অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে ‘গুরুতর প্রশ্নের’ কথা বললেন মির্জা ফখরুল
Published: 28th, May 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার ও আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা একটা রোডম্যাপ (পথনকশা) চেয়েছিলাম। ১০ মাস কেটে গেছে। আপনারা একটা রোডম্যাপ ছাড়া আর সবকিছু নিয়েই কথা বলেছেন। এই এড়িয়ে যাওয়াটা অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে গুরুতর প্রশ্নের জন্ম দেয়।’
আজ বুধবার ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির তিন সংগঠন—ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার’ সমাবেশে জনতার ঢল নেমেছিল। রাত পৌনে আটটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই কর্মসূচির একটি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে এসব কথা লিখেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ইংরেজি ভাষায় লেখা পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রথম দিন থেকে আমরা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা আমরা শুধু সমর্থনই করিনি, তাদের সক্রিয়ভাবে সহযোগিতাও করেছি। আমরা সংস্কারবিষয়ক প্রতিটি বৈঠকে অংশ নিয়েছি, আমাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছি এবং যেখানেই আমরা দ্বিমত পোষণ করেছি, তার পক্ষে স্পষ্ট যুক্তি উপস্থাপন করেছি। আমরা সব সময়ই জোর দিয়ে বলেছি যে সংস্কার একটি চলমানপ্রক্রিয়া—কোনো দেশেই সংস্কারের নামে সবকিছু থেমে যায় না এবং কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই জনগণের সংসদ গঠনের জন্য নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়া সংস্কারের জন্য থেমে থাকে না।
মির্জা ফখরুল আরও লিখেছেন, আমরা যেন মনে রাখি, এমন একটি শাসনব্যবস্থা থেকে আমরা উঠে এসেছি, যা শুধু কর্তৃত্ববাদীই ছিল না, এটা ছিল একটা একনায়কতন্ত্র। এখন বাংলাদেশের জনগণ একটি নতুন সংসদের জন্য প্রস্তুত, যেটি তাঁদের দ্বারা নির্বাচিত এবং তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করে। এমন একটি সংসদ, যেখানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জাতির পক্ষে দেশের উন্নয়নের নীতি, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং মানবাধিকারের বিষয়ে কথা বলবেন। আমরা একটা রোডম্যাপ চেয়েছিলাম। ১০ মাস কেটে গেছে। আপনারা একটা রোডম্যাপ ছাড়া আর সবকিছু নিয়েই কথা বলেছেন। এই এড়িয়ে যাওয়াটা অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে গুরুতর প্রশ্নের জন্ম দেয়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে।
এর আগে আজ বিকেলে নয়াপল্টনের বিশাল সমাবেশে অন্তর্বর্তী সরকারের কড়া সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম ব এনপ র সরক র র বল ছ ন ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরন, মুক্তিপন দাবি : গ্রেপ্
বন্দরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া (৩৫)কে অপহরন পর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি ঘটনায় অপহরকারি চক্রের হোতা মেহেদী হাসান (৩০)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারি মেহেদী হাসান বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের শুভকরদী এলাকার আলমগীর মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃক অপহরনকারি মেহেদী হাসান ও এক নারীসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৫টায় মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখা থানার নিমতলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে থেকে অপহরনের পর বন্দর এলাকায় মুক্তিপন দাবি ঘটনাটি ঘটে।
মামলার তথ্যসূত্রে জানাগেছে, সুদূর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার ধানখালি এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহীন মিয়া পেশায় একজন ব্যবসায়ী। এ সুবাদে ১নং বিবাদী বন্দর থানার শুভকরদী এলাকার আলমগীর মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান ব্যবসায়ী শাহীন মোল্লার প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করত।
উক্ত কর্মচারি চাকুরি করা কালিন সময়ে বিভিন্ন অপকর্মের জন্য তাকে চাকুরীচুত করা হয়। কর্মচারি মেহেদী হাসান চাকুরি ছাড়ার পর থেকে মালিক ব্যবসায়ী শাহীন মিয়াকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি সাধনের জন্য পাঁয়তারা করে আসছিল।
এর ধারাবাহিকতায় ফতুল্লা থানার তল্লা এলাকার আলমগীর হোসেন মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (২৮) তার এর ইমু থেকে উল্লেখিত ব্যবসায়ীকে বন্ধুত্ব করার অনুরোধ করে। ব্যবসায়ী শাহীন বেশ কিছু দিন ২ নং বিবাদী সাথে ইমুতে কথা বলে।
পরবর্তিতে শাহীন মিয়া ব্যবসায়ী কাজের জন্য ঢাকা উদ্দেশ্য রওনা করিলে ২নং বিবাদী সুমাইয়া আক্তার ব্যবসায়ী শাহীন মিয়াকে দেখা করার জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদীখা থানার নিমতলা মেইনরোডস্থ ফুটওভার ব্রীজের নিচে আসতে বলে।
২নং বিবাদী কথা অনুযায়ী গত সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৫টায় ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া উল্লেখিত স্থানে এসে একটি অজ্ঞাত চায়ের দোকানে বসলে ওই সময় অপরহরনকারি চক্রের ৪ সদস্য সাঈদ, সিজান, রুবেল ও রনী একটি প্রাইভেটকার যোগে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী শাহীনকে অজ্ঞাত নামা গাড়ীযোগে অপহরন করে বন্দর থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের দেউলী চৌরাপাড়া বটতলা একটি অজ্ঞাত ক্লাবে আটক রেখে সকল বিবাদীগন শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে মানিব্যাগে রাখা নগদ ২৫ হাজার টাকা ও ১টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেওয়ার পরও ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে।
এ ছাড়াও বিবাদীদের দাবীকৃত টাকা না দিলে বিধানীগন ব্যবসায়ী শাহিনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়াসহ প্রাননাশের হুমকি প্রদান করে ০৫ টি ১০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখে। পরবর্তীতে উল্লেখিত বিবাদীরা ব্যবসায়ী শাহিনকে চোখে কালো কাপড় বেধে বন্দর রাত ১টায় বন্দর থানার শুভকরদীস্থ চাকুরিচ্যুত ১ নং বিবাদী মেহেদী হাসানের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে বিবাদীরা পুনরায় মারপিট করিয়া ভিডিও ধারন করে ব্যবসায়ী আত্মীয় স্বজনদের নিকট ভিডিও পাঠাইয়া মুক্তিপন দাবী করিতে থাকে।
বিবাদীরা ব্যবসায়ী শাহীনকে আটক রেখে গত বুধবার (২৮ মে) রাত ৩টায় বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি প্রদান করিয়া ফরাজীকান্দ্য মেইন রোডে দিয়ে যায়। পরে ফরাজীকান্দা মেইনরোডে টহল পুলিশের গাড়ী দেখিয়া থামানোর সংকেত দিলে টহল পুলিশ গাড়ী থামাইলে অপহৃত ব্যবসায়ী ঘটনার বিষয়ে থানা পুলিশকে জানাইলে থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করিয়া ব্যবসায়ী দেখানোমতে অপহরনকারি মেহেদী হাসানকে তাহার নিজ বসত বাড়ী হইতে আটক করিয়া জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে তাহার এবং পলাতক আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে এবং অজ্ঞাতনামা ০২/০৩ জন আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করিতে অস্বীকৃতি জানায়।