শাপলার গণহত্যার সমর্থক ‘শাহবাগীদের’ বিচার দাবি করেছে হেফাজতে ইসলাম। আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসলামবিদ্বেষী ফ্যাসিস্ট শাহবাগীদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে জুলাইয়ের ছাত্র-জনতাকে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ইন্ডিয়ার মদদে শাহবাগে ইসলামবিদ্বেষী গণশত্রুরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ন্যায়বিচার ধ্বংস করে ফ্যাসিবাদ কায়েমে একাট্টা হয়েছিল। সেই শাহবাগ ঘিরে আধিপত্যবাদী ইন্ডিয়ার আগ্রাসী চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেয় হেফাজতে ইসলাম। এর চরম মূল্য হিসেবে হেফাজতের ৫ মে শাপলার গণজমায়েতকে রাতের আঁধারে নির্মম গণহত্যার শিকার হতে হয়। শাপলা চত্বরে তাহাজ্জুদরত রাসূলপ্রেমিক নিরীহ তৌহিদি জনতার ওপর সেই রাষ্ট্রীয় হত্যালীলায় সমর্থন ও উস্কানি দিয়েছিল একদল ফ্যাসিস্ট শাহবাগী বাম ও উগ্র সেক্যুলার গোষ্ঠী। ইন্ডিয়ার ক্রীড়নক ও শাপলার গণহত্যার সমর্থক সেই শাহবাগীদেরও আজ বিচার করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শাপলা চত্বরের প্রতিরোধ চেতনায় অনুপ্রাণিত তৌহিদি জনতা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেছিল। ৮৪ জনেরও অধিক মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক শহীদ হন। সেই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনাকে উৎখাত করার মধ্য দিয়ে আপামর ছাত্র-জনতা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করেছে। আজকে জুলাইয়ের সেই ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা ও ঐক্য ধরে রেখে ফ্যাসিবাদের চিহ্নিত দোসর ইসলামবিদ্বেষী বাম ও সেক্যুলারদের আস্ফালন ব্যর্থ করে দিতে হবে।’

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা দেশের ইসলামপন্থী ও আলেম নেতৃবৃন্দকে ‘মৌলবাদী’ বলে গত দেড় দশকের পুরনো ভারতীয় ও আওয়ামী বয়ানে সুর মিলিয়ে কটাক্ষ করেছেন, যা উদ্বেগজনক। আওয়ামী ও ভারতীয় বয়ানে কথা বললে দেশবাসীর কাছে প্রত্যাখ্যাত হবেন। সুতরাং এসব আওয়ামী ফ্যাসিবাদী ভাষা ব্যবহার থেকে তাদের বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’

মাওলানা আজিজুল হক বলেন, ‘ইসলামবিদ্বেষী ফ্যাসিস্ট শাহবাগীরা ন্যায়বিচারের আজন্ম শত্রু। এদের মন-মানস বিষাক্ত। এরা প্রগতিশীলতার ভেকধারী সুযোগসন্ধানী। পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দেশে যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে সিদ্ধহস্ত। এদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে জুলাইর ছাত্র-জনতাকে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই। এছাড়া সচিবালয়ের অস্থিরতা বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে অতিসত্বর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান করছি।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ হব গ গণহত য আওয় ম ল গ ইসল মব দ ব ষ শ হব গ দ র গণহত য র শ পল র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে 
  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • রূপগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ