চুরির অভিযোগে যুবলীগ নেতাকে খুঁটিতে বেঁধে মারধর
Published: 3rd, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে চুরির অভিযোগে ইছা মিয়া (৩৫) নামে এক যুবককে খুঁটিতে বেঁধে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মারধরের বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
গত রোববার উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের সাধেরখলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ইছা মিয়া সাধেরখলা গ্রামের সায়েদ আলীর ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাধেরখলা হাজী এম এ জাহের উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন রহিম মিয়ার দোকানে গত শনিবার দিবাগত রাতে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। পরের দিন রোববার সকালে অনেক খোঁজাখুঁজির পর চোর সন্দেহে ইছা মিয়াকে ধরে আনেন গ্রামবাসী। এ সময় তাকে রহিমের দোকানের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করলে তিনি চুরি করেছে বলে স্বীকারোক্তি দেন। এবং তার কাছ থেকে চুরি হওয়া কিছু মালামাল উদ্ধার করেছে বলেও জানা গেছে। এছাড়াও ইছা মিয়া ওই এলাকায় আরও একাধিক বাড়িতে ও মসজিদে চুরি করেছেন বলেও স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। পরে গ্রামবাসী তার স্বজনদের খবর দিলে তারা কোনো সাড়া দেননি। একপর্যায়ে গ্রামবাসী সংশ্লিষ্ট গ্রামের ইউপি সদস্য রোপন মিয়াসহ গণ্যমান্যদের খবর দিলে তারা এসে মুচলেকা নিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
ভিডিওতে দেখা যায়, ইছা মিয়া খুঁটির সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় ঘিরে থাকা মানুষদের হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে বলছেন, ‘আমার ঘরও মালটি আছে। মালটি আইন্যা দেই। আমারে একুট পানি খাওয়াও। তোমরা যা কও, আমি তা–ই রাজি। আমারে তোমরা আর মাইরো না, অত্যাচারটা কইরো না.
পার্শ্ববর্তী আমতৈল গ্রামের নুর আলম ফেসবুকে লেখেন, ‘ইছা মিয়া ভয়ঙ্কর একজন চোর। সে এমন কোনো মসজিদ নেই, সেখানে চুরি করছে না। সে আমার বাড়িতেও চুরি করছে। সে আমার বাড়ি থেকে টাকা ও অলঙ্কার চুরি করছে। তার ভয়ে সীমান্ত এলাকা লাকমা থেকে শুরু করে আমাদের ৮-১০ গ্রামের মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না।’
এ বিষয়ে দক্ষিণ বড়দল ইউপি সদস্য রোপন মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ইছা মিয়া এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে চুরি করে এমন অভিযোগ পেয়েছি। গ্রামের রহিম মিয়ার বাড়িতে চুরির ঘটনায় ইছা মিয়াকে ধরে এনে বেঁধে রাখেন স্থানীয়রা। পরে তিনি স্বীকার করেন এবং কিছু মালামাল বের করে দেন। আমরা যাওয়ার পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন তারা।’
তাহিরপুর থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই এলাকা থেকে কেউ চুরির বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেনি। তাছাড়া কাউকে চোর সন্দেহে ধরে এনে শাস্তি দেওয়া বেআইনী। বিষয়টি কেউ থানায় অবগত করেনি। অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ য বল গ ন ত চ র র অভ য গ ম রধর ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।