টানা ভারী বৃষ্টিপাতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে সমন্বয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৯ মে রাজধানীর কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়। 

এর মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এর পরামর্শে এ উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ।

আরো পড়ুন:

ইশরাকের শপথের সিদ্ধান্ত ইসির ওপর ছেড়ে দিলেন আপিল বিভাগ

ঢাবিতে ভবঘুরে উচ্ছেদে সহযোগিতা করবে ডিএসসিসি ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ

শুক্রবার (৩০ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এ পর্যন্ত দক্ষিণ সিটি এলাকা থেকে ১৯টি ও উত্তর সিটি এলাকা থেকে ৪২টি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অধিকাংশ অভিযোগের সমাধান ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণ কক্ষটি সার্বক্ষণিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নগরবাসী যে কেউ জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে নিচের হটলাইন নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। 

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন হটলাইন: ০১৭৩৩৯৮২৪৮৬, ০১৯৬৬৭২৫৯১১, +৮৮০৯৬০২-২২২৩৩৩।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন হটলাইন: ০১৫৩৪৬৬৪৪৪০, ০১৯৪২৮৩১৪৪৯, ০১৭০৯৯০০৪৪৪।

এর পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগরীতেও জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেনের একান্ত প্রচেষ্টায় সেখানে দ্রুত পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন সূত্র।

শুক্রবার বিকেলে  স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও জলাবদ্ধতা কবলিত বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তিনি তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

এসময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমানসহ উভয় সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এরইমধ্যে যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে:
উত্তর সিটি করপোরেশন: মিরপুর-১০, কালশি, ভাষানটেক, খিলক্ষেত, নাখালপাড়া, কাজিপাড়া, শেওড়াপাড়া, শাহ আলী, বাউনিয়া, সাতারকুল, ভাটারা, উত্তরখান, উত্তরা (সেক্টর ১, ৬, ১২, ১৩), এয়ারপোর্ট এলাকা।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন: ধানমন্ডি-২৭, গ্রিন রোড, শুক্রাবাদ, কাঁঠালবাগান, কলাবাগান, নিউ মার্কেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনগর, বেইলি রোড, মগবাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল, মতিঝিল, গুলিস্তান ও সচিবালয় এলাকা।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

ঢাকা/এএএম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসস স ড এনস স স থ ন য় সরক র ব ভ গ ন রসন

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা গ্রেপ্তার

সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম ওরফে অপুকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে জানে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

আরও পড়ুনচাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাসহ আটক ৫২৬ জুলাই ২০২৫

মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় জানে আলম জড়িত।

গত ১৭ জুলাই গুলশানে আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দেন আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদসহ কয়েকজন। তাঁরা শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সিদ্দিক আবু জাফর ১০ লাখ টাকা চাঁদা দেন। গত শনিবার রাতে চাঁদার বাকি টাকা আনতে যান তাঁরা। ঘটনাস্থল থেকে রাজ্জাকসহ পাঁচজন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। বাকি চারজন হলেন ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। ঘটনাটিতে গুলশান থানায় মামলা করেছেন সিদ্দিক আবু জাফর। মামলার এজাহারে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের বাইরে অপু নামের একজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আর প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় আরেকজনকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুনপ্রথমে পুলিশ নিয়ে বাসায়, পরে হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেন বৈষম্যবিরোধী নেতারা ২৮ জুলাই ২০২৫

রাজ্জাক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। চাঁদাবাজির ঘটনায় জানে আলম ও আবদুর রাজ্জাক উভয়কে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে।

পুলিশ জানায়, শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার পর রাজ্জাকসহ কয়েকজন তা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন। নিজের ভাগের পাঁচ লাখ টাকা রাজ্জাক তাঁর বাড্ডার ভাড়া বাসায় (মেস বাসা) রাখেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্ধার করে পুলিশ।

আরও পড়ুনচাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ জন ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ২ জন বহিষ্কার২৬ জুলাই ২০২৫

এর আগে গত বুধবার ডিএমপির এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজ্জাকের একটি ভাড়া বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার ৪টি চেক উদ্ধার করা হয়েছে। এটি বাসাটি পশ্চিম রাজাবাজার এলাকায় অবস্থিত বলে গতকাল জানায় গুলশান থানা–পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এই সোয়া দুই কোটি টাকার চেক নেওয়া হয় রংপুর-৬ আসনের (পীরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড জোন’ থেকে।

আরও পড়ুনসমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি: আবদুর রাজ্জাকসহ চারজন সাত দিনের রিমান্ডে২৭ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ