চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিক নেতাদের মশাল মিছিল
Published: 20th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক টার্মিনাল এনসিটিকে ডিপি ওয়ার্ল্ড নামের বিদেশি কোম্পানির হাতে লিজ দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল (সাবক সিবিএ) সোমবার রাতে মশাল মিছিল বের করে। মিছিলটি বন্দর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে বন্দর নতুন মার্কেটের সামনে শেষ হয়। রাত সাড়ে ৯ টায় সেখানে সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বক্তারা এনসিটিম সিসিটি ও পিসিটি সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালনার দাবি জানান।
সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও আধুনিক টার্মিনাল। এটি লাভজনক ও দীর্ঘদিন যাবৎ সক্ষমতা অর্জন করেছে। এটি বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া অযৌক্তিক। এনসিটি, সিসিটি বিদেশি অপারেটরকে ছেড়ে দেওয়া হলে আয়ের বাবদ বিপুল পরিমাণ ডলার বিদেশে চলে যাবে এবং বাংলাদেশ ডলার সংকটে পড়বে।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে শ্রমিক নেতারা আরও বলেন, আপনি বাংলাদেশের সম্পদ। তেমনি দেশের প্রধান চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি এসটিটিও বাংলাদেশের সম্পদ। আপনি কারও দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে এবং কোন ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি না করে বাংলাদেশের হৃদপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি, এনসিটি বিদেশিদের হাতে লিজ না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিক দলের (সাবেক সিবিএ) সহ-সম্পাদক মোজাহের হোসেন শওকত। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা, সাবেক সিবিএ নেতা মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লবণসহিষ্ণু গমের নতুন জাত উদ্ভাবন
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগ উচ্চ লবণসহিষ্ণু গমের নতুন জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন করেছে। উচ্চ লবণাক্ততা সহনশীলতার দিক থেকে দেশে এটিই গমের প্রথম জাত। আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আকব্বাস উদ্দিন।
কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ময়নুল হক ও মসিউল ইসলামের নেতৃত্বে গবেষণার মাধ্যমে ‘জিএইউ গম ১’–এর উদ্ভাবন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, উন্নতমানের গমের জাতটি লবণাক্ততা সহনশীল, উচ্চফলনশীল ও অধিক প্রোটিনসমৃদ্ধ। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট উদ্ভাবিত জাতের সংখ্যা ৯১টিতে পৌঁছাল, যা বাংলাদেশের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
এ সম্পর্কে অধ্যাপক মসিউল ইসলাম বলেন, ‘জিএইউ গম–১ উদ্ভাবন আমাদের দীর্ঘদিনের গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার ফল। দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও লবণাক্ত এলাকায় ফসল উৎপাদনের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যেই আমরা এই গমের জাতটি উদ্ভাবনে কাজ শুরু করি। এটি লবণাক্ত পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে এবং তুলনামূলকভাবে অধিক ফলন দেয়, যা কৃষকের জন্য যেমন লাভজনক।’
গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন গবেষণা ও ফলন পরীক্ষার পর ২০২১ থেকে ২০২৩ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কৃষকের মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে লবণাক্ততা সহিষ্ণু ও উচ্চ ফলনশীল গম হিসেবে প্রমাণিত হয়। পরে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির সার্বিক তত্ত্বাবধানে দেশের ৬টি স্থানে মাঠ মূল্যায়নে প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়ার যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বীজ বোর্ড গত ১৭ জুন জিএইউ গম–১–এর ছাড়পত্র দেয়। এ গমে অধিক প্রোটিন শরীর গঠন ও মেরামত, শক্তি সরবরাহ, ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধে অধিক সহায়তা করে থাকে। অন্যদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্লটেনিন থাকায় এটি উচ্চ প্রোটিন ও লো ফ্যাট হওয়ায় সহজে শরীরে শোষিত হতে পারে ডিইউএসের ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যসম্বলিত ল্যাব টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে এটি সাধারণ গম থেকে ভিন্ন গুণসম্পন্ন।
আমন মৌসুমে ধান কাটার পর এই গমের বীজ বপন করলে ৯৫–১০০ দিনে উৎপাদন পাওয়া যায়। অল্প সময়ে অধিক ফলন পেয়ে কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন। অন্যদিকে এ গমের গাছের আকার বড়, কাণ্ড মোটা ও গুটির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এটি থেকে অধিক পরিমাণ খড় পাওয়া যায়, ফলে গবাদি পশুর খাদ্যের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উৎকৃষ্টমানের এ জাতের ফলন হেক্টর প্রতি স্বাভাবিক মাটিতে ৪ দশমিক ৫ টন এবং লবণাক্ত মাটিতে ৩ দশমিক ৭৫ টন ফলন পাওয়া সম্ভব। এটি লবণ সহনশীল হওয়ায় মানব শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে কার্যকরভাবে পানি ও পুষ্টি শোষণ করতে পারে। এ ছাড়া জলবায়ু সহনশীলতা ও রোগ-পোকা প্রতিরোধক্ষমতা থাকায় এটি দেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশে চাষের জন্য উপযোগী ও লাভজনক একটি জাত।