যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান সাইদ শেখ বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদ পর্যায়ে যোগাযোগ হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।

পাকিস্তানি এই কূটনীতিক মনে করেন, ভারত-পাকিস্তানের দুই দিনের সংঘর্ষে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা প্রশমিত করার দায়িত্ব ভারতের ওপরই বর্তায়।

সিএনএনের পক্ষ থেকে সাইদ শেখের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বর্তমানে কোনো আলোচনা বা সংলাপ চলছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদ পর্যায়ে যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু তারপর যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং যেসব কথাবার্তা বলা হচ্ছে, তাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমিত হওয়া উচিত।’

আমি মনে করি, জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদ পর্যায়ে যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু তারপর যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং যেসব কথাবার্তা বলা হচ্ছে, তাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমিত হওয়া উচিত।রিজওয়ান সাইদ শেখ, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত

তবে এই যোগাযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত আর বিস্তারিত তথ্য দেননি।

এই কূটনীতিক মনে করেন, (উত্তেজনা নিরসনে) পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং যেসব উত্তেজনাপূর্ণ কথাবার্তা বলা হচ্ছে, তা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।  

সাইদ শেখ বলেন, ‘এখন উত্তেজনা প্রশমনের দায়ভার ভারতের ওপর বর্তায়। সংযম দেখানোর ক্ষেত্রেও তো একটা সীমাবদ্ধতা থাকে। পাকিস্তানের জবাব দেওয়ার অধিকার আছে। আমাদের দেশের জনমত অনুযায়ী সরকারের ওপর পাল্টা জবাব দেওয়ার (ভারতের হামলার) চাপ প্রবল।’

দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো বড় ধরনের সংঘর্ষ চলাকালে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আরও প্রতিশোধ নেওয়াটা ক্রমশ অপরিহার্য হয়ে উঠছে। দুই দিনের লড়াইয়ে প্রায় চার ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি উত্তেজনা কমানো এবং সংলাপের পথ খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছে। ওয়াশিংটন সরাসরি সংলাপের জন্য চাপ দিয়েছে।

গতকাল পাকিস্তান ও ভারত একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছে।

আরও পড়ুনচীনা যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতের অন্তত দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান২ ঘণ্টা আগে

দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো বড় ধরনের সংঘর্ষ চলাকালে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আরও প্রতিশোধ নেওয়াটা ক্রমশ অপরিহার্য হয়ে উঠছে। দুই দিনের লড়াইয়ে প্রায় চার ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর চিরবৈরী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। পেহেলগামের হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। তবে পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করে এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

আরও পড়ুনভারত হামলায় ইসরায়েলের ড্রোন ব্যবহার করেছে: পাকিস্তান আইএসপিআর২০ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে রাতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, দাবি নয়াদিল্লির৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য গ য গ হয় ছ আরও প

এছাড়াও পড়ুন:

আক্রমণের অগ্রভাগে ড্রোন, ইরানের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল

ইসরায়েল গত ১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা করে। এর জবাবে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা করছে ইরান। ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন,সাধারণত ক্ষেপণাস্ত্র অগ্রভাবে থাকলেও গত ১৮টি হামলায় অগ্রভাগে ছিল ড্রোন। আর ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেই ড্রোন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ শনিবারও একটি ড্রোন উত্তর ইসরায়েলে আঘাত হানে। 

ইরানের আধা সরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার শাসনের বিরুদ্ধে সবশেষ পাল্টা হামলায় আত্মঘাতী ও যুদ্ধ ড্রোনের পাশাপাশি নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র।

এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’—এর অংশ হিসেবে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৮ দফা হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের কেন্দ্রস্থল, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রসদ ও পরিচালনা কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানতে তারা 'শাহেদ-১৩৬' নামের যুদ্ধ ও আত্মঘাতী ড্রোনের ঝাঁক ব্যবহার করেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইরানের এই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের দুটি ড্রোন ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ও দক্ষিণাঞ্চলে পৃথক হামলা চালিয়েছে। হামলার বিষয়টি স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এটি একটি বিরল ঘটনা, যেখানে ইরানের একমুখী আক্রমণাত্মক ড্রোন সফলভাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে।

তাসনিম নিউজের তথ্যমতে, আইআরজিসি জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতভর দখলদার ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে একাধিক স্কোয়াডে শাহেদ-১৩৬ ড্রোন টানা অভিযান চালিয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, আজ শনিবার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে জর্ডান সীমান্তসংলগ্ন বেইত শেইন শহরে একটি ড্রোন আঘাত হানে। এতে একটি দুইতলা বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। জরুরি উদ্ধারকর্মীরা জানান, বিস্ফোরণে বাড়িটির পাশে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, জানালা ও দরজা উড়ে গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আডম (এমডিএ) জানিয়েছে, তারা ধ্বংসস্তূপের ভেতর তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। হতাহত কারও খোঁজ পায়নি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, ইরানের দ্বিতীয় ড্রোনটি ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি খোলা এলাকায় আঘাত হানে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করার পর থেকে ইরান যে বিপুলসংখ্যক ড্রোন ছুড়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই প্রতিহত করা হয় বলে দাবি ইসরায়েলি বাহিনীর।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান আজ শনিবারের হামলায় অন্তত ছয়টি ড্রোন ছিল। এর মধ্যে কয়েকটি ড্রোন আরাভা মরুভূমি ও গোলান মালভূমিসহ অন্যান্য অঞ্চলে পৌঁছানোর আগেই ঠেকানো হয়।

ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তার মতে, গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করার পর থেকে ইরান হামলার জন্য হাজারের বেশি ড্রোন পাঠায়। যা লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই নিষ্ক্রিয় করা হয়।

আইআরজিসির বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের সবচেয়ে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের এই ড্রোনগুলো আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে দখলদাররা আবারও আশ্রয়কেন্দ্রে পালাতে বাধ্য হয়েছে। 

এলিট বাহিনী জানিয়েছে, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয়ে ইরানের এই ‘হাইব্রিড অপারেশন’ নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে চালানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানে সরকার পরিবর্তন সহজ নয়, পরিণতিও অনিশ্চিত
  • ইরানের এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলা
  • ইরানের ‘কুখ্যাত’ এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলা
  • আক্রমণের অগ্রভাগে ড্রোন, ইরানের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল
  • ইসরায়েলের হাইফায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত ৩৩