দেশের বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতের অবস্থান তুলে ধরতে ২১ ও ২২ জুন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের সেনা প্রাঙ্গণ মিলনায়তনে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনের আয়োজন করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর। ষষ্ঠবারের মতো আয়োজিত দুই দিনের এ সম্মেলনে ৩০টি দেশি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিপিও প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে। থাকছে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ৯টি সেমিনার ও কর্মশালাও। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের বিপিও সামিটে গ্রাহকসেবা ও অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ৯টি সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজনের পাশাপাশি চাকরি মেলাও আয়োজন করা হবে বিপিও সামিটে। চাকরি মেলায় জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়া যাবে, যার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আউটসোর্সিং শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যা, সম্ভাবনা ও সফলতার গল্পও তুলে ধরা হবে। বিপিও সামিটে ১৫টি দেশের প্রযুক্তিবিদ ও বিনিয়োগকারীরা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘বিপিও খাত আমাদের তরুণসমাজের জন্য বিশাল কর্মসংস্থানের দ্বার উন্মোচন করছে। এ খাতকে কেন্দ্র করে দক্ষতা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার অপার সুযোগ রয়েছে। বিপিও সামিটের মাধ্যমে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বিদেশি অনেক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তার সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন।’

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিন বলেন, বিপিও খাতে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উপযোগী বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে সচেতন করবে বিপিও সামিট।

বাক্কোর সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম বলেন, বাক্কোর চার শতাধিক সদস্য প্রতিষ্ঠান ৮৫ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। এ খাতে প্রতিবছর আয়ের পরিমাণ প্রায় ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার। এ বছরের মধ্যে নতুন কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি ১০০ কোটি মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে বাক্কো।

বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবা রপ্তানির মাধ্যমে দেশের রপ্তানি আয়কে ত্বরান্বিত করতে ফ্রিল্যান্সারদের অবদান অপরিসীম। সামিটে আয়োজিত সেমিনারের মাধ্যমে আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যাগুলো শুনব। সম্ভাব্য সমাধানগুলো নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করবে বাক্কো।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুনে ঢাকায় বিপিও সম্মেলন

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) স্ট্র্যাটেজিক অংশীজনে রাজধানীর সেনাপ্রাঙ্গণ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে দেশের বিপিও শিল্পের বহুল আলোচিত সম্মেলন বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫।

সামিটের এবারের প্রতিপাদ্য বিপিও ২.০: রেভ্যুলেশন টু ইনোভেশন, যা নতুন সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ রূপান্তরের প্রতিচ্ছবি। বৃহস্পতিবার (২২ মে) উদ্যোক্তারা সম্মেলনের সার্বিক দিক উপস্থাপন করেন।

আগামী ২১ ও ২২ জুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল আয়োজনের অংশীজন হয়ে কাজ হয়ে কাজ করবে।

বাক্কো কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুসনাদ-ই-আহমদ বিগত বিপিও সামিটের কার্যক্রম ও প্রাপ্তীর বিষয়ে অবহিত করেন। সামিটের সম্ভাব্য কার্যক্রম ও পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বলেন, সামিটে ৩০টি দেশি-বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তি/বিপিও প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও পরিষেবা প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করবেন। এবারের সামিট হবে গ্রাহকসেবা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক আন্তর্জাতিক মিলনমেলা।

উদ্যোক্তারা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ৯টি সেমিনার ও কর্মশালার পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে আইটিইএস ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিদেশি খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞরা অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন, যা সামিটকে বিশ্বমানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত করবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাত আমাদের অর্থনীতির জন্য অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। বিপিও খাত আমাদের তরুণ সমাজের জন্য সুবিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে, যেখানে দক্ষতা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার অপার সুযোগ রয়েছে।

সরকার ইতোমধ্যে আইটিইএস খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির টেকসই উন্নয়নের জন্য নীতিমালা, অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করছে। বিপিও সামিটে দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে। সামিটের মাধ্যমে আমরা শুধু নতুন প্রযুক্তি ও ধারণার সঙ্গে পরিচিত হব না, বরং দেশের তরুণরা কীভাবে বিপিও খাতে যুক্ত হতে পারবে সে বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা জানানো হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিন বলেন, দেশের তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প খাতে কয়েক ধরনের কাজের বিষয়ে সচেতন করতে হবে। কারিগরি ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। বিপিও সামিট এমন প্ল্যাটফর্ম যেখান থেকে তরুণরা অত্যাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে জানতে পারে। এ শিল্পে ক্যারিয়ার গঠনে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন পাবে। তরুণরা প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও উদ্যমের মাধ্যমে যে সাফল্য অর্জন করছে, যা দেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত করছে।

বাক্কোর সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম বলেন, চার শতাধিক সদস্য নিয়ে বাক্কো ইতোমধ্যে ৮৫ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রতি বছর ৮৫ কোটি মার্কিন ডলারের আয় অর্জন করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাক্কো এক লাখ টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টির সঙ্গে শতকোটি মার্কিন ডলার বার্ষিক আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছে। তাই এবারের বিপিও সামিট বাক্কোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও পরিষেবা রপ্তানির মাধ্যমে দেশের রপ্তানি আয়কে ত্বরান্বিত করতে ফ্রিল্যান্সারদের অবদান অপরিসীম। সামিটে আয়োজিত সেমিনারের মাধ্যমে আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সব ধরনের সমস্যা শুনবো এবং সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করবে বাক্কো। আউটসোর্সিং শিল্পের একক সংগঠন হিসেবে বাক্কো ফ্রিল্যান্সার ফোরাম এখন থেকে ফ্রিল্যান্সার উন্নয়নে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে সচেষ্ট: আইসিটি সচিব
  • জুনে ঢাকায় বিপিও সম্মেলন