অনিয়ম-দুর্নীতির প্রভাব পড়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আয়ে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটি সমন্বিতভাবে ৪০৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে। যদিও ২০২৩ সালে ব্যাংকটি ৩২৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। বড় অঙ্কের লোকসান করায় গত বছরের জন্য শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম)। ব্যাংকটির ঋণের ৭০ শতাংশই বিভিন্ন নামে নিয়ে গেছেন তিনি। সরকার বদলের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এস আলম পরিবারকে সরিয়ে স্বতন্ত্র পরিচালকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পর্ষদ বদলের পর গ্রুপটির ঋণের বড় অংশ খেলাপি হতে শুরু করে। কারণ, আগে খেলাপিযোগ্য অনেক ঋণকে কৌশলে নিয়মিত দেখানো হয়েছিল।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির আমানত ছিল ৪৩ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। আর ঋণ ছিল ৬০ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়। বর্তমানে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এ ছাড়া গত ডিসেম্বরে ব্যাংকটি ১৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা মূলধন–ঘাটতিতে পড়ে।

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঋণের বিপরীতে সুদ আয় না হলেও ব্যাংকটি ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ভুয়া মুনাফা করেছে। এর বিপরীতে সরকারকে কর দিয়েছে, অন্যদিকে শেয়ারধারীদের মুনাফাও দিয়েছে। এর ফলে ব্যাংকটির ক্ষত আরও গভীর হয়েছে। এখন ব্যাংকটি একদিকে ঋণের টাকা আদায় করতে পারছে না, অন্যদিকে আমানতকারীদের টাকা তোলার চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। আবার উচ্চ সুদে যেসব টাকা ধার করেছে, তার বিপরীতে চড়া সুদ দিতে হচ্ছে। এর ফলে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়ে গেছে। এতে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েছে ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংক নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে ছাড় না দিলে লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়ত।

তবে ব্যাংকটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে নতুন পর্ষদ যোগ দেওয়ার পর সাড়ে ৭ লাখ নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। এতে আমানত জমা হয়েছে ৩ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। আর এই সময়ে ঋণ আদায় হয়েছে ২ হাজার ২২৩ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে ২৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ আদায়ে মামলা করা হয়েছে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) আবু রেজা মো.

ইয়াহীয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঋণের বড় অংশ আদায় করা যাচ্ছে না। এ কারণে ব্যাংক পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি নতুন আমানত এনে ব্যাংকটির স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পর চ

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে শুরু হচ্ছে। আবেদন করা যাবে আগামী ১৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত। এ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে ১৩ নভেম্বর থেকে। গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন যেসব শিক্ষার্থী

২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি বা সমমান এবং ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ভর্তির জন্য। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি (ভোকেশনাল), এইচএসসি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি) ও ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। এ-লেভেল, ও-লেভেল ও বিদেশি সনদধারীদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নিয়মে সরাসরি ডিন অফিসে বা ই–মেইলে আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
যেসব শিক্ষার্থী গত দুই শিক্ষাবর্ষে (২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪) স্নাতক (সম্মান), স্নাতক (সম্মান) প্রফেশনাল বা স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেয়েছেন, তাঁরা এই শিক্ষাবর্ষে নতুন করে ভর্তি হতে পারবেন না। তবে পূর্ববর্তী ভর্তি বাতিল করে নতুন শিক্ষাবর্ষে আবেদন করতে পারবেন। একই সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থী দ্বৈত ভর্তি হলে তাঁর উভয় ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবে।

আবেদন ফি ৪০০ টাকা

ভর্তি ফি হিসেবে প্রাথমিক আবেদন ফি ৪০০ টাকা, যার মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ ২৫০ টাকা এবং কলেজের অংশ ১৫০ টাকা। ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন ফি ৭২০ টাকা জমা দিতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করে অনলাইনে নিশ্চয়ন করবে। তবে নিশ্চয়ন ছাড়া কোনো আবেদনকারীকে মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। আবেদন ফি ১৯ অক্টোবরের মধ্য জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ বিমানে ইন্টার্নশিপ, দৈনিক হাজিরায় সম্মানী ৬০০ টাকা৪ ঘণ্টা আগে

আবেদনকারীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিটি কলেজের জন্য আলাদাভাবে কোর্সভিত্তিক মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হবে। একই মেধা নম্বরপ্রাপ্ত হলে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ (৪০: ৬০ অনুপাতে) এবং প্রয়োজনে মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। এরপরও সমতা থাকলে বয়স কম শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ভর্তি কার্যক্রম ধাপে ধাপে প্রথম মেধাতালিকা, দ্বিতীয় মেধাতালিকা, কোটার মেধাতালিকা এবং প্রথম ও দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে এবারও তৃতীয় রিলিজ স্লিপে আবেদন করার সুযোগ থাকবে না।

বিস্তারিত দেখুন এখানে

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, সুযোগ পাবেন ৪৮ জেলার যুবরা১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালচে হয়ে যাচ্ছে মোগল আমলের লালকেল্লা
  • জিল হোসেন মারা গেছেন, আদালতে তাঁর লড়াই শেষ হবে কবে
  • গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • কীভাবে নেট রান রেট হিসাব করা হয়, সুপার ফোর উঠতে বাংলাদেশের হিসাব কী
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে