খাগড়াছড়িতে গতকাল বুধবার ভোরে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক ৭২ ভারতীয় নাগরিককে একটি স্কুল ও স্থানীয় ব্যক্তিদের দুটি বাড়িতে রাখা হয়েছে। সেখানে সার্বক্ষণিক পাহারায় আছেন বিজিবির সদস্যরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব নাগরিককে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।

৭২ ভারতীয় নাগরিকের মধ্যে ৩০ জনকে রাখা হয়েছে পানছড়ি উপজেলার লোগাং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ ছাড়া মাটিরাঙ্গা উপজেলার শান্তিপুর এলাকার একটি বাড়িতে ২৭ জনকে এবং তাইন্দং এলাকার আরেকটি বাড়িতে ১৫ জনকে রাখা হয়েছে। তাঁদের রান্না করা খাবার দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, যাঁদের সীমান্ত দিয়ে ‘পুশ–ইন’ করা হয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করছে। তাদের ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু সেখানে নারী ও শিশু রয়েছে, মানবিক কারণে তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে খাবারও দেওয়া হচ্ছে।

নাজমুন আরা সুলতানা আরও বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের পুশব্যাকের বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো তাঁরা জানেন না। নতুন করে সীমান্তে কোনো পুশইন হয়নি।

আজ দুপুরে খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী পানছড়ি উপজেলার লোগাং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ ভারতীয় নাগরিককে বিদ্যালয়টির দোতলায় একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। সেখানে বিজিবি ও পুলিশের পাহারা দেখা গেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেশ কুমার ত্রিপুরা বলেন, বুধবার রাতে ৩০ ভারতীয় নাগরিককে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ জন নারী, ৩ জন পুরুষ ও ৪টি শিশু রয়েছে। তাঁদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রান্না করা খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। সেখানে বিজিবির সদস্যরা সব তত্ত্বাবধান করছেন। পাশাপাশি পানছড়ি থানার পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার ভোরে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার শান্তিপুর দিয়ে ২৭ জন, তাইন্দং দিয়ে ১৫ জন ও পানছড়ির লোগাং দিয়ে ৩০ জনকে বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দেয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল প নছড়

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএসএআইডির তহবিল হ্রাসে বাংলাদেশে চাকরি হারিয়েছেন ‘২০ হাজার মানুষ’

যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির তহবিল কমার কারণে এ সংস্থার অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশের ২০ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। কমে যাওয়া তহবিলের পরিমাণ ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের প্রতিবছর পাওয়া বৈদেশিক সহায়তার ১৮ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্ট্রেনদেনিং কমিউনিটি সাপোর্ট এমিড চেঞ্জিং ফান্ডিং ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। বৈদেশিক সহায়তা কমার প্রেক্ষাপটে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে বিকল্প পথ খোঁজার উপায় নিয়ে এ গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়।

সেখানে একটি উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশ প্রতিবছর নানা উৎস থেকে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন (১১০ কোটি) মার্কিন ডলার তহবিল পায়। ইউএসএআইডির তহবিল কমার কারণে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে ৮ হাজার আর পরোক্ষভাবে আরও ১২ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।

সেখানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সামনে আরও তহবিল কমবে। আন্তর্জাতিক কর্মসূচিগুলোতে সহায়তা কমে আসবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আগে যে ফাউন্ডেশনগুলো সহায়তা দিত, সেগুলোকে কর অব্যাহতি দেয়া হতো। এখন সে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার আলোচনা হচ্ছে।

অন্যদিকে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ হলে সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোর সহায়তা কমতে থাকবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের নির্বাহী পরিচালক এম জাকির হোসাইন খান বলেন, ‘আমাদের এ বাস্তবতা মেনে নিতে হবে যে হানিমুন পিরিয়ড ইজ ওভার। বিশ্বব্যাপী নানা বাস্তবতায় বৈদেশিক সহায়তা কমে আসছে। আমাদের টিকে থাকতে হলে নতুন মডেল, নতুন কাঠামোতে সবকিছু পুনর্বিন্যাস করতে হবে।’

আগামী দিনে ‘প্রকৃতিনির্ভর সমাধান’, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ইনস্যুরেন্স খাতে সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে নদীনালা, খালবিল, বন সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনায়ও কাজ করা যায় বলে উল্লেখ করেন জাকির হোসাইন খান।

বক্তারা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে নতুন নেতৃত্ব, নতুন ভবিষ্যৎ ও সহায়তার নতুন নতুন উৎস খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শারমিন নিলোর্মী বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ