৪০৫ কোটি টাকা লোকসান ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের
Published: 30th, May 2025 GMT
অনিয়ম-দুর্নীতির প্রভাব পড়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আয়ে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটি সমন্বিতভাবে ৪০৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে। যদিও ২০২৩ সালে ব্যাংকটি ৩২৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। বড় অঙ্কের লোকসান করায় গত বছরের জন্য শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম)। ব্যাংকটির ঋণের ৭০ শতাংশই বিভিন্ন নামে নিয়ে গেছেন তিনি। সরকার বদলের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এস আলম পরিবারকে সরিয়ে স্বতন্ত্র পরিচালকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পর্ষদ বদলের পর গ্রুপটির ঋণের বড় অংশ খেলাপি হতে শুরু করে। কারণ, আগে খেলাপিযোগ্য অনেক ঋণকে কৌশলে নিয়মিত দেখানো হয়েছিল।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির আমানত ছিল ৪৩ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। আর ঋণ ছিল ৬০ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়। বর্তমানে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এ ছাড়া গত ডিসেম্বরে ব্যাংকটি ১৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা মূলধন–ঘাটতিতে পড়ে।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঋণের বিপরীতে সুদ আয় না হলেও ব্যাংকটি ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ভুয়া মুনাফা করেছে। এর বিপরীতে সরকারকে কর দিয়েছে, অন্যদিকে শেয়ারধারীদের মুনাফাও দিয়েছে। এর ফলে ব্যাংকটির ক্ষত আরও গভীর হয়েছে। এখন ব্যাংকটি একদিকে ঋণের টাকা আদায় করতে পারছে না, অন্যদিকে আমানতকারীদের টাকা তোলার চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। আবার উচ্চ সুদে যেসব টাকা ধার করেছে, তার বিপরীতে চড়া সুদ দিতে হচ্ছে। এর ফলে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়ে গেছে। এতে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েছে ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংক নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে ছাড় না দিলে লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়ত।
তবে ব্যাংকটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে নতুন পর্ষদ যোগ দেওয়ার পর সাড়ে ৭ লাখ নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। এতে আমানত জমা হয়েছে ৩ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। আর এই সময়ে ঋণ আদায় হয়েছে ২ হাজার ২২৩ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে ২৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ আদায়ে মামলা করা হয়েছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) আবু রেজা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর চ
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’