সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সন্ধ্যা ৭টার পর প্রবেশের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সচেতনতামূলক প্রচারণা কার্যক্রম চালাবে। 

পাশাপাশি উদ্যানের ভেতরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরাপত্তা প্রহরী বাড়ানো, উদ্যানকে সিসি ক্যামেরার আওতাধীন রাখা এবং ক্যাম্পাস-সংলগ্ন উদ্যানের গেটগুলো রাত ৮টার পর বন্ধ রাখার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত উপকমিটির আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। 

সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক) ড.

জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বজলুর রহমান, আনসার ও ভিডিপির প্রতিনিধি ফেরদৌস আহাম্মদ এবং শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নেওয়া অন্য সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে– কালীমন্দিরে প্রবেশের জন্য বিকল্প গেটের ব্যবস্থা করা, নির্দিষ্ট সময় পরপর অভিযান চালানো, উদ্যানের ভেতরে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ