পুতিন যে দুই জায়গায় ট্রাম্পকে পাত্তা দেন না
Published: 29th, May 2025 GMT
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর তিন বছরের বেশি সময় পার হলেও এখনো অনেক কিছুই অনিশ্চিত রয়ে গেছে। এই রক্তের স্রোত কবে থামবে, কিংবা কী শর্তে সেটা বন্ধ হবে, তা কেউ বলতে পারেন না। তবে একটা বিষয়ে আমরা সবাই নিশ্চিত হতে পেরেছি। সেটা হলো, ডোনাল্ড ট্রাম্প, দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন বলে যে ঘোষণাটি দিয়েছিলেন, সেটিকে কেউই গুরুত্বের সঙ্গে নেননি। এটা এখন প্রমাণিত যে রাজনৈতিকভাবে এই সংকট মীমাংসায় ট্রাম্পের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ দিনে রাশিয়া ইউক্রেনে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এটি ছিল পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অন্যতম বড় একটা আক্রমণ। সংঘাতটি যে হঠাৎ করেই থেমে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, এই আক্রমণ তারই প্রতিফলন।
এর কারণ হলো, ভ্লাদিমির পুতিন এখনো লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন—এ চার প্রদেশ দখলে নেওয়ার লক্ষ্য অবিচল রয়েছেন। বর্তমানে লুহানস্কের প্রায় পুরোটা এবং বাকি তিনটির বড় অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে রাশিয়া।
আরও পড়ুনপুতিনের যে সাত সত্যি জানেন না ট্রাম্প২৩ এপ্রিল ২০২৫যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যেসব অস্ত্র দিয়েছে, তা অন্য সব মিত্রদেশ মিলিয়ে যতটুকু দিয়েছে, তার চেয়ে বেশি। যদিও মানবিক ও অন্যান্য সহায়তা মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে অন্য দেশগুলো মোট সহায়তায় এগিয়ে।
ট্রাম্পের ভুল হলো, তিনি নিজেকে অসাধারণ একজন চুক্তি নির্মাতা হিসেবে মনে করেন। পুতিনের সঙ্গে কথিত সখ্য এবং ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক প্রভাব—সব মিলিয়ে তিনি ভেবে নিয়েছিলেন, কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করবেনই। সম্ভবত তিনি ভেবে নিয়েছিলেন, এই চুক্তির বদৌলতে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কারও পেয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু গত কয়েক দিনে কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে যেভাবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, তাতে পরিষ্কার যে একবিন্দু ছাড়ও দিতে চান না পুতিন। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান। এ ঘটনায় ট্রাম্পের অবস্থান দুর্বল হলো।
এটাও হতে পারে যে পুতিনকে সব তথ্যই ভালোভাবে জাননো হয়েছে। কিন্তু তিনি এটা বিশ্বাস করেন যে যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক শক্তির আধিপত্য শেষ পর্যন্ত বিজয় এনে দেবে। তিনি হয়তো ধরেই নিয়েছেন, পশ্চিমারা এ যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। ট্রাম্প চুক্তি করার প্রচেষ্টা থেকে সরে যাবেন, এমনকি ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়াও বন্ধ করে দেবেন।এখন ট্রাম্প পুতিনের ওপর ক্ষুব্ধ। ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুতিনকে নিয়ে লিখেছেন, ‘পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছেন’ এবং ‘অপ্রযোজনীয়ভাবে অনেক মানুষ হত্যা করছে’। ট্রাম্পকে যখন জিজ্ঞাসা করা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার চাপ বাড়াতে চান কি না, তিনি উত্তর দিয়েছেন, ‘অবশ্যই’। কিন্তু এবারই প্রথম পুতিনকে সতর্ক করলেন না ট্রাম্প, কিংবা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিলেন না। গত মাসের শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘ভ্লাদিমির থামো!’
ট্রাম্প–পুতিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি অনিবার্য প্রবণতা। পুতিন এখনো তাঁর ঘোষিত লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্পের তোষামোদি ও ভয় দেখানো—দুটিকেই তিনি সমানভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এ কারণেই পুতিন ট্রাম্পের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কোনো আগ্রহ দেখাননি। অথচ জেলেনস্কি সঙ্গে সঙ্গে সেটি গ্রহণ করেছিলেন। এপ্রিলের শেষে ট্রাম্প রাশিয়াকে হুমকি দেন যে যদি তারা ‘বেসামরিক এলাকা, শহর ও জনপদে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া বন্ধ না করে’ তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। সেই হুমকিতেও পুতিন বিচলিত হননি। এই সতর্কবার্তা পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ট্রাম্প–জেলেনস্কির সাক্ষাতের পর আসে। এটি ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টকে কিছুটা আশাবাদী করলেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এতে বিচলিত হননি।
আরও পড়ুনট্রাম্পের যে বিশ্বাসঘাতকতায় পুতিন এখন আরও সাহসী১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫যা–ই হোক, ট্রাম্প শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়া এবং কথার বাইরে গিয়ে এবার যদি সত্যি সত্যিই রাশিয়ার ওপর আরও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপও করেন, তারপরও যুদ্ধ থামবে না। এর পেছনে কমপক্ষে দুটি কারণ আছে।
প্রথমত, এই যুদ্ধ পুতিন ডেকে এনেছেন। নিজের লক্ষ্য পূরণে তিনি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে বাজি ধরেছেন। যত মূল্য চুকাতে হোক না কেন, তিনি সেটা করবেনই। এই সংঘাতে কতজন রাশিয়ান সৈনিক হতাহত হয়েছেন, সেই হিসাব নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে এ সংখ্যা ৯ লাখের কাছাকাছি। এর মধ্যে নিহতের সংখ্যা এক লাখের বেশি।
এই যুদ্ধ রাশিয়ার অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস না করলেও বড় চাপ তৈরি করেছে। ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সামরিক ব্যয় বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। ২০২৪ সালে দেখা যাচ্ছে, মোট সরকারি ব্যয়ের ৩৫ শতাংশই সামরিক ব্যয়। চলতি বছর তা আরও বেড়ে ৩৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ, যার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার ২১ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে।
পুতিনের ক্ষমতা এখনই হুমকির মুখে নেই। তবে রাশিয়ার জনগণ এত বড় ত্যাগ স্বীকার করার পর তিনি যদি অর্ধেক সাফল্য নিয়েই থেমে যান, তাহলে রাজনৈতিকভাবে তিনি দুর্বল হয়ে পড়বেন। ফলে এত রক্তপাত ও বিপুল ব্যয়ের পর পুতিন সহজে সমঝোতায় যাবেন—এমনটা আশা করা বৃথা।
দ্বিতীয়ত, পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের বলেছেন যে পুতিন মনে করেন যে রাশিয়ান বাহিনী জিততে চলেছে। পুতিন সম্ভবত জানেন না, রাশিয়ান সেনাদের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির চিত্রটা। এই যুদ্ধে আনুমানিক ১৪ হাজার ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও গোলাবারুদ নিক্ষেপের ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর কারণ হলো, জেনারেলরা হয়তো এই খারাপ সংবাদ তাঁদের নেতাকে দিতে ভয় পান।
আবার এটাও হতে পারে যে পুতিনকে সব তথ্যই ভালোভাবে জাননো হয়েছে। কিন্তু তিনি এটা বিশ্বাস করেন যে যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক শক্তির আধিপত্য শেষ পর্যন্ত বিজয় এনে দেবে। তিনি হয়তো ধরেই নিয়েছেন, পশ্চিমারা এ যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। ট্রাম্প চুক্তি করার প্রচেষ্টা থেকে সরে যাবেন, এমনকি ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়াও বন্ধ করে দেবেন।
যা–ই হোক না কেন, তাতে কিছু আসে যায় না। এ যুদ্ধ যদি আগামী ফেব্রুয়ারিত পঞ্চম বছরে পা দেয় এবং সেটা থামার কোনো লক্ষণ তখনও যদি দেখা না যায়, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
রজন মেনন নিউইয়র্ক সিটি কলেজে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইমেরিটাস অধ্যাপক
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন লক ষ য র ওপর ন এখন
এছাড়াও পড়ুন:
সকালের সবচেয়ে বরকতময় সময় ব্যবহারের ৭ কৌশল
সকাল মানুষের জীবনের একটি মূল্যবান সময়, যা দিনের বাকি অংশের জন্য সুর নির্ধারণ করে। সকাল আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার, শরীর ও মনকে প্রস্তুত করার এবং দিনের লক্ষ্য অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ।
সামাজিক মাধ্যম, কাজের চাপ এবং পারিবারিক দায়িত্ব আমাদের অনেক সময় কেড়ে নেয়, তাই সকালকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে আমরা জীবনকে আরও উৎপাদনশীল করতে পারি।
১. আল্লাহর সঙ্গে দিনের শুরুফজরের নামাজের ১৫-২০ মিনিট আগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং দোয়া করা জীবনকে আমূল বদলে দিতে পারে। এই সময়টি শান্ত ও পবিত্র, যখন আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না।
কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতে, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে, তখন আমাদের রব নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?”’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫)।
তাহাজ্জুদের সময় আপনার হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করুন। এতে মানসিক শান্তি বাড়বে এবং দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যদি আপনি নতুন হন, সপ্তাহে এক দিন থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত করুন।
ফজরের আগে অবশিষ্ট সময়ে কোরআন তিলাওয়াত করুন, কারণ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ভোরে কোরআন পড়া (ফেরেশতাদের) দ্বারা প্রত্যক্ষ করা হয়।’ (সুরা ইসরা. আয়াত: ৭৮)।
আরও পড়ুনইশরাকের নামাজ: সকালের আলোয় আল্লাহর নৈকট্য ০৪ জুলাই ২০২৫২. ফজরের পর ঘুম থেকে দূরে থাকুনফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে পড়া অনেকের অভ্যাস, কিন্তু এটি সকালের বরকতময় সময় নষ্ট করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১)।
এই সময়ে বড় বড় কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়, কারণ এতে আল্লাহর বিশেষ বরকত রয়েছে।
আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন। মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১ফজরের পর ঘুমের প্রলোভন এড়াতে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এই সময়ে পড়াশোনা, কোরআন মুখস্থ করা বা কোনো ব্যক্তিগত প্রকল্পে কাজ করা যায়। এটি দিনের বাকি সময়ে অবসরের জন্য সময় বাঁচায় এবং আগামী দিনে আরও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করে।
বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।
৩. করণীয় তালিকা তৈরি করুনএকটি করণীয় তালিকা তৈরি করা দিনের পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করে। আমরা প্রায়ই মনে মনে কাজের পরিকল্পনা করি, কিন্তু মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সীমিত। একটি ডায়েরি বা ফোনের নোট অ্যাপে কাজের তালিকা লিখে রাখলে সময় ও শক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। সম্পন্ন হওয়া কাজগুলো তালিকা থেকে কেটে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ আছে।
এই তালিকায় দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন কোরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ মুখস্থ করা বা একটি নতুন দক্ষতা শেখার পরিকল্পনা। এটি আপনাকে দিনের শুরুতে ফোকাসড রাখবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।
আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।৪. সকালে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুনসকালের মূল্যবান সময় সামাজিক মাধ্যমে বা ফোনে অযথা স্ক্রল করে নষ্ট করা উচিত নয়। অনেকে সকালে ফোন হাতে নিয়ে ‘শুধু একটু দেখে নিই’ ভেবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হারিয়ে ফেলেন। এটি মানসিক চাপ বাড়ায় এবং সকালের শান্তি নষ্ট করে।
নিয়ম করুন, সকালের নাশতা বা কিছু কাজ শুরু না করা পর্যন্ত ফোন বা সামাজিক মাধ্যমে যাবেন না। সকালে খবর পড়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে। যখন ফোন ব্যবহার করবেন, তখন ইতিবাচক ও প্রেরণাদায়ক কনটেন্ট দেখুন, যা আপনার দিনকে উজ্জ্বল করবে।
৫. শরীরচর্চা করুনশরীরচর্চার উপকারিতা আমরা সবাই জানি। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন অনেকে বাড়ি থেকে কাজ করছেন, শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। বাড়িতে কাজ করার ফলে ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা, পেশির সমস্যা বাড়ছে।
সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।
ইউটিউবে হাজারো ধরনের ব্যায়ামের ভিডিও পাওয়া যায়, যা বাড়িতে সামান্য জায়গায় করা যায়। যদি বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে সকালে ৩০ মিনিট হাঁটুন। লক্ষ্য হলো শরীরকে সচল রাখা এবং শক্তি বৃদ্ধি করা।
আরও পড়ুনসুস্থ জীবন যাপনে মহানবী (সা.)-এর ৯ অভ্যাস২৪ জুলাই ২০২৫সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।৬. পুষ্টিকর নাশতা গ্রহণব্যস্ততার কারণে অনেকে সকালের নাশতা বাদ দেন, কিন্তু গবেষণা বলছে, পুষ্টিকর নাশতা দিনভর মনোযোগ বাড়ায়, অপ্রয়োজনীয় চিনির লোভ কমায় এবং শক্তি জোগায়। নাশতায় উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন ওটস বা মাল্টিগ্রেইন রুটি, স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অ্যাভোকাডো বা বাদাম, গ্রিক ইয়োগার্ট এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।
সময় কম থাকলে একটি স্মুদি তৈরি করুন—পালংশাক, আপেল এবং হিমায়িত কলা ব্লেন্ড করে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর নাশতা তৈরি করা যায়। এটি দিনের শুরুতে সবুজ শাকসবজি গ্রহণের একটি সহজ উপায়।
৭. নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনবাড়ি থেকে কাজ করার সময় অনেকে ক্যাজুয়াল পোশাকে থাকেন। বরং সকালে সুন্দর পোশাক পরুন, যা আপনার মেজাজ উজ্জ্বল করবে। একটু পছন্দের সুগন্ধি ব্যবহার করলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১নবীজি (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা শুধু বাহ্যিক নয়, বরং এটি আপনার মানসিক প্রস্তুতি ও দিনের জন্য উৎসাহ বাড়ায়।
সকাল আমাদের দিনের ভিত্তি। ইসলাম আমাদের শেখায় যে সকাল আল্লাহর বরকত নিয়ে আসে। তাহাজ্জুদ, ফজরের পর জাগ্রত থাকা, করণীয় তালিকা তৈরি, স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা, শরীরচর্চা, পুষ্টিকর নাশতা এবং নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন—এই সাতটি অভ্যাস আমাদের সকালকে উৎপাদনশীল করবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সূত্র: দ্য মুসলিম ভাইব ডট কম
আরও পড়ুনরহমতের দুয়ারে হাজিরা১৫ জুন ২০২৪