ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ শতভাগ বন্ধ করার ব্যাপারে মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার ওমান ইরানের কাছে একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তির জন্য মার্কিন প্রস্তাব পেশ করেছে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ দফা আলোচনার পর, বেশ কয়েকটি কঠিন বিষয় রয়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া এবং তেহরানের পারমাণবিক বোমার সম্ভাব্য কাঁচামাল - অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের সম্পূর্ণ বিদ্যমান মজুদ বিদেশে পাঠাতে অস্বীকৃতি।

ইরানের সব বিষয়ে চূড়ান্ত বক্তব্য রাখার অধিকারী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা বন্ধ করার বিষয়ে কিছুই বলেননি। তবে তিনি বলেছেন, “মার্কিন প্রস্তাব আমাদের জাতির আত্মনির্ভরতার বিশ্বাস এবং আমরা পারি নীতির বিরোধিতা করে।”

তিনি বলেছেন, “ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ছাড়া একটি বিশাল পারমাণবিক শিল্প অকার্যকর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী ইসরায়েলের জানা উচিত যে পারমাণবিক শিল্প রক্ষায় ইরানকে তার মূল লক্ষ্য অর্জন থেকে কেউ বিরত রাখতে পারবে না।”

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা ছাড়া বিশাল পারমাণবিক শিল্প কেন অকেজো তার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহের জন্য যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করতে না পারি তাহলে এই প্রযুক্তির অধিকারী এমন কারো কাছে আমাদের হাত পাততে হবে যারা আমাদের নিজস্ব তেল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বলে যে আমাদের তেল শোধনাগার থাকার কিংবা পেট্রোল উৎপাদনের অধিকার থাকতে পারবে না। তারা চায় আমাদেরকে অবশ্যই সেইসব দেশের ইচ্ছা অনুযায়ী পেট্রোল কিনতে হবে।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান

শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে না দিলে চুক্তি করবে না ইরান। পাশাপাশি দেশটি পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চেয়েছে।

ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনায় ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি প্রধান বিরোধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এ আলোচনা চলছে। আলোচনায় ইরান বলছে, তারা একটি শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইরানের এ কর্মসূচিকে চূড়ান্তসীমা বা ‘রেড লাইন’ হিসেবে বিবেচনা করছে।

সোমবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি করবে না তেহরান। আরাগচি বলেন, যদি লক্ষ্যই হয় ইরানকে নিজের শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত করা, তাহলে চুক্তি যে হবে না, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

আরাগচি জোর দিয়ে বলেছেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ‘গোপন করার কিছু নেই’। তিনি বলেন, ‘ইরানের একটি শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি রয়েছে...আমরা যেকোনো পক্ষ বা সংস্থাকে এ নিশ্চয়তা দিতে প্রস্তুত।’

আরাগচির মন্তব্যের আগে সোমবার রাফায়েল গ্রোসি পরমাণু কর্মসূচির নিয়ে আরও স্বচ্ছ হতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানান। এমন এক সময়ে গ্রোসির এ আহ্বান এল, যখন সম্প্রতি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আইএইএর একটি গোপন প্রতিবেদন ফাঁস হয়েছে। এতে দেখা গেছে, তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ জোরদার করেছে।

আইএইএর ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে। পরমাণু অস্ত্র নেই—এমন যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ এ পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত নজিরবিহীন ঘটনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ৯০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হলেই তা পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য উপযুক্ত।

আরও পড়ুনইরানের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজি, যা নজিরবিহীন: আইএইএ৩১ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান
  • ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখার ঘোষণা খামেনির, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব খারিজ
  • পরমাণু আলোচনায় ‘স্পষ্টতা’ চায় ইরান