মিছরির মতো মিষ্টি বলে আমের নাম মিছরিকান্ত, এমনটা শোনেননি কেউ। তবে মিছরির মতো মিষ্টি না হলেও আমটি মিষ্টি ও সুস্বাদু। আবার বৃন্দাবন থেকে এসেছে বলে নাম হয়েছে বৃন্দাবনী, এমনটাও জানা নেই কারও। তবে দু-চার কেজি পাকা বৃন্দাবনী আম ঘরে থাকলে জানান দেবে, ঘরে আম আছে। মনমাতানো সুগন্ধে ভরে উঠবে ঘর। শুধু সুগন্ধেই নয়, স্বাদেও অতুলনীয় এই বৃন্দাবনী।

ঠিক গোলাপের মতো সুগন্ধ না হলেও সুগন্ধি ও সুস্বাদু একটি আমের নাম হচ্ছে গোলাপবাস ও অন্য একটির নাম হচ্ছে গোলাপখাস। আরও আছে কোহিতুর, গোরজিৎ, কুয়াপাহাড়ি, কালুয়া, ধলুয়া, দুধসর, দুধিয়া, কালীভোগসহ বাহারি সব নামের হরেক রকমের আম। আর এসব আমের একসঙ্গে দেখা মিলবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের বাগানে। সেখানে এক সীমানার মধ্যে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১১৭ জাতের আমগাছ আছে। গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি, ল্যাংড়া, ফজলি ও হালের আম্রপালির মতো বাণিজ্যিক ও প্রচলিত জাতগুলোর ভিড়ে এখনো টিকে আছে বিলুপ্তপ্রায় আমগাছগুলো।

হর্টিকালচার সেন্টারের ২০ বছরের পুরোনো কর্মচারী আবদুর রহিম। তিনি বাগানের প্রায় ৬০ জাতের আম চিনতে পারেন। তিনি বলেন, রানীপছন্দ, কিষানভোগ, দাড়ভাঙা, ভাদুরী, জাদুভোগ, আলমশাহি, গোলাপবাস, কোহিতুর, দুধসর, দুধিয়া, রাধাসুন্দরী, কুয়াপাহাড়ি, ধলুয়া, কালুয়া, সিন্ধু, সরিখাস, ভাসতারা, শাটিয়ার ক্যাড়া, চৈতী, সুবর্ণা, কাজলা, বান্দিগোড়, জোড়সা, গোরজিৎসহ কিছু সুস্বাদু জাতের আম আছে বাগানে। এর বাইরে আরও অনেক জাতের আম রয়েছে। গাছগুলোর অনেকটাই শত বছরের বেশি বয়সী। ডালপালা দুর্বল হতে শুরু করেছে। একসময় ঝড়-বাদলে পড়ে যাবে।

সূর্য ডিম জাতের আমের দেখা পাওয়া যাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ত র আম ব ন দ বন র আম র

এছাড়াও পড়ুন:

মাদক গ্রহণে নিষেধ করা হয়েছিল, উৎমাছড়ায় যেতে নয়—বৈঠকে দাবি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা কিংবা যেতে নিষেধ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁদের দাবি, পর্যটকদের মাদক গ্রহণে নিষেধ করেছিলেন তাঁরা।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন স্থানীয় লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এই বৈঠক হয়।

গত রোববার কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রনিখাই ইউনিয়নে উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে যেতে পর্যটকদের বাধা দেওয়ার এক ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বেড়াতে আসা লোকজনকে চলে যেতে অনুরোধ করেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। বেড়াতে আসা অনেকে মদ্যপান ও অশ্লীল কার্যকলাপ করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। পাশাপাশি এলাকাটি পর্যটনকেন্দ্র নয়, সেখানে যাতে তাঁরা আর না আসেন, এমনটিও বলা হয়েছিল পর্যটকদের।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের উৎমাছড়ায় যেতে বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা স্থানীয় যুবসমাজ পরিচয়ে সেখানে যান। পর্যটকদের বাধা কিংবা নিষেধ করা হয়নি বলে বৈঠকে দাবি করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, শহরের পোশাকের সঙ্গে গ্রাম এলাকার পোশাক সামঞ্জস্য নয়। যাঁরা বেড়াতে যান তাঁদের পোশাক ‘শালীন’ রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন তাঁরা।

বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, পর্যটনকেন্দ্রে যেতে স্থানীয় লোকজন বাধা দিতে পারেন না। পর্যটকেরা কোনো অন্যায় কিংবা বেআইনি কাজ করলে স্থানীয় প্রাশাসনকে জানাতে হবে। পর্যটকদের নিয়ে নিজেদের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই—বৈঠকে এমনটি বুঝিয়ে বলা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, উৎমাছড়ায় বেড়াতে যাওয়া জন্য নির্দিষ্ট কিংবা উপযুক্ত রাস্তা নেই। এ জন্য পর্যটকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর মাড়িয়ে যাতায়াত করেন। এতে তাঁরা অসুবিধায় পড়েন। বৈঠকে এমন দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়, এমনটিও দাবি করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, অবৈধ কোনো কিছু করে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা প্রশাসনকে জানাতে। আর পর্যটকদের বাধা না দিতে।

কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে যেসব কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর কথাবার্তার মিল নেই। এ জন্য তিনি স্থানীয় আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে মঙ্গলবার বিকেলে উৎমাছড়া এলাকায় গেছেন।

‘যাঁরাই নিষেধ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’
উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, এ অঞ্চলে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। বিষয়টি ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখছেন। ইউএনও জানার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি কী? তিনি বলেন, ‘এটা কে করল, কারা করল, কেন করল, সেটা আজকের মধ্যেই ইউএনও তদন্ত করে বের করবেন। এরপর যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে হয়, তা-ও নেওয়া হবে।’

পর্যটকেরা কি নির্বিঘ্নে উৎমাছড়ায় যেতে পারছেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সবাই সেখানে আগের মতোই যেতে পারবেন। পর্যটক তো যাচ্ছেন, তা তো বন্ধ নেই। কেউ নিষেধ করতে পারবেন না। যে বা যাঁরাই নিষেধ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে উৎমাছড়ায় স্থানীয় প্রশাসন সব ধরনের নজরদারিও বাড়িয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠকে অচলাবস্থার অবসান হবে
  • মাদক গ্রহণে নিষেধ করা হয়েছিল, উৎমাছড়ায় যেতে নয়—বৈঠকে দাবি
  • নিজেদের চুরি যাওয়া গাড়ি চুরি করেই নিয়ে এলেন দম্পতি