চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক টার্মিনাল এনসিটিকে ডিপি ওয়ার্ল্ড নামের বিদেশি কোম্পানির হাতে লিজ দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল (সাবক সিবিএ) সোমবার রাতে মশাল মিছিল বের করে। মিছিলটি বন্দর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে বন্দর নতুন মার্কেটের সামনে শেষ হয়। রাত সাড়ে ৯ টায় সেখানে  সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বক্তারা এনসিটিম সিসিটি ও পিসিটি সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালনার দাবি জানান।

সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও আধুনিক টার্মিনাল। এটি লাভজনক ও দীর্ঘদিন যাবৎ সক্ষমতা অর্জন করেছে। এটি বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া অযৌক্তিক। এনসিটি, সিসিটি বিদেশি অপারেটরকে ছেড়ে দেওয়া হলে আয়ের বাবদ বিপুল পরিমাণ ডলার বিদেশে চলে যাবে এবং বাংলাদেশ ডলার সংকটে পড়বে। 

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে শ্রমিক নেতারা আরও বলেন, আপনি বাংলাদেশের সম্পদ। তেমনি দেশের প্রধান চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি এসটিটিও বাংলাদেশের সম্পদ। আপনি কারও দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে এবং কোন ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি না করে বাংলাদেশের হৃদপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি, এনসিটি বিদেশিদের হাতে লিজ না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিক দলের (সাবেক সিবিএ) সহ-সম্পাদক মোজাহের হোসেন শওকত। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা, সাবেক সিবিএ নেতা মো.

হুমায়ুন কবীর। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মো. আবুল কালম, আনোয়ারুল আজিম (রিংকু), এজহার মিয়া, আবদুল হাই, শেখ ছানুয়ার মিয়া, আকতার হোসেন, মোস্তফা চৌধুরী, মোশারফ হোসেন,দিদারুল আলম, সিরাজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, বেলায়েত হোসেন মাস্টার, গোলাম ছরোয়ার, মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ  মোঃ নাছির উদ্দিন, বাহার মিয়া,শাহজাহান সিরাজ, দিদারুল হায়দার, মহিউদ্দিন তমিজি আবেদ, ফরিদুর রহমান, আল আমিন, নুরুল আজিম প্রমূখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন শফিকুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবির। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সম ব শ এনস ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।

স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে