হাসনাত আবদুল্লাহকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান কুমিল্লা বিএনপির
Published: 19th, May 2025 GMT
‘বিএনপির রাজনীতিও আওয়ামী লীগের টাকায় চলে’, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কুমিল্লা বিভাগ বিএনপি। এক সপ্তাহের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে হাসনাত আবদুল্লাহর কুমিল্লার রাজপথে জায়গা থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
আজ সোমবার (১৯ মে) বিকেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় ও জেলার নেতারা এই আলটিমেটাম দেন। একই সঙ্গে হাসনাতের বক্তব্যকে ‘শিশুসুলভ, রাজনৈতিক অপরিপক্বতা এবং মানসিক ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে বিএনপি।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ‘জুলাই সমাবেশে’ সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা আয়োজিত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যের একাংশে হাসনাত বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও তাঁদের অর্থদাতারা এখনো অক্ষত রয়েছেন। আমি এখন যেহেতু কুমিল্লা রয়েছি, তাই কুমিল্লাকে নিয়ে বলতে চাই, কুমিল্লার অনেক উপজেলা রয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতি পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতিও আওয়ামী লীগের টাকায় চলে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, অতি দ্রুত আওয়ামী লীগের অর্থকাঠামো ধ্বংস করে দিতে হবে। আওয়ামী লীগের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। তাদের অর্থকাঠামো ঠিক রেখে আপনি কখনোই যথাযথ সংস্কার করতে পারবেন না।’
এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আজ বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের (সাংগঠনিক) ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো.
সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘যে ব্যক্তি কিংস পার্টি নামে পরিচিত এনসিপির মুখপাত্র হয়ে এমন দায়িত্বহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন, তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত হবে এ ধরনের ছেলেমানুষি, অপরিপক্ব রাজনীতিবিদদের মাঠ থেকে সরিয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা।’
দেশের বিভিন্ন সংকটে কুমিল্লার বিএনপি নেতা-কর্মীরা জীবন বাজি রেখে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন উল্লেখ করে সেলিম ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কুমিল্লায় বিএনপি যে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে, তা ঐতিহাসিক। এই আন্দোলনে আমাদের নেতা–কর্মীরা শহীদ হয়েছেন, গ্রেপ্তার হয়েছেন, কিন্তু পিছপা হননি। সেই বিপ্লব ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের লক্ষ্যে জনগণকে জাগিয়ে তোলে।’
হাসনাত আবদুল্লাহকে এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিয়ে সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘এই বক্তব্যের জন্য তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। যদি তিনি তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার না করেন এবং ক্ষমা না চান, তাহলে কুমিল্লায় তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা তাঁকে এই সুযোগ দিচ্ছি, কিন্তু সময়সীমা অতিক্রান্ত হলে কুমিল্লার রাজপথে তাঁর জায়গা থাকবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর রশিদ (ইয়াছিন), কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের, যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমীর, সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনখুনিদের বিচার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও প্রথম সংস্কার: হাসনাত আবদুল্লাহ১৬ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক র র জন ত ব এনপ র এ ধরন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিলো রাশিয়া
আফগানিস্তানের তালেবানশাসিত সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। প্রথম দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া এ সরকাকে স্বীকৃতি দিলো। এর আগে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান ও পাকিস্তান কাবুলে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করলেও তালেবান সরকারের চার বছরের শাসনামলে রাশিয়াই একমাত্র দেশ যারা তাদের সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিলো। রাশিয়ার এ সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। খবর-বিবিসি
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান’কে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দ্বিপাক্ষিক কার্যকর সহযোগিতার পথে গতি আনবে। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা জ্বালানি, পরিবহন, কৃষি ও অবকাঠামো খাতে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা দেখছে। সন্ত্রাস ও মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে কাবুলকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে রাশিয়া।
এর আগে কাবুলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি জিরনোভের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন মুত্তাকি। সেখানে দিমিত্রি আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ সরকারের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানকে জানিয়ে দেন। এই স্বীকৃতিকে মুত্তাকি ‘ইতিবাচক সম্পর্কের নতুন অধ্যায়, পারস্পরিক সম্মান এবং গঠনমূলক অংশীদারিত্ব’ এর সূচনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি অন্য দেশগুলোর জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’