তারেক রহমান সব মামলায় খালাস পাওয়ায় ‘সন্তুষ্ট’ ইউট্যাব
Published: 28th, May 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সব মামলায় খালাস পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
বুধবার (২৮ মে) এক বিবৃতিতে এই অবস্থান তুলে ধরেছেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড.
বিবৃতিতে তারা বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী কার্ডিওলোজিস্ট ডা. জুবাইদা রহমান বুধবার (২৮ মে) আদালতে খালাস পেয়েছেন। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২৮ মে) এ রায় দেন।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, জিয়া পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শুধু তাই নয়, মামলা দায়েরের পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এমনকি এই মামলায় ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রায় দেন ঢাকা মহানগরের সিনিয়র বিশেষ জজ। রায়ে দুটি ধারায় তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড (৬ ও ৩ বছর, একসঙ্গে চলবে) এবং জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
অভয়নগরে ১৯ বাড়িঘরে লুটপাট-আগুন: পাঁচ দিন পর মামলা, আটক ৩
কুবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রায়ের আগে এই মামলায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অবৈধ শাসনামলের আদালত দুই মাসের ভেতর মাত্র ২১ দিনে ৪২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়। এমন কী রাতের বেলা মোমবাতি জ্বালিয়ে বেআইনিভাবে সাক্ষ্য নেওয়া হয়। প্রকৃতপক্ষে দুদকের দায়েরকৃত মামলাটি ছিল মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত; যা তারেক রহমানকে তার স্ত্রীকে খালাস দেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। মূলত ওই মামলায় সাজা স্থগিত করে গত বছরের ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছির, সাজা স্থগিত চেয়ে বিবাদীর করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে বিবাদীর বিরুদ্ধে করা মামলায় দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো। অতঃপর বিবাদী আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন, যা গত ১৩ মে মঞ্জুর করেন আদালত। বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন এবং জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানি নিয়ে ১৪ মে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য আবেদন গ্রহণ করেন এবং জামিন মঞ্জুর করেন। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে বুধবার রায় দিলেন হাইকোর্ট। এমনকি আদালত বলেছেন যে, তারেক রহমান ও অন্য বিবাদীর ক্ষেত্রে এই মামলায় পলিটিক্যাল পারসিকিউশন (রাজনৈতিক নিপীড়ন) এবং ম্যালিশাস প্রসিকিউশন করা হয়েছে। এজন্য বিবাদী পক্ষকে তাদের মর্যাদা এবং সুনাম ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকল মামলা থেকে আদালতের মাধ্যমে খালাস পাওয়ায় শিক্ষক সমাজ অত্যন্ত আনন্দিত এবং মহান আল্লাহর কাছে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। তাদের প্রত্যাশা, তিনি অতি শিগিগরই দেশে ফিরে এসে জনগণের সেবায় নিজেকে আবার সম্পৃক্ত করবেন।
ঢাকা/রাসেল/সৌরভ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ইউট য ব বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।