কুরিয়ার সার্ভিসে নকল বিড়ি পাঠাচ্ছিলেন অসাধু একটি চক্র। তবে পাঠানোর আগেই অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা মূল্যের নকল বিড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং পাবনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ।
শুক্রবার (৩০ মে) রাতে পাবনার ঈশ্বরদী থানা ভবন পার্শ্ববর্তী এস এ পরিবহণ কুরিয়ার সার্ভিসের সামনে থেকে এসব বিড়ি উদ্ধার করা হয়। এ সময় একটি ভুটভুটি (ইঞ্জিনচালিত ছোট যান) গাড়িও আটক করা হয়েছে।
কাস্টমস ও পুলিশ সূত্র জানায়, নকল বিড়ি কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য এস এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিসে নেয়া হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে পাবনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ এবং পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। এ সময় এস এ পরিবহন কুরিয়ার অফিসের সামনে থেকে একটি ভুটভুটি গাড়িসহ ১৫ কার্টন ও ১৫ বস্তা নকল বিড়ি জব্দ করা হয়।
আরো পড়ুন:
‘দেশের ৩৫.
যবিপ্রবিতে এয়ারটেলের কনসার্টে অবাধে মাদক সেবনের অভিযোগ
অভিযান থেকে পাঁচ লাখ শলাকা নকল আকিজ বিড়ি, ৪ লাখ ৮০ হাজার শলাকা নকল বাঁশি বিড়ি এবং আড়াই লাখ শলাকা নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত বকুল বিড়ি উদ্ধার করা হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কাউকে আটক করা যায়নি।
ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম মনিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। উদ্ধারকৃত বিড়ি ঈশ্বরদী কাস্টমস অফিসকে দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
পাবনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরে নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে এই চক্র বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বিড়ি তৈরি করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল। এসব কর্মকাণ্ড দণ্ডনীয় অপরাধ। মামলার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ ধ র ক স টমস নকল ব ড়
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।