নারীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশের ডাক
Published: 5th, May 2025 GMT
সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের নারীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। আগামী বুধবার বিকেল চারটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আজ সোমবার বিকেলে বাসদ (মার্ক্সবাদী) কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পাঠাতে মানবিক করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের শর্তগুলোর শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি এবং চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে ১৫ মে দেশব্যাপী মিছিল ও সমাবেশ করবে দলটি।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার ও সিপিবির সহসাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।
আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে ২৬ এপ্রিল ২০২৫সভায় নারীদের প্রতি হেফাজতে ইসলামের বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ছাড়া চট্রগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং বন্দর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি আরাকানে মানবিক করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়টি স্পষ্ট করে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া সভা থেকে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাকী আক্তারের বিরুদ্ধে থাকা মামলা প্রত্যাহার ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুননারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চায় হেফাজতে ইসলাম২০ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুননারীবিষয়ক কমিশন বাতিলসহ সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের০২ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক
এছাড়াও পড়ুন:
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি
বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর দেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। এমন পরিস্থিতিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করে তামাকজনিত অকাল মৃত্যু ঠেকাতে দাবি জানিয়েছে পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর ঢাকা আহছানিয়া মিশনের অডিটোরিয়ামে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে পেশাজীবি সংগঠনের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এমন দাবি জানায় তারা।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সুপারমার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থা, বাংলাদেশ গ্রোসারী বিজনেস এসোসিয়েশন(বিজিবিএ), বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন, ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি, জাতীয় দোকান কর্মচারী ফেডারেশন, এর নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি ড. গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
মূল প্রবন্ধে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম জানান, গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ এর তথ্যমতে ১ কোটি ৯২ লক্ষ মানুষ ধূমপান করে এবং প্রায় ৪ কোটি মানুষ ধূমপান না করেও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। গ্যাটস ২০১৭ তথ্যমতে পরোক্ষ ধূমপানের এ হার ৪২.৭%। এ সময় তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী চূড়ান্তকরণের পূর্বে বিভিন্ন এসোসিয়েশন ও পেশাজীবী সংগঠনের ভূমিকা তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে সংগঠগুলোর নেতারা জানান, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে বিভিন্ন সময় সরকারকে স্মারকলিপি ও চিঠি প্রদান করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যে সংশোধিত খসড়া তৈরি করেছেন এ জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানান তারা। এবং বর্তমানে ৯ জন উপদেষ্টা ও ৩ জন সচিব দ্বারা গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠিত হয়েছে যারা আইনের খসড়াটিকে পূনরায় রিভিউ করছেন।
এসময় খসড়া আইনটি দ্রুত পাশে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান নেতারা।
সংশোধনীতে উল্লেখিত পাবলিক প্লেসে ধুমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ই-সিগারেট বা হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট থেকে তরুণদের রক্ষা করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ ও সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কবার্তা ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ানো হলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তারা।
বক্তারা জানান, তামাক কোম্পানিগুলো মিথ্যা প্রচার করছে। তারা বলছে প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস হলে সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাবে। তবে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও ২০১৩ সালে সংশোধনের পর গত ১৮ বছরে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ। একই সঙ্গে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ১৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠন ও ইয়ুথ ফোরামের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থেকেও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি জানায়।
ঢাকা/হাসান/এস