শপথ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করিনি: ইশরাক হোসেন
Published: 25th, May 2025 GMT
শপথের চেয়ে হাইকোর্টে এখনও রিট করেননি বলে জানিয়েছেন ইশরাক হোসেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে হওয়া সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।
আজ রোববার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘যেহেতু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক সিটি কর্পোরেশন আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শপথ পড়ানোর কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি তাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি। এখন পর্যন্ত রিট পিটিশন দায়ের অথবা চূড়ান্ত কোনো কিছু হয়নি।’
প্রসঙ্গত, রোবরার বিভিন্ন গণমাধ্যমে শপথ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন ইশরাক হোসেন মর্মে সংবাদ প্রকাশিত করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বিবৃতি পাঠান বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এনস স ইশর ক হ স ন ইশর ক হ স ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভূগর্ভের পানি তুলতে আরও ৭৫ পাম্প বসাবে ওয়াসা
খুলনায় গত মার্চ থেকে হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠছে না। কিছু এলাকায় গভীর উৎপাদক নলকূপেও (মাটির নিচে বসানো পাম্প) পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। খুলনা ওয়াসার নিজস্ব পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরে ভূগর্ভের পানির স্তর ১ দশমিক ৯৮ মিটার থেকে ৪ দশমিক শূন্য ৪ মিটার পর্যন্ত নিচে নেমেছে। যার কারণে শুষ্ক মৌসুমে ওয়াসার নিজস্ব উৎপাদক নলকূপেও পানি উঠছে কম।
এমন সংকটের মধ্যে নতুন করে আরও ৭৫টি গভীর উৎপাদক নলকূপ বসাতে যাচ্ছে খুলনা ওয়াসা। এসব নলকূপ দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে প্রতিদিন ৫ কোটি লিটার এবং অন্য সময় প্রতিদিন ৫০ লাখ থেকে আড়াই কোটি লিটার করে পানি তোলা হবে। পাম্প বসানোর জন্য গত ২৭ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, যথেচ্ছভাবে ভূগর্ভের পানি তোলায় স্তর প্রতিবছর নিচে নামছে। ওয়াসার এই উদ্যোগে বিপদ আরও বাড়বে।
ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, ১৫ লাখ মানুষের খুলনা নগরীতে প্রতিদিন পানির চাহিদা ২৪ কোটি লিটার। মে মাসের হিসাব অনুযায়ী, গ্রাহককে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৮ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। এর মধ্যে মধুমতী নদী থেকে পানি এনে পরিশোধন করে সরবরাহ করা হয় প্রায় ৬ কোটি লিটার। এ ছাড়া ৩৮টি পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা হয় আড়াই কোটি লিটার। বাকি পানি নগরবাসী ব্যক্তিগতভাবে বসানো উৎপাদক নলকূপ (পাম্প) থেকে উত্তোলন করেন।
প্রতিবছর গ্রীষ্ম মৌসুমে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানির স্তর পরিমাপ করে ওয়াসা। গত ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে কিছু কিছু এলাকায় পানির স্তর ১ দশমিক ৯৮ মিটার থেকে ৪ দশমিক শূন্য ৪ মিটার (১৩ দশমিক ২৫ ফুট) পর্যন্ত নিচে নেমেছে। নগরীর ৯, ১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ২১, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে স্তর নিচে নেমেছে বেশি।
পানির স্তর পরিমাপ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত পানির স্তর নিচে নেমে যায়। প্রতিবছর এই হার বাড়ছে।
ওয়াসায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীতে ৭৬ হাজার ৬২৮টি ভবনের মধ্যে ওয়াসার গ্রাহক রয়েছে ৪৩ হাজার ১৮৫টিতে। নগরীর সম্প্রসারিত এলাকা এবং বাদ পড়া ভবনে পানির সংযোগ পৌঁছাতে পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২ নামে আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ওয়াসা। এই প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ৭৫টি উৎপাদক নলকূপ বসানো হবে।
ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী ও পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২)-এর ফোকাল পারসন মো. কামাল হোসেন বলেন, জাতীয় পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা অনুযায়ী খুলনার ভূগর্ভে প্রতিদিন উত্তোলনযোগ্য পানি রয়েছে ১৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার। এর মধ্যে ওয়াসা ৭৫ শতাংশ পানি তুলতে পারবে। অর্থাৎ প্রতিদিন ১০ কোটি লিটার পানি তোলার সুযোগ রয়েছে। এপ্রিল-মে মাসে মধুমতী নদীতে লবণাক্ততা বেশি থাকায় পানি কম সরবরাহ করা হয়। তখন নগরীতে সরবরাহের জন্য দিনে ৫ কোটি লিটার পানি তোলা হবে। বছরের বাকি সময় দিনে ৫০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ আড়াই কোটি লিটার পানি তোলা হবে। এতে ভূগর্ভের ওপর প্রভাব পড়বে না।
খুলনার ভূগর্ভের পানি ও পরিবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে দক্ষিণাঞ্চলের পরিবেশ, প্রতিবেশ, পানি ও মাটির গুনাগুন দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। ভূগর্ভের যে অ্যাকুইফার (ভূগর্ভের শিলাস্তর) থেকে মিষ্টি পানি তোলা হচ্ছে, তা দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। ওই পানি রিচার্জ হতে ৩৫ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। তিনি বলেন, ভূগর্ভের মিঠা পানির স্তর যদি শেষ হয়ে যায়, তখন তা পূরণ করবে নোনাপানি।