নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ১০২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমকে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দুটি করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, প্রথম মামলায় ‘মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’-এর নামে ৫৪৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে সাইফুল আলমসহ ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় ‘মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজ’-এর নামে ৫৫৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়, যাতে ৩১ জন আসামি। কয়েকজন দুটি মামলাতেই আসামি।

এজাহারে বলা হয়, ভুয়া কাগজপত্র ও নানা অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ অনুমোদন করানো হয়। এমনকি কোনো টাকা পরিশোধ না করেও বিনিয়োগ সীমা বাড়িয়ে ২০২৩ সালে ৪৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিতরণ করা হয়।

দুদক জানায়, আত্মসাৎ করা অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের পর এস আলম গ্রুপের কয়েকটি কোম্পানির হিসাবে পৌঁছে দেওয়া হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চাকুসর ভিপি-জিএস শিবিরের, এজিএস ছাত্রদলের

পঁয়ত্রিশ বছরের ফাঁড়া কাটিয়ে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচনে অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে শীর্ষ দুই পদ ভিপি ও জিএসে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা; অবশ্য চমক সৃষ্টি করে এজিএস পদে বিজয়মালা উঠেছে ছাত্রদলের প্রার্থীর গলায়।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণের পর সন্ধ্যার পর ভোটগণনা শুরুর কয়েক ঘণ্টা বাদে মধ্যরাত থেকে ফলাফলের ঘোষণা আসতে থাকে; যেখানে বেশিরভাগ পদে লড়াই হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ও ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের মধ্যে। ফল এসেছে শিবিরের পক্ষেই বেশি। 

আরো পড়ুন:

প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে রাকসু, রাত পোহালেই ভোট

কাল ভোট, চলছে রাকসু ভবন প্রস্তুতের কাজ

এর মধ্য দিয়ে ১৯৮১ সালের পর আবার চাকসুর নেতৃত্বে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী আদর্শের এই ছাত্রসংগঠন। অবশ্য ১৯৯০ সালের চাকুস নির্বাচনে অংশ নিলেও তারা জেতেনি। সেবার ঐক্য প্যানেল শিবিরকে পরাজিত করেছিল।

ডাকসু ও জাকসুর পর ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ছাত্রসংসদ নির্বাচন হলো, যেখানে ছাত্রদল তুলনামূলক ভালো ফল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। উদারপন্থি প্রগতিশীলতার চর্চার আতুড়ঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের নেতা বা প্রতিনিধি হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে বেছে নিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে, সেখানে শিবির-ছাত্রদল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস রয়েছে। অবশ্য ছাত্ররাজনীতির দিক থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ‘শিবিরের ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত।

বুধবার রাত থেকে গণনা শুরু হলেও চাকসুর মোট ১৫টি কেন্দ্রের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করতে ভোর হয়ে যায়। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘোষণা করা ফলাফল অনুযায়ী, চাকসুর ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের ইব্রাহিম রনি। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ছাত্রদলের সাজ্জাদ হৃদয়ের। অবশ্য দুজনের ভোটের ব্যবধান উল্লেখযোগ্য। যদিও ডাকসু ও জাকসুর মতো হয়নি।

চাকসুর জিএস পদে প্রায় সব কেন্দ্রে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের সাঈদ বিন হাবিব। ছাত্রদলের শাফায়াত তাকে চ্যালেঞ্জ জানালে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেননি তিনি। অবশ্য শায়ায়াতও ডাকসু-জাকসুর ছাত্রদল প্রার্থীদের মতো ভেসে যাননি; বেশ ভোট তার ঝুলিতে আনতে পেরেছেন।

চাকসু ভোটে সবচেয়ে বড় চমক সৃষ্টি করেছেন ছাত্রদলের ‎আইয়ুবুর রহমান তৌফিক। এজিএস পদে একচেটিয়া দাপট দেখিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এই পদে শিবিরের সাজ্জাদ মুন্না তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেননি সেভাবে।

চাকসু নির্বাচনে এবার মোট ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোর নাগাদ সব কেন্দ্রের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।

ঢাকা/রাসেল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ