যে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ
Published: 17th, May 2025 GMT
মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া বাকি তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।
অভিযোগ গঠন বা বিচার শুরুর ২৫ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হলো। চলুন দেখে আসি, ঘটনার পর থেকে আজ রায় ঘোষণা পর্যন্ত কোন দিন কী ঘটেছে।
১ মার্চ ২০২৫, শনিবার
শিশুটি শ্রীপুর উপজেলার বাবার বাড়ি থেকে মাগুরা পৌর এলাকায় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসে। এর আনুমানিক চার মাস আগে ওই বোনের বিয়ে হয়।
৬ মার্চ, বৃহস্পতিবার
সকাল আনুমানিক ৮টা ২০ মিনিট থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে বোনের শয়নকক্ষে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিশুটিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ওই দিন রাতেই শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ওই দিনই শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী ও ভাশুরকে আটক করে পুলিশ।
৭ মার্চ, শুক্রবার
গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। জুমার নামাজের পর এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে বিচারের দাবিতে মাগুরা সদর থানা ঘেরাও করেন বিক্ষোভকারীরা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্ষণের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়।
৮ মার্চ, শনিবার
অচেতন শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
৯ মার্চ, রোববার
সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। নিরাপত্তাশঙ্কা থাকায় দিনে আসামিদের আদালতে আনতে পারেনি পুলিশ। পরিস্থিতি বিবেচনায় ওই দিন গভীর রাতে রিমান্ড শুনানি হয়। পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত ভুক্তভোগী শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন; স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস
বাঁশ এক ধরনের ঘাস এবং চীর সবুজ বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ। আমাদের দেশে এটি একটি সংবেদনশীল শব্দ। কিন্তু চীনে বাঁশকে শুভশক্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এই কারণে চীনা সংস্কৃতির সর্বত্র রয়েছে বাঁশের ব্যবহার। তারা মনে করে বাঁশ নেতিবাচক শক্তিকে প্রতিহত করতে পারে। আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। প্রতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালিত হয়। বাঁশের প্রয়োজনীয়তা ও বাঁশ সম্পর্কিত সচেতনতা ছড়িয়ে দিতেই বিশ্ব বাঁশ দিবস পালিত হয়।
মুলি, তল্লা, আইক্কা, ছড়িসহ নানা ধরনের বাঁশ রয়েছে। পৃথিবীতে ৩০০ প্রজাতির বাঁশ আছে।এর মধ্যে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইন্সটিটিউট ৩৩ প্রজাতির বাঁশ সংরক্ষণ করেছে।
আরো পড়ুন:
কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস
পিসিওএস রোগ হলে নারী কী গর্ভধারণ করতে পারেন?
২০০৫ সালে বৈশ্বিকভাবে বাঁশ শিল্পকে উন্নত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ব বাঁশ সংস্থা। ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অষ্টম বিশ্ব বাঁশ কংগ্রেস চলাকালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায় বিশ্ব বাঁশ দিবস।
২০০৯ সালের ওই সম্মেলনে প্রায় ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং দিনটিকে বিশ্ব বাঁশ দিবস হিসাবে মনোনীত করার প্রস্তাবে সম্মত হন। এই দিবস পালনের প্রস্তাব রেখেছিলেন সংস্থার তৎকালীন সভাপতি কামেশ সালাম।
বিশ্বব্যাপী আসবাবপত্র কিংবা গৃহস্থালি প্রয়োজন ছাড়াও বাঁশ ব্যবহার করা হয় খাদ্যদ্রব্য হিসেবে। সবুজ বাঁশের ডালের ভেতরের অংশ অর্থাৎ বাঁশ কোড়ল স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) গ্লোবাল ব্যাম্বু রিসোর্সেস প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রজাতির বাঁশ পাওয়া যায় চীনে। চীনে অন্তত ৫০০ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে রয়েছে ২৩২ প্রজাতির বাঁশ। আর ৩৩ প্রজাতির বাঁশ থাকা বাংলাদেশ আছে তালিকার অষ্টমে।
বাঁশ খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। পুষ্টি উপাদান ও মুখরোচক স্বাদের জন্য পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষের কাছে খাবার বাঁশ কোড়ল নামে পরিচিত।এর তৈরি স্যুপ, সালাদ, তরকারি বেশ জনপ্রিয়। সাধারণত বাঁশের অঙ্কুরোদগম হওয়ার পর চার থেকে ছয় ইঞ্চি পর্যন্ত যে কচি বাঁশ হয় সেটাই রান্না করে খাওয়া যায়।
ঢাকা/লিপি