জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ ও তাঁর স্ত্রী ইসমত আরা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দুদক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

একই অভিযোগে পাবনার সাবেক পুলিশ সুপার ও বর্তমানে এপিবিএন ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলাম (শিমুল) ও তাঁর স্ত্রী ফারহানা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।

দুদক বলছে, নূর মোহাম্মদ তাঁর দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ৪৪৩ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি ৪২ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৪ টাকা।

অন্যদিকে নূর মোহাম্মদের স্ত্রী ইসমত আরা বেগমও স্বামীর প্রভাবে ১ কোটি ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ১৮ টাকার জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন করেছেন। এ সম্পদ তিনি ভোগদখলে রেখেছেন। এ অপরাধে নূর মোহাম্মদ ও তাঁর স্ত্রী ইসমত আরা বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলাম একজন পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার ৯৩১ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর স্ত্রী ফারহানা রহমানের বিরুদ্ধেও আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৩৯ লাখ ২ হাজার ২২৫ টাকার সম্পদ অর্জনের করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ম হ ম মদ জ ঞ ত আয় কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ