যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক এবং মাদক রোধে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) এসব দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ বরাবর স্মারকলিপিটি প্রদান করেছে যবিপ্রবি এন্টি ড্রাগ সোসাইটি।

স্মারকলিপিতে প্রস্তাবিত কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য ডোপ-টেস্ট পরিচালনায় একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া তৈরি করা; মাদক পরীক্ষার ফলাফল ভর্তির শর্ত হিসেবে বিবেচনা করা; বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রকাশ্যে ধূমপানের শাস্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে অন্তর্ভুক্ত করা এবং বাংলাদেশ সংবিধান অনুসারে প্রকাশ্যে ধূমপানের দায়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া; পরবর্তীতে কেউ যদি মাদকাসক্ত হয়, তাহলে তার ছাত্রত্ব বাতিল এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আরো পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচনে ব্যক্তিতেই আস্থা শিক্ষার্থীদের

জবিতে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে সেমিনার

এছাড়াও স্মারকলিপিতে মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ, মাদক বিষয়ে জাতীয় নীতিমালার সমর্থন, শিক্ষার্থীর মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা, মাদকের কুপ্রভাব থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দেওয়া এবং তাদের সঠিক মানসিক বিকাশে সহায়তা করা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব, প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি রক্ষার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।

এন্টি ড্রাগ সোসাইটির পক্ষ থেকে মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে ডোপ টেস্টের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলা হয়েছে, একটি উন্নত ও নৈতিক সমাজ গঠনে প্রয়োজন মাদকমুক্ত সুস্থ শিক্ষাব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে ভবিষ্যতের নাগরিকেরা গড়ে ওঠে। কিন্তু অতীতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় মাদকের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছিল। 

আলো বলা হয়েছে, ‘জুলাই বিপ্লব’ এই বাস্তবতার পরিবর্তনের পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। যার অন্যতম দাবি ছিল মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস। এই লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও স্নাতক সমাপ্তির সময় ডোপ টেস্ট চালু করা জরুরি। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং যবিপ্রবিকে একটি নিরাপদ, মাদকমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষকদের বাদ দিয়ে সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীর ধান ক্রয়ের অভিযোগ

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় বোরো মৌসুমে কৃষি অফিসের তালিকাভুক্ত কৃষকদের পরিবর্তে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। বিপাকে পড়েছেন তালিকাভুক্ত প্রান্তিক কৃষকরা।

জানা গেছে, চলতি বছর বোরো মৌসুমে কৃষক অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে গুদামে ধান বিক্রির আবেদন করেন কৃষকরা। অনলাইন থেকে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করা হয়। মুন্সিরহাট খাদ্যগুদামের আওতায় ধোবাউড়া সদর, ঘোষগাঁও এবং বাঘবেড় ইউনিয়নের ৬৯৬ জন কৃষক নির্বাচিত হন। প্রত্যেক কৃষকের কাছে তিন টন করে ৬১০ টন ধান ক্রয়ের কথা এই গুদামে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গত ২৮ মে থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু হয়, যা শেষ হয় ২৮ জুন। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এক ছটাক ধান বিক্রি করতে পারেননি কয়েকজন কৃষক।

অভিযোগ রয়েছে, মুন্সিরহাট এলএসডি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করেছেন। এদিকে তালিকাভুক্ত কয়েকজন কৃষক খাদ্যগুদামে একাধিকবার ধান বিক্রি করতে গেলে বরাদ্দের ধান কেনা শেষ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

বাঘবেড় ইউনিয়নের মান্দালিয়া এলাকার প্রান্তিক কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমার পরিবারের পাঁচটি নাম তালিকায় রয়েছে। সরকারি শর্ত পূরণ করে আমি ধান রেডি করে গুদামে বিক্রি করতে গেলে বলা হয় ধান কেনা শেষ। পরে আবার বরাদ্দ পেলে ধান নেওয়া হবে। এদিকে দেখি রাতের আঁধারে গুদামে গাড়ি ভর্তি ধান যাচ্ছে অথচ আমাদের ধান নিচ্ছেন না। পরে জানতে পারলাম, একটি প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে গুদামের কর্মকর্তারা ধান কিনছেন।’

এমন অভিযোগ মুন্সিরহাট এলাকার ওলি মাহমুদেরও। তার ভাষ্য, তিনি ধান নিয়ে গেলে বলা হয় ধান কেনা শেষ। অথচ রাতে গাড়িতে করে আসা ধান কিনছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও ধান দিতে পারলাম না। অথচ ধান কেনা শেষ হয়ে গেল। তাহলে আমার বরাদ্দের ধান দিল কে? এই বিচার কে করবে?’

কৃষকদের বাদ দিয়ে বাইরের ব্যবসায়ী চক্রর কাছ থেকে ধান কেনার অভিযোগ তুলে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন কৃষক শাহ আলম।

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান সংগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুন্সিরহাট এলএসডি খাদ্যগুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তার ভাষ্য, যারা অনলাইনে আবেদন করেছেন সবারই তালিকায় নাম আসায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। একদিকে বরাদ্দের পরিমাণ কম ও কৃষক বেশি থাকায় যারা আগে ধান নিয়ে আসছে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, এ বছর নিবন্ধিত কৃষকদের কাছে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। যারা আগে আসছেন, তারা আগে ধান বিক্রি করতে পারবেন। মুন্সিরহাটের এই ঘটনা জানার পর খাদ্য কর্মকর্তাকে সরেজমিন তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ধান ক্রয়ে কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেউ অনিয়ম করলে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ