নাটোরের বাগাতিপাড়ায় একটি বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। চাঁদা না দেওয়ায় তারা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের। গতকাল শনিবার উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের নন্দীকুজা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এতে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে আলতাফ হোসেন, মাহবুর রহমান নাবিল ও রাসেল আলী নামে তিনজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিদ্যালয় থেকে জানা গেছে, শনিবার সকালে নন্দীকুজা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষা চলছিল। লিখিত পরীক্ষা শেষে অফিস কক্ষে ভাইভা নেওয়া হচ্ছিল চাকরিপ্রার্থীদের।
এ সময় নন্দীকুজা গ্রামের আলতাফ হোসেন, মাহবুর রহমান নাবিল, ফয়সাল হোসেন ও রাসেল আলী নামে চারজন লাঠিসোটা নিয়ে এসে হামলা চালিয়ে প্রধান শিক্ষককে মারধর করে। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদেরও লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় তারা অফিস কক্ষের আসবাব ও কাগজ নষ্ট করে। পরে সভাপতির নির্দেশনায় পরীক্ষা স্থগিত করলে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা চলে যান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কয়েকজন তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় তারা নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে হামলা চালিয়ে তাঁকে মারধরসহ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের লাঞ্ছিত করে। ফলে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
একই তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সাত্তার। বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর একটি দল অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন য় গ পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।