ময়মনসিংহে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা। এতে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতাকর্মী, আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল (দ্রুত বিচার) ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আজমত আলী সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রোববার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান মামলার আবেদনটি করেন। বিচারক মোছা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহ সহজ শর্তে ঋণের নামে ভুয়া এনজিওর ফাঁদে সহস্রাধিক মানুষ, দম্পতি আটক
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কথিত এনজিও প্রতিষ্ঠানে সহজ শর্তে ঋণ ও পেনশন স্কিম দেওয়ার নামে সহস্রাধিক মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের কাছে জামানত নেওয়ার পর ঋণ না দিয়ে আত্মগোপনে গেছেন চক্রটির সদস্যরা। সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রায় ৮২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
ওই দম্পতি হলেন সাজেদুল ইসলাম (৫০) ও তাঁর স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৩৫)। সাজেদুল নিজেকে এনজিওর মালিক ও তাসলিমা শাখা ম্যানেজার পরিচয় দিতেন। সাজেদুলের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জে এবং তাসলিমার বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরপাড়া গ্রামে। গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁদের ময়মনসিংহ সদর ও ঈশ্বরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে আটক করে র্যাব। এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।
র্যাব-১৪ ময়মনসিংহের অধিনায়ক নয়মুল হাসান বলেন, ভুয়া এনজিও খুলে স্বামী-স্ত্রী মিলে প্রতারণার মাধ্যমে গরিব মানুষের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। অভিযোগ পেয়ে তাঁদের দুজনকে আটক করে ফুলবাড়িয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ‘জনশক্তি’ নামের কথিত এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করা ফারহানা খাতুন নামের এক নারী র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন। সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার নামে গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এক বছর মাঠকর্মীদের মাধ্যমে ১ হাজার ৪০০ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৮২ লাখ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু ২৩ এপ্রিল থেকে তাসলিমা আর অফিসে আসছেন না। ঋণের প্রস্তুতি চলে জানালেও সাজেদুল ও তাঁর স্ত্রীর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফারহানা খাতুন, মাজেদা আক্তার, মর্জিনা আক্তার ও শাহিদা আক্তার নামের চার মাঠকর্মীর মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। গত বছরের অক্টোবরে ‘জনশক্তিতে’ মাঠকর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুয়া প্রতিষ্ঠানটির মাঠকর্মী ফারহানা খাতুন (২৩) বলেন, ‘আমার অধীনে প্রায় ১ হাজার জনের মধ্যে ঋণ নেওয়ার জন্য ৫০০ জনের থেকে ৫ হাজার টাকা করে তুলে জমা দিই। সবাই বিভিন্ন মেয়াদে পেনশন স্কিমেও টাকা জমা দেন। কিন্তু ২৩ এপ্রিল থেকে ম্যানেজার অফিসে নেই। মালিকও টালবাহানা করেন। পরে বুঝতে পারি, প্রতারিত হয়েছি।’
মর্জিনা আক্তার ও শাহিদা আক্তার বলেন, ‘এনজিও নিয়ে মানুষ অনেক সন্দেহ করতেন। তখন তাঁদের বোঝানো হতো, সরকারি লোগো দেখানো হতো। সরল বিশ্বাসে মানুষকে বুঝিয়ে টাকা এনে দিয়েছিলাম, কিন্তু এখন নিজেরা বিপদে পড়েছি।’
হোসেন আলী ও আনোয়ারা খাতুন জানান, দুজনেই গত বছরের আগস্ট থেকে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে পেনশন স্কিমে জমা দিচ্ছিলেন। ৬ বছর শেষে তাঁদের জমা হওয়া ৪০ হাজারের সঙ্গে আরও ৪০ হাজার টাকা যোগ করে ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁদের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে এনজিও।
জনশক্তি নামের প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশাসনের কাছে কোনো তথ্য ছিল না বলে জানিয়েছেন ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। এমন ঘটনা যেহেতু সামনে এসেছে, প্রত্যন্ত এলাকায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড যেন আর না হয়—এ ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
ঋণ ও পেনশন স্কিমের টাকা নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে—এমন খবরে আজ শনিবার ভুক্তভোগীরা ভুয়া এনজিওটির কার্যালয়ে যান। খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে মানুষের অভিযোগ শোনে এবং পরিস্থিতি সামাল দেয়। ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মো. রুকনুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলার পর দুজনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।