এসএমই খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে
Published: 1st, June 2025 GMT
অন্যান্য বছরের মতো এবার গতানুগতিক বাজেট হবে না—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপ ও স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ—এই দুটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে বাজেটে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকা প্রয়োজন। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (এসএমই) টেকসই প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।
উন্নত দেশগুলোতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬০-৭০ শতাংশ আসে এসএমই খাত থেকে। সেখানে বাংলাদেশে এই হার মাত্র ২৫-২৮ শতাংশ। কারণ, ছোট উদ্যোক্তারা ঠিকভাবে সহায়তা পাচ্ছেন না। এ খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এসএমইদের সহায়তার জন্য সরকারের বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু সংজ্ঞাগত জটিলতার কারণে অতিক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের বেশির ভাগই সরকারি নীতিসহায়তা বা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন না। ফলে সিএমএসএমই খাতের সংজ্ঞাগুলো সুনির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন।
আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোতে সরকারি কেনাকাটায় এসএমইদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে পণ্য কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে আমাদের দরপত্র প্রক্রিয়ায় যে কেউ অংশ নিতে পারে। কিন্তু এসএমইদের টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারি কেনাকাটায় এসএমইদের অন্তত ২৫ শতাংশ হিস্যা রাখা প্রয়োজন। বাজেটে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আশা করছি।
এসএমই খাতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যে পণ্য উৎপাদন করছে, সে জন্য কর-ভ্যাট দিচ্ছে; আবার তারা পণ্যের জন্য যেসব কাঁচামাল কিনছে, সেখানেও শুল্ক-কর দিতে হয়। স্থানীয় শিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য এ ধরনের দ্বৈতকর পরিহার করতে হবে।
দেশের এসএমইদের বেশির ভাগই কম দামের সাধারণ বা মৌলিক পণ্য তৈরি করছে, সেখানে মূল্য সংযোজন কম। এসব পণ্যে মূল্য সংযোজনের জন্য গবেষণা ও উন্নয়নের (আরঅ্যান্ডডি) ক্ষেত্র বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু আরঅ্যান্ডডির জন্য আমাদের দেশে বিনিয়োগ কম হয়; সরকারি সহায়তাও অপ্রতুল। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিলে তাদের থোক বরাদ্দ, কর ছাড়, প্রণোদনা দেওয়া বা অন্য কোনো উপায়ে সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন। কিছু ক্ষেত্রে থোক বরাদ্দের ব্যবস্থা রয়েছে; কিন্তু সেগুলো পাওয়ার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল।
এসএমইদের নিয়ে ২৬-২৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কাজ করছে। কিন্তু এদের মধ্যে সমন্বয়ের অনেক অভাব। আমার মতে, এসএমইদের নিয়ে জেলাভিত্তিক একটি ডেটাবেজ করা প্রয়োজন। সে অনুসারে সরকারের নীতিসহায়তাগুলো নিয়ে একটা সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে।
আরেকটা প্রস্তাব থাকবে বন্ডেড ওয়্যারহাউসের বিষয়ে। যদিও এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) খুব নেতিবাচক মনোভাব দেখায়। কিন্তু এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা বন্ডের সুযোগ না পেলে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগীসক্ষম হতে পারবে না।
রাশেদুল করীম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এসএমই খ ত র জন য আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচির সমাপনী ও সনদ বিতরণ
এবি ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত মাসব্যাপী “উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি”-এর সমাপনী অনুষ্ঠান কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৫ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি, প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ কর্মসূচির আওতায় কয়েকজন উদ্যোক্তার মাঝে ঋণও প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা। বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের অতিরিক্ত পরিচালক ও প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মো. নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এবি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেড এম বাবর খান। এছাড়া, উপস্থিত ছিলেন এবি ব্যাংকের হেড অব এসএমই ব্যাংকিং ইফতেখার এনাম আওয়াল, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মো. ওয়াসিম, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. ফজলুল হক এবং এবি ব্যাংকের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ঢাকা/ইভা