১১০২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুই মামলা, প্রধান আসামি এস আলম
Published: 19th, May 2025 GMT
নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ১০২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমকে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দুটি করা হয়।
দুদক সূত্র জানায়, প্রথম মামলায় ‘মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’-এর নামে ৫৪৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে সাইফুল আলমসহ ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় ‘মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজ’-এর নামে ৫৫৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়, যাতে ৩১ জন আসামি। কয়েকজন দুটি মামলাতেই আসামি।
এজাহারে বলা হয়, ভুয়া কাগজপত্র ও নানা অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ অনুমোদন করানো হয়। এমনকি কোনো টাকা পরিশোধ না করেও বিনিয়োগ সীমা বাড়িয়ে ২০২৩ সালে ৪৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিতরণ করা হয়।
দুদক জানায়, আত্মসাৎ করা অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের পর এস আলম গ্রুপের কয়েকটি কোম্পানির হিসাবে পৌঁছে দেওয়া হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১১০২ কোটি টাকা আত্মসাৎ: মামলায় এস আলমসহ ৬৬ জন আসামি
দুটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে নিজের মালিকানাধীন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ১ হাজার ১০২ কোটি আত্মসাৎ করেছেন শিল্পগ্রুপ এস আলমের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম। এ অপকর্মে তাকে সহযোগিতা করেছেন সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট।
দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান শেষে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় এস আলমের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদসহ ৬৬ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৯ মে) কমিশন এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয়। দুটি মামলায় সাইফুল আলমকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।
প্রথম মামলায় ঋণের নামে ব্যাংক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের নামে ৫৪৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে সাইফুল আলমসহ ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন-এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মাহফুজুল ইসলাম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ছুটিতে) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, অবসরপ্রাপ্ত উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল কুদ্দুস, বিনিয়োগ প্রশাসন বিভাগের প্রধান (অবসরপ্রাপ্ত) ইভিপি এস.এ.এম সলিমুল্লাহ, ইনভেস্টমেন্ট মনিটরিং বিভাগের প্রধান (অবসরপ্রাপ্ত) ইভিপি মো. মহসিন উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী ওসমান আলী, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (পদত্যাগপত্র দাখিলকৃত) মোহাম্মদ মোস্তফা খায়ের, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ হাবিব হাসনাত, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জহুরুল হক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সাবেক) মো. মাসুদুর রহমান শাহ, বিনিয়োগ প্রশাসন বিভাগের প্রধান (অবসরপ্রাপ্ত) ইভিপি ইকরাম উল্লা, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএডি বিভাগের প্রধান সৈয়দ আনিছুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিভাগের ইভিপি (অবসরপ্রাপ্ত) ফয়েজ আহমেদ, বিনিয়োগ মনিটরিং বিভাগের এসভিপি (অবসরপ্রাপ্ত) এ কে এম আবু ছসীর চৌধুরী, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (পদত্যাগপত্র দাখিলকৃত) মো. আলমগীর হোসেন, আন্তর্জাতিক বিভাগের এসইভিপি এস এম আজহারুল ইসলাম, ইনভেস্টমেন্ট মনিটরিং বিভাগের ভিপি (অব.) মো. ইফতেখার উদ্দিন, ইভিপি (পদত্যাগপত্র দাখিলকৃত) কায়সার ইমতিয়াজ, ট্রেজারি বিভাগের ইভিপি মো. মাসুদ পারভেজ, এসএমই ও কৃষি বিনিয়োগ বিভাগের ইভিপি সাফায়েত আহমেদ চৌধুরী, সাবেক আইএডি প্রধান ও এসভিপি মো. নাছিম গাওহার, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ইভিপি আলী নাহিদ খান, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিসের সাবেক এসভিপি কাজী লতিফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর আঞ্চলিক প্রধান ও সাবেক এসভিপি মো. ওয়াহিদুর রহমান, চট্টগ্রাম উত্তর আঞ্চলিক প্রধান ও সাবেক ইভিপি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, খাতুনগঞ্জ শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক ও এসভিপি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন (অপসারিত), জুবিলি রোড শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক ও এসএভিপি মোহাম্মদ জাবেদ মোরশেদ (ছাড়পত্রপ্রাপ্ত), চট্টগ্রাম দক্ষিণ শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক ও এসভিপি আব্দুল্লাহ আল নোমান (অপসারিত), জুবিলি রোড শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ও ভিপি মোহাম্মদ আমির হোসাইন (চাকরিচ্যুত), জুবিলি রোড শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ও এসএভিপি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ (অপসারিত), জুবিলি রোড শাখার এভিপি মোহাম্মদ মোকতার হোসাইন (ছাড়পত্রপ্রাপ্ত), আইসিএন্ডসি বিভাগের এসএভিপি মোশাররফ উদ্দীন, আন্দরকিল্লা শাখার এসএভিপি ফারজানা শাম্মি, খুলনা জোনাল অফিসের এসএভিপি আরিফুল হক চৌধুরী এবং জুবিলি রোড শাখার এভিপি ফারহানা নিগার চৌধুরী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রস্তাব (ঋণ প্রস্তাব) শাখা হতে জোনাল অফিস ও পরে প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ ও ঋণ অনুমোদন করে নামসর্বস্ব কোম্পানি মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের নামে।২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, জুবিলি রোড শাখায় বাই মুরাবাহা (হাইপো) বিনিয়োগ সীমা ৭২ কোটি এবং এলসি সীমা ৮০ কোটি টাকার বিনিয়োগ (ঋণ) সুবিধা দেওয়া হয়। ওই ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ (ঋণ) গ্রাহকের হালনাগাদ সিআইবি না নেওয়া, গ্রাহকের ঠিকানা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা যাচাই না করা, হালনাগাদ বিমা পলিসি ও ট্রেড লাইসেন্স না নেওয়া, ল’ ইয়ার স্যাটিসফেকশন সার্টিফিকেট না নেওয়া, এনইসি গ্রহণ না করা, সহায়ক জামানতের অতিমূল্যায়নসহ যথাযথ রেকর্ডপত্র ছাড়া ঋণ প্রদানসহ অন্যান্য অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়।
এজাহারে আরো বলা হয়, ঋণের ক্ষেত্রে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের জুবিলি রোড শাখা থেকে বিনিয়োগ সীমার বিপরীতে ২০১২ সালের পরবর্তী বছরগুলোতে ঋণের কোনো টাকা পরিশোধ না করা সত্ত্বেও শাখা কর্তৃক ভুয়া ডকুমেন্ট প্রেরণ করে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ সীমা বৃদ্ধি করা হয় এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালে বিনিয়োগ সীমা ১০০ কোটি টাকার বিপরীতে ৪৫০ কোটি টাকা সীমাতিরিক্ত বিতরণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় মোট ৫৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন নামসর্বস্ব হিসাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এই টাকা বিভিন্ন ডিলের মাধ্যমে সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের হিসাব থেকে মেসার্স শাহাজি ট্রেডার্স, জুপিটার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স জিন্নাহ কর্পোরেশন, মুসা এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন কোম্পানির অনুকূলে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পরে ওই হিসাবসমূহ থেকে ৫টি ডিলের মাধ্যমে মোট ১৯ কোটি ২২ লাখ টাকা এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে (এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, এস আলম রিফাইন্ড সুগার লি.) স্থানান্তর করে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ অনুসন্ধানকালে প্রতীয়মান হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯/১০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় একই কায়দায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের নামে ৫৫৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও সাইফুল আলমসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিরা হলেন-এস আলম গ্রুপ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আলমগীর হুদা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ছুটিতে) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জহুরুল হক, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ হাবিব হাসনাত, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল আজিজ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা খায়ের, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী ওসমান আলী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সাবেক) মো. মাসুদুর রহমান শাহ, ইভিপি ও বিভাগীয় প্রধান (অবসরপ্রাপ্ত) ইকরাম উল্লা, ভিপি ও আইএডি প্রধান (সাবেক) সৈয়দ আনিছুর রহমান, ইভিপি ও বিভাগীয় প্রধান (অবসরপ্রাপ্ত) ফয়েজ আহমেদ, এসভিপি ও বিভাগীয় প্রধান (অবসরপ্রাপ্ত) এ. কে. এম. আবু ছগীর চৌধুরী, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইনভেস্টমেন্ট ডিভিশনের প্রধান মো. আলমগীর হোসেন, এসইভিপি ও আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান এস. এম. আজহারুল ইসলাম, ভিপি ও বিভাগীয় প্রধান (অব.) মো. ইফতেখার উদ্দিন, ইভিপি ও বিভাগীয় প্রধান কায়সার ইমতিয়াজ, ইভিপি ও বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, ইভিপি ও বিভাগীয় প্রধান সাফায়েত আহমেদ চৌধুরী, এসভিপি ও সাবেক আইএডি প্রধান মো. নাছিম গাওহার, ইভিপি ও বিভাগীয় প্রধান আলী নাহিদ খান, সাবেক এসভিপি ও চট্টগ্রাম উত্তর আঞ্চলিক প্রধান মো. ওয়াহিদুর রহমান, সাবেক ইভিপি ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, এসএভিপি (ছাড়পত্রপ্রাপ্ত) ও জুবিলি রোড শাখার সাবেক ম্যানেজার মোহাম্মদ জাবেদ মোরশেদ, এসএভিপি (অপসারিত) ও সাবেক অপারেশন ম্যানেজার মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ, আন্দরকিল্লা শাখার এসএভিপি ও সাবেক অপারেশন ম্যানেজার ফারজানা শাম্মি, এভিপি ও সাবেক অপারেশন ম্যানেজার ফারহানা নিগার চৌধুরী, এসএভিপি ও সাবেক ম্যানেজার মোহাম্মদ জোবাইর হোসেন, আন্দরকিল্লা শাখার এফএভিপি মোরশেদুল আলম, এফএভিপি সেলিম উল্লাহ এবং এভিপি (অপসারিত) সৈয়দা নাজমা মালেক।
এজাহারে বলা হয়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজ নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারীর সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গ করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রস্তাব (ঋণ প্রস্তাব) শাখা থেকে জোনাল অফিস ও পরে প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ ও ঋণ অনুমোদন করে।
এতে বলা হয়, নামসর্বস্ব কোম্পানি মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের নামে সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, আন্দরকিল্লা শাখায় বাই মুরাবাহা (হাইপো) বিনিয়োগ সীমা ৫০ কোটি এবং এলসি সীমা ৫৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়া হয়। উক্ত ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ (ঋণ) গ্রাহকের হালনাগাদ সিআইবি না নেওয়া, গ্রাহকের ঠিকানা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা যাচাই না করা, হালনাগাদ বীমা পলিসি ও ট্রেড লাইসেন্স না নেওয়া, ল’ ইয়ার স্যাটিসফেকশন সার্টিফিকেট না নেওয়া, সহায়ক জামানতের অতিমূল্যায়নসহ যথাযথ রেকর্ডপত্র ছাড়া ঋণ প্রদানসহ অন্যান্য অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়।
এছাড়া ঋণ বিতরণের পর আন্দরকিল্লা শাখা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ইউনিয়ন ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান যেমন-ভেনাস ট্রেডিংস লি., রিজেনেবল ট্রেডার্স লি., আব্দুল আওয়াল অ্যান্ড সন্স লি., ইউনিয়ন প্যাসিফিক সোর্স অ্যান্ড ট্রেডের অনুকূলে ঋণের টাকা স্থানান্তর করা হয়।উক্ত নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানসমূহের হিসাব থেকে পরবর্তীতে চেক ও ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ২টি প্রতিষ্ঠানে মোট ১৩০ কোটি টাকা স্থানান্তর করার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
এতে বলা হয়, ঋণ প্রদানের পরবর্তী বছরগুলোতে অর্থাৎ, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গ্রাহকের আবেদন, শাখা ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের সুপারিশ অনুযায়ী বিনিয়োগ হিসাব নিয়মিত রাখার জন্য মুনাফাসহ বছর বছর নবায়ন করা হতো। এই প্রক্রিয়ায় অনুমোদিত বিনিয়োগ সীমা (ঋণ সীমা) ৪৫ কোটি টাকা থাকলেও সময়ে সময়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থছাড় করে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করে মোট ৫৫৩ কোটি ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ