সন্ধ্যা নামার খানিক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে সমবেত কণ্ঠে ভেসে এল, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।’

শাহবাগে জাতীয় সংগীত অবমাননা করার অভিযোগে গতকাল সোমবার সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেছেন ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল সংগঠনের নেতা–কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে উপস্থিত ছিল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, জাতীয়বাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ কয়েকটি ছাত্রসংগঠন। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়। তবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীদের কাউকে দেখা যায়নি।

সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে সম্মিলিতভাবে এই সংগীত গাওয়া হয়। এর আগে ও পরে রাজু থেকে স্লোগান ওঠে, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশি বাংলাদেশি,’ ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা,’ ‘একাত্তরের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই, চব্বিশের বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই,’ ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’ প্রভৃতি।

আয়োজকেরা জানান, ১০ মে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকজনকে জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে তাঁরা সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার আয়োজন করেছেন।

জাতীয় সংগীত গাওয়ার পর গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি চলবে না, ভারতপন্থী রাজনীতিও চলবে না, শুধু বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি চলবে। আগামীর বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করতে হবে।’ বাকের আরও বলেন, ‘গোলাম আযম এই বাংলার কে? আমি এই প্রশ্ন রাখতে চাই। বাংলাদেশে যারা একাত্তরের বিরোধী ছিল, সে যে-ই হোক, সে এই বাংলার হতে পারে না।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আবদুল কাদেরও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজকের প্রতিবাদ বাংলাদেশপন্থীদের সম্মিলিত প্রতিবাদ। যারা নতুন করে আবার আঘাত করবে, টুঁটি চেপে ধরবে, সার্বভৌমত্বে আঘাত করবে, তাদের আমরা একটা বার্তা দিয়েছি যে বাংলাদেশপন্থীরা এখনো জীবিত আছে।’

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা বলেন, ‘আজকের এই জাতীয় সংগীত গাওয়া ছিল আমাদের একধরনের প্রতিবাদ।’ তিনি বলেন, ‘শাহবাগে জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় জামায়াত–শিবির বাধা দেয়। এটাকে শুধু বাধা হিসেবে দেখলে চলবে না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সব সময়ই একাত্তরকে খর্ব করতে চায়।’

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম বলেন, ‘একাত্তর আনকম্প্রোমাইজিং, একাত্তর নিয়ে আমরা বাংলাদেশিরা কারও সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করব না। একাত্তর আমাদের অস্তিত্ব।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘আমরা কি এমন ঐক্য করব, যে ঐক্য করলে আমরা জাতীয় সংগীত গাইতে পারব না? তবে ন্যূনতম ঐক্য লাগবে; কিন্তু সেটা একাত্তর এবং চব্বিশের গণহত্যাকারীদের স্পেস দিয়ে নয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শপন থ ছ ত রস র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

২৬৯ করেও বাবার কাছে যখন শুনতে হয়—ট্রিপল সেঞ্চুরি মিস করেছ

বাবারা বুঝি এমনই হন! সন্তান ভালো করলে খুশি তো হনই, পাশাপাশি কীভাবে আরও ভালো করা যেত, কোন সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে—সেসব নিয়েও সন্তানকে বলেন। শুবমান গিলের বাবা লখিন্দর সিং–ও এর ব্যতিক্রম নন। ছেলে তাঁর ইংল্যান্ডে ভারতের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড (২৬৯) গড়ার পরও লখিন্দর মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাবা ট্রিপল সেঞ্চুরিটা যে মিস হয়ে গেল!

আরও পড়ুনজাদেজা কি সত্যিই পিচ নষ্ট করতে চেয়েছিলেন৫ ঘণ্টা আগে

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলে প্রকাশ হওয়া এক ভিডিও বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন গিল নিজেই। এজবাস্টন টেস্টে গতকাল দ্বিতীয় দিনে ২৬৯ রানে আউট হন গিল। তাঁর অসাধারণ এই ইনিংসে ভর করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫৮৭ রানের পাহাড় গড়তে পেরেছে ভারত। এরপর ইংল্যান্ড নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে আজ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫ উইকেটে ৩৩৮ রান তুলেছে।

ভারতের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ডে ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন গিল। বীরেন্দর শেবাগ ও করুন নায়ারের পর ভারতের ইতিহাসে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি করার সুযোগটা ছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত তা না পেলেও বাবার কাছ থেকে ঠিকই অভিনন্দন পেয়েছেন ২৫ বছর বয়সী গিল। ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘তাঁর কাছ থেকে (প্রশংসা) শোনা আমার জন্য অনেক কিছু। তবে তিনি এ–ও বলেছেন, আমি আমার ট্রিপল সেঞ্চুরিটা মিস করেছি। আশা করি, আমরা ম্যাচটা খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারব।’

এজবাস্টন টেস্টে গতকাল ডাবল সেঞ্চুরি করেন গিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ