বেপরোয়া চালাচ্ছিলেন চালক, বাস উল্টে বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা
Published: 25th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের দোহাজারী সদর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস উল্টে গেছে। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের অভিযোগ, চালক বেপরোয়াভাবে চালানোর কারণে বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ল।
বিকেল চারটায় গিয়ে দেখা যায়, বাসটি দুমড়েমুচড়ে সড়কের এক পাশে পড়ে আছে। আহতদের মধ্যে অন্তত সাতজন গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।
বাসের যাত্রী আবুল হাসান প্রথম আলোকে জানান, বাসটি কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। তিনিসহ বাসে ৪০ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে অন্তত ৮ জন নারী ও ৪টি শিশু। সবাই কমবেশি আহত হয়েছেন। এক নারী দুর্ঘটনার সময়ই জ্ঞান হারান। আহতদের মধ্যে অন্তত তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে গেছেন স্থানীয় লোকজন।
বাসের আরেক যাত্রী মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এটি হানিফ পরিবহনের বাস। দুপুর ১২টায় কক্সবাজার থেকে এটি ছেড়ে আসে। চালক অত্যন্ত বেপরোয়াভাবে বাস চালাচ্ছিলেন। দোহাজারী সদর এলাকায় ঢোকার পর সড়কে তেমন যানবাহন ছিল না। চালক আরও দ্রুতগতিতে চালাতে থাকেন। একপর্যায়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি উল্টে যায়। সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটিতে গিয়ে জোরে ধাক্কা লাগে। তাঁর সঙ্গে থাকা দুজনের হাতে প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। তরিকুল জানান, দুর্ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে গেছেন।
ঘটনাস্থলে হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।