সাগর উত্তাল থাকায় মাঝপথ থেকে সেন্টমার্টিনগামী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ যাত্রীবাহী ট্রলার কক্সবাজারের টেকনাফে ফেরত এসেছে। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার খায়ুকখালী ঘাটে ট্রলারটি পৌঁছে। তবে পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর একই দিন সকালে দুটি খালি এবং একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ যাত্রীবাহী একটি ট্রলার দ্বীপে পৌঁছেছিল। এ ছাড়া আরও দুটি খালি ট্রলার দ্বীপে যেতে না পেরে টেকনাফে ফেরত আসে।

টেকনাফ-সের্ন্টমাটিন রুটের সার্ভিস বোটের সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, ‘সাগর উত্তাল থাকায় টেকনাফ থেকে ছেড়ে যাওয়া সেন্টমার্টিনগামী যাত্রীবাহী একটি ট্রলারসহ দুটি খালি ট্রলার ফেরত এসেছে। তবে একই দিন সকালে পণ্যবাহী ট্রলারসহ আরও দুটি খালি ট্রলার দ্বীপে পৌঁছেছে।’

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তালের কারণে টেকনাফ থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী একটি ট্রলারসহ দুটি খালি ট্রলার ফেরত এসেছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে আগামীকাল (সোমবার) খুব সকালে পণ্যবাহী ট্রলারসহ যাত্রীরা রওনা করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একই দিন সকালে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের একটি ট্রলারসহ দুটি খালি ট্রলার দ্বীপে পৌঁছেছে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফ পৌরসভাস্থল খায়ুকখালী ঘাটে সেন্টমার্টিনের মানুষের ভিড় দেখা গেছে। এতে পুরুষদের ট্রলারে অনুমতি মিললেও নারীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। এতে নারীরা অনেক বিপাকে পড়েছেন। ফলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ সময় ঘাটে অপেক্ষমাণ সেন্টমার্টিনের মাজারপাড়ার বাসিন্দা শামসুন নাহার বলেন, ‘চিকিৎসা নিতে এসে নয় দিন ধরে টেকনাফে আটকা পড়েছি। আজকে ট্রলার চলাচল করলেও আমাদের (নারীদের) ট্রলারে যেতে অনুমতি দিচ্ছে না। আমার কাছে কোনও টাকা নেই, সন্তান নিয়ে খুব বিপদে আছি। দ্বীপে পরিবারের আরও সদস্য রয়েছে। তারাও অনেক সমস্যায় আছে খাবার নিয়ে। তা ছাড়া এখানে আমাদের কেউ সাহায্য করছে না।’

ঘাটে সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, ‘চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে আসা দ্বীপের প্রায় ৩’শ মানুষ টেকনাফে আটকা পরেছে। তারা খুব সমস্যায় আছে। আজকে ট্রলার চলাচল শুরু হলেও নারীরা যেতে পারছে না। তাছাড়া দ্বীপে বৈরী আবহাওয়ার কারনে যদি পর্যটকরা আটকা পরে,তাদের আমরা (দ্বীপবাসী) সাহায্য করে থাকি। কিন্তু দ্বীপের লোকজন এখানে  (টেকনাফে) আটকা পরলে কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসে না।’    

জানতে চাইলে সেন্টমার্টিন ইউপি (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘সাগর উত্তাল থাকায় মাঝপথ থেকে যাত্রীবাহি ট্রলার ফেরত এসেছে টেকনাফে। তার আগে সকালে দ্বীপে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যেসহ কিছু মানুষ দ্বীপে পৌছেছিল। তবে দ্বীপের অনেক মানুষ টেকনাফে আটকা পরেছে। সব মিলিয়ে দ্বীপের বাসিন্দারা খুব কষ্টে আছেন।’  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন টম র ট ন স ন টম র ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ