বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত কুমিল্লার ৩৫৭ জনের তালিকায় নাম নেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্র তামিম হোসেনের। ২০২৪ সালের ১২ জুলাই ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন তিনি। এদিন কলেজ ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলাকালে হামলার ভিডিও করার সময় ছাত্রলীগের নেতারা তাঁকে ধরে নিয়ে হলে ২ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করে। আহত তামিম দেবিদ্বার উপজেলার সাইতলা গ্রামের কৃষক আলী আসাদের ছেলে।
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে মাঠে ছিলেন। গত বছরের ১২ জুলাই ভিক্টোরিয়া কলেজে আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলার ভিডিও ধারণ করছিলেন তামিম। এতে ছাত্রলীগ ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করে কলেজ ক্যাম্পাসের কাজী নজরুল হলে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে ২ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।
তামিমের সহপাঠী খলিলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ ও বেলাল হোসেন জানান, তামিমকে মারধরের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রশাসন যে তদন্ত কমিটি করেছে, সে কমিটি এখন পর্যন্ত তদন্তই শেষ করতে পারেনি। তামিমকে যারা মারধর করছে, তাদের কেউ বিদেশে চলে গেছে, অনেকে আত্মগোপনে। তারা আরও জানান, কুমিল্লায় গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটেগরির জুলাই যোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানের চেক দেবে সরকার। এর একটি তালিকাও প্রকাশ হয়েছে। চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তার ওই তালিকায় স্থান পাওয়া কুমিল্লার ৩৫৭ জনের মধ্যে নাম নেই তামিমের। 
তামিম বলেন, ‘যখন আহতদের এমআইএস কার্যক্রম চলছিল, তখন কয়েকবার কলেজে যোগাযোগ করেছিলাম। কলেজ থেকে বলছিল নেট নেই। আরেক দিন বলে আজ আমাদের লোক পরীক্ষার ডিউটিতে। এভাবে নানা বাহানা করেছে। কলেজের আশায় থেকে কোথাও যোগাযোগ করা হয়নি। শেষে আমার নাম তালিকাভুক্তই হলো না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেন, চিকিৎসার প্রয়োজন এমন তালিকা করে আহতদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। আহত তামিমের মেডিকেল সনদপত্র দিয়ে আবেদন করলে সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল বাশার ভূঁঞার ভাষ্য, তামিমের নাম তালিকায় না ওঠার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।
জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার বলেন, তামিমকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমআইএস সিস্টেমে আবেদন করতে হবে। তালিকা প্রকাশ হলেও যারা আবেদন করতে পারেনি, তাদের তথ্যপ্রমাণাদিসহ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত ম রধর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভোলায় ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, দুই আসামি গ্রেপ্তার

ভোলার তজুমদ্দিনে ধর্ষণের পর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার চাচড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন ফরাজি (২৮) ও মো. রাসেল (৩২)। আজ মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।

মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারীর (২৫) স্বামী মারা গেছেন, বাবার বাড়িতে থাকেন। ১০ জুন রাতে ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। তাঁর মা ও ভাই বাড়িতে ছিলেন না। রাতে টয়লেটে যাওয়ার জন্য তিনি বাইরে বের হন। তখন গিয়াস উদ্দিন ও রাসেল তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যান। গিয়াস উদ্দিন ধর্ষণ করেন ও রাসেল ভিডিও ধারণ করেন। পরে তাঁকে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেওয়া হয়। রাজি না হলে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর ভাই বাদী হয়ে গত রোববার তজুমদ্দিন থানায় মামলা করেন। মামলার বাদী বলেন, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে মানসম্মানের ভয়ে এত দিন কিছু বলেননি। কিন্তু রাস্তায় বের হলে আসামিরা তাঁকে আকার-ইঙ্গিতে নানা কিছু বলতেন। বোনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁদের অতিষ্ঠ করে তোলেন। তাঁকে গাঁজা-মাদক দিয়ে ধরিয়ে দেবেন বলেও হুমকি দেন।

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহব্বত খাঁ বলেন, মামলার করার পর গতকাল সকালে ওই নারীকে ভোলা সদর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেওয়া হন। পরে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ