কোরবানির ঈদ দরজায় কড়া নাড়ছে। আর মাত্র এক দিন পর অর্থাৎ ৭ জুন মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার পশু। সেইসঙ্গে রাজধানীর অলিগলিতে পশুখাদ্য ও কোরবানির সরঞ্জামের পসরা নিয়ে বসেছেন অনেকে।

কোরবানির পশুর খাদ্যের যোগান দিতে হাটের আশপাশসহ প্রধান সড়ক, অলিগলি, ফুটপাত কিংবা  ভ্যানে করে গোখাদ্য ও কোরবানির সরঞ্জাম বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

অন্য সময়ে ভিন্ন পেশায় থাকলেও কোরবানির ঈদের আগে বাড়তি আয় করতে প্রতি বছর এ ব্যবসায় নামেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে, বিভিন্ন পণ্যের হকার, রিকশা-ভ্যান-ঠেলাগাড়ি চালকরা কয়েকদিনের জন্য এখন পশুখাদ্য বিক্রি করছেন। আবার অনেক শিশু, কিশোর ও বেকার যুবক এ মৌসুমি ব্যবসায় নেমেছেন। এ ব্যবসায় পিছিয়ে নেই নারীরাও।

আরো পড়ুন:

বিআরটিসি বাসেও বাড়তি ভাড়া, ঈদের যাত্রীরা অখুশি

ঈদযাত্রা: কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ঢল

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী, গোরান, মাদারটেক, মেরাদিয়া, বাসাবো ও খিলগাঁও এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এ সব ভ্রাম্যমাণ পশুখাদ্যের দোকানে কাঁচা ঘাস, কাঁঠালপাতা, শুকনো খড়, খৈল, খড়ের ভুষি, গমের ভুষি, খেসারির ডালের ভুষি, ধানের কুঁড়া, চিটা গুড় ও মোটা লবণ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কোরবানির সরঞ্জাম হোগলার চাটাই ও খাটিয়া বিক্রি হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার পশুখাদ্য ও সরঞ্জামের দাম বেশি।

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পড়াশোনা বা ভিন্ন পেশায় থাকলেও কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পশুখাদ্য ও সরঞ্জাম বিক্রি করছেন তারা। বাড়তি আয়ের পাশাপাশি এ কাজ করে আনন্দ পান। প্রধান সড়কের পাশে, মোড়ে মোড়ে ও অলিগলির ফুটপাত, রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়িতে করে বিক্রি করছেন। 

আকারভেদ আঁটিপ্রতি কাঁচা ঘাস ২০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁঠালপাতা ৩০ থেকে ৫০ টাকা, আঁটিপ্রতি শুকনো খড় ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কেজিপ্রতি গমের ভুষি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ভুট্টার ভুষি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধানের কুঁড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, খৈল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি এবং আধা কেজি মোটা লবণ ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কোরবানির পশু কাটার সরঞ্জামের মধ্যে প্রতিপিস হোগলার চাটাই ২০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং খাটিয়া ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কোনো কোনোটির দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।

দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় চারতালার মোড়ে রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় চৌকি পেতে কোরবানির সরঞ্জাম বিক্রি করছেন ৬৫ বছরের ওসমান মিয়াকে। তিনি জানান, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এই ব্যবসা করছেন। অন্য সময়ে চায়ের দোকান চালান। কয়েক দিনের এ ব্যবসায় লাভ বেশি বলে ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের হোগলার চাটাই ও খাটিয়া বিক্রি করছেন।

দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় ফল্গুনী চেকের মোড়ে ফুটপাতে বসে কাঁচা ঘাস ও কাঁঠালপাতা বিক্রি করতে দেখা গেছে পঞ্চাশোর্ধ ফাতেমা বেগমকে। দাম কত জানতে চাইলে তিনি জানান, আকারভেদ আঁটিপ্রতি কাঁচা ঘাস ২০ থেকে ৬০ টাকায় ও কাঁঠালপাতা ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। তিনি প্রতিদিন পিঠা তৈরি করে বিক্রি করেন। ঈদ উপলক্ষে কয়েক দিনের জন্য এ ব্যবসা করছেন। তার ছেলে ও তিনি দুজনে এ বেচাকেনা দেখাশোনা করছেন।

বাসাবো এলাকার ওহাব কলোনিতে রাস্তার উপর পশুখাদ্য ও সরঞ্জাম বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৬ বছর বয়সী মামুনকে। প্রত্যেক ঈদে বন্ধুরা মিলে এ ব্যবসা করেন। বাবার টাকা এবং নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে তাদের এ ব্যবসা। এবার বিক্রি ভালোই হচ্ছে বলে জানান মামুন।
 

ঢাকা/এনটি/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরঞ জ ম ব ক র ও ক রব ন র সরঞ জ ম র ব যবস য় এ ব যবস করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল

শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ