নিরাপত্তার নামে মানুষকে বিরক্ত করা যাবে না—এটা স্পষ্ট নির্দেশ।

জোবাইদা রহমানের যাতায়াত ও নিরাপত্তার জন্য পৃথক যানবাহনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার গত ৩০ মে পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি দিয়ে জোবাইদা রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।

সেই চিঠিতে গানম্যান, পুলিশ প্রটেকশন, বাসায় আর্চওয়ে ও পুলিশ পাহারার দাবি জানানো হয়। এর পরপরই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তা মাহবুব ভবন পরিদর্শন করে নিরাপত্তাব্যবস্থার খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করেন।

এখন ওই ভবনে বসবাস করছেন জোবাইদা রহমানের মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু, বড় বোন শাহীনা জামান ও তার পরিবার। জানা গেছে, সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে ঢাকা ছেড়েছিলেন জোবাইদা রহমান। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাফরুল থানায় তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। মামলায় জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত। তবে গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার সেই সাজা স্থগিত করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন রহম ন র ব যবস থ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা: চেরনোবিলের মতো বিপর্যয় হবে না

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ হলেও চেরনোবিল-ফুকুশিমার মতো বিপর্যয় ডেকে আনবে না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, এগুলো মূলত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় কেন্দ্রীভূত হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এ ধরনের স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতি হলেও তা চেরনোবিল বা ফুকুশিমার মতো ভয়াবহ ‘পারমাণবিক দুর্ঘটনা’ ঘটানোর ঝুঁকি তৈরি করে না। এর কারণ হলো সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে কোনো পারমাণবিক বিক্রিয়া (নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকশন) ঘটে না। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিঅ্যাক্টরে ইউরেনিয়ামের পরমাণু বিভাজিত হয়ে ফিশন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করে এবং তাতে তৈরি হয় অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য।

অন্যদিকে, সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো শুধু ইউরেনিয়ামকে জ্বালানি হিসেবে প্রস্তুত করে, সেখানে শক্তি উৎপাদনের কোনো প্রক্রিয়া চলে না। 

ব্যাঙ্গোর বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক উপাদান বিশেষজ্ঞ সায়মন মিডলবার্গ  বলেন, যদি কোনো সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় বোমা মারা হয়, তাহলে ভেতরের ইউরেনিয়াম পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে এতে কোনো পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা নেই। কাজেই এ ক্ষতি হবে স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ এবং একমাত্র আশপাশের একটি ছোট এলাকা ছাড়া কোনো বিস্তৃত তেজস্ক্রিয় ঝুঁকি তৈরি হবে না।

রয়টার্স জানায়, ইরানের ভূগর্ভে নির্মিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর আঘাত হানতে সক্ষম একমাত্র প্রচলিত অস্ত্র হচ্ছে মার্কিন ‘বাঙ্কার-ব্লাস্টার’ বোমা। সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়লে সংঘাত পরিস্থিতিতে অনেকের মনেই প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আসলেই ইরানের সন্দেহভাজন পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনায় শক্তিশালী বাঙ্কার-ব্লাস্টার বোমা ফেলে, তাহলে এর পরিণতি কী হবে? 

বিকিরণ ঝুঁকি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই বোমা মাটির নিচের বাঙ্কার ধ্বংস করে ফেললেও এর ব্যাপক বিকিরণ দূষণের আশঙ্কা কম।

ইরানের ‘ফোরডো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্ট’ নামের এই রহস্যময় স্থাপনা পাহাড়ের গুহায় নির্মিত এবং এখানে ইউরেনিয়াম আইসোটোপ প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এতে এখানে ইউরেনিয়াম সাধারণত ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইড নামক গ্যাস আকারে থাকে।

এ গ্যাস অণু তুলনামূলক বড় ও ভারী হওয়ায় এটি অনেক দূরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম বলে জানান আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য পদার্থবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এমিলি ক্যাফ্রি। তিনি আরও বলেন, হামলার ফলে বিকিরণ বা দূষণ ওই স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ