এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারে ইলেকটনিকস ফান্ড ট্রান্সফারে (ইএফটি) জটিলতায় এখনো স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের বেতন ছাড় হয়নি। অনেকে তো জানুয়ারি থেকে বেতন পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় বিপাকে থাকা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগামীকাল রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করার দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে ঘোষণায় বলা হয়েছে, আজ শনিবারের মধ্যে এপ্রিল মাসের বেতন ছাড়া না হলে আগামীকাল রোববার সকাল ১০টায় মাউশি ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচি থেকে ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবি জানানো হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নেতারা অংশ নেন, তারা নিজেদের নানা বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রথমে মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে হবে। সব বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে। আর্থিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সব বৈষম্য ঘুচিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
১১ দফা দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব শামীম আল মামুন জুয়েলের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন গড়সানের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া, কো-চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবুল বাশার হাওলাদার, হারুনুর রশিদ মজুমদার, শাজাহান খান, হাবিবুর রহমান, আলী আহামেদ, রঞ্জিত কুমার সাহা, অধ্যক্ষ আবুল কাশেম প্রমুখ।
গত ১৭ মে থেকে ১১ দফা দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
লং মার্চে বাধা, সড়কে বসে পড়লেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা
জাতীয়করণের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত ‘যমুনা অভিমুখে লং মার্চ’ কর্মসূচি শুরু করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লং মার্চের প্রস্তুতিকালে বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে পড়েন তারা। এতে পল্টন থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষকরা হাতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন— “এমন কোনো দেশ নাই, চাকরি আছে বেতন নাই”, “ইবতেদায়ি শিক্ষক, হয়েছে কেন ভিক্ষুক?”, “এক দফা এক দাবি, জাতীয়করণ করতে হবে”, “বৈষম্য নিপাত যাক, জাতীয়করণ মুক্ত পাক”।
এ সময় ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।
লং মার্চ শুরুর আগে প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষকদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দাবি দীর্ঘদিনের এবং সম্পূর্ণ ন্যায্য। তারা ২১ দিন ধরে রাস্তায় অবস্থান করছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, অবিলম্বে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষকদের কর্মস্থলে ফেরার সুযোগ দিতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে জাতীয়করণ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সরকারের ঘোষণার নয় মাস পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই তারা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
সরকার পর্যায়ক্রমে সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা দিলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
ঢাকা/রায়হান/ইভা