সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেদায়েতুল আলম রেজা নাশকতার মামলায় জামিন পেলেও তাঁকে আবারও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। 

উচ্চ আদালতের আদেশে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার আদালত থেকে শুক্রবার বিকেলে জামিন পান হেদায়েতুল আলম। এর পর জেলগেট থেকে বের হওয়ার পর আবারও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে সদর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কোন মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে, সন্ধ্যা পর্যন্ত তা জানা যায়নি। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক এ এস এম কামরুল হাসান জানান, হেদায়েতুল আলম জামিন পেয়ে জেলগেট থেকে বের হওয়ার পর আবারও তাঁকে পুলিশ ধরেছে বলে শুনেছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়নি। 

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পুলিশ সুপার মো.

ফারুক হোসেন ও সদর থানার ওসি মো. মোখলেসুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল ও খুদেবার্তা পাঠানো হলে সাড়া দেননি তারা। 

হেদায়েতুল আলমকে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সলঙ্গা থানা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার অভিযোগে গত ২ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত বছর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। ঈদুল ফিতরের পরদিন সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে এলে ভাইয়ের বাড়ি থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সদর থানার বর্তমান ওসি মোখলেসুর রহমান যখন সলঙ্গা থানার ওসির দায়িত্ব ছিলেন, সেই সময় ধরা পড়েন হেদায়েতুল আলম।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ হ দ য় ত ল আলম গ র প ত র কর সলঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

পবিত্র ঈদুল আজহার দিন চারটি কর্তব্য

প্রতিবছর জিলহজ মাসের দশম দিনে মুসলিম বিশ্বে উদ্‌যাপিত হয় ইসলামের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এই দিন কেবল আনন্দের নয়; বরং কোরবানির ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির অপূর্ব মিলনবিন্দু। একই সময় আসে হজের মৌসুম, লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।

নামের তাৎপর্য

বিভিন্ন সংস্কৃতিতে পবিত্র ঈদুল আজহার ভিন্ন ভিন্ন নাম। মাগরিব (উত্তর আফ্রিকা) অঞ্চলে এটি ‘ঈদুল কাবির’ বা বড় উৎসব নামে পরিচিত। সিরিয়া ও ইরাকের কিছু এলাকায় এটি ‘ঈদুল হাজ্জাজ’ ও তুরস্ক, ইরানসহ এশিয়ার কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এটি ‘ঈদুল কোরবান’ নামে পরিচিত। আরবি শব্দ ‘ঈদ’ অর্থ যা নিয়মিত ফিরে আসে। ইসলামে বছরে মাত্র দুটি ঈদের বিধান দেওয়া হয়েছে—পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। এই দুটি উৎসব ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রোজা ও হজের সঙ্গে সংযুক্ত।

কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে নিজে খাওয়া, আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ ও গরিব–দুঃখীদের দান করা সুন্নাহ।

এই অতুলনীয় ত্যাগ ও আনুগত্যের প্রতিদান হিসেবে আল্লাহ একটি দুম্বা পাঠান, ইসমাইল (আ.)–এর পরিবর্তে যা ইবরাহিম (আ.) কোরবানি করেন।

আরও পড়ুনযে আমলে রিজিক বাড়ে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে কর্তব্য

পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রয়েছে তাকবির, ঈদের নামাজ, কোরবানি ও আনন্দ ভাগাভাগি।

১. তাকবির: আরাফার দিন ফজর থেকে তাশরিকের শেষ দিন (জিলহজের ১৩তম দিন) পর্যন্ত ঘরে–বাইরে, মসজিদে ও বাজারে তাকবির ধ্বনিত হয়। সবচেয়ে প্রচলিত তাকবির হলো, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’। এটি আল্লাহর মহিমা ঘোষণা ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম।

কোরবানির সময় ঈদের নামাজের পর থেকে তাশরিকের শেষ দিন পর্যন্ত। একটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে কোরবানি করেছে, সে যেন আরেকটি কোরবানি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯৬০)

২. ঈদের নামাজ: ঈদের নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি দুই রাকাত, যেখানে প্রথম রাকাতে তিনটি ও দ্বিতীয় রাকাতে তিনটি অতিরিক্ত তাকবির দিতে হয়। এ জন্য আজান বা ইকামতের প্রয়োজন নেই। নামাজের পর খুতবা দেওয়া হয়, যা শোনা মুস্তাহাব। রাসুল (সা.)–এর সুন্নাহ অনুযায়ী, নামাজে যাওয়ার পথে এক রাস্তা ও ফেরার পথে অন্য রাস্তা ব্যবহার করা উত্তম।

৩. কোরবানি: কোরবানি পবিত্র ঈদুল আজহার অন্যতম প্রধান আনুষ্ঠানিকতা। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কোরবানির জন্য উট, গরু, ছাগল বা ভেড়া নির্দিষ্ট বয়স ও শারীরিক শর্ত পূরণ করতে হবে। রাসুল (সা.) দুটি সাদা–কালো মোটা ও শিংওয়ালা দুম্বা কোরবানি করেছিলেন (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৫৫৩)। কোরবানির সময় ঈদের নামাজের পর থেকে তাশরিকের শেষ দিন পর্যন্ত। একটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে কোরবানি করেছে, সে যেন আরেকটি কোরবানি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯৬০)

কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে নিজে খাওয়া, আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ ও গরিব–দুঃখীদের দান করা সুন্নাহ।

৪. আনন্দ ও শুভেচ্ছা বিনিময়: ঈদের দিন আনন্দ প্রকাশ, নতুন পোশাক পরা, আত্মীয়–বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা ও শুভেচ্ছা বিনিময় করা ইসলামের শিক্ষা। সাহাবিরা ঈদের দিন একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ (আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের থেকে কবুল করুন)। এই শুভেচ্ছা সমাজে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত করে।

সূত্র: আল–জাজিরা ডটনেট

আরও পড়ুনমক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ