পাওনা টাকার জন্য নারীকে দু'দিন আটকে রেখে মারধর, পরে ‘আত্মহত্যা’
Published: 5th, June 2025 GMT
রাজধানীর পল্লবীতে পাওনা টাকার জন্য মোছা. ফারজানা (২০) নামে এক এনজিওকর্মীকে আটকে রেখে দফায় দফায় মারধরের পর তিনি 'আত্মহত্যা' করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পল্লবী থানার ওসি শফিউল আলম বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, এমন একটি ঘটনার কথা শুনে বুধবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যায়। পরে আজ মৃতের ভাই বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তার অভিযোগ খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, একটি এনজিওর কর্মী ছিলেন ফারজানা। তিনি প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আকর্ষণীয় মুনাফার কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করতেন। এভাবে কেউ কেউ টাকা দিয়ে মুনাফা পেয়েছেন। তবে সম্প্রতি এনজিওটির কার্যালয় বন্ধ পাওয়া যায়। এরমধ্যে ৩০ ও ৩১ মে ফারজানার মাকে মারধর করেন পাওনাদাররা। ওইসময় তারা ফারজানার সন্ধান চান। পরে মঙ্গলবার তাকে পেয়ে পল্লবীর বাউনিয়াবাদ এলাকায় এক ব্যক্তির বাসায় আটকে রাখেন। পাওনাদাররা তখনই তাদের টাকা ফেরত দিতে বলেন। উত্তেজিত লোকজন তাকে গালাগাল ও মারধর করেন। চাপের মুখে তিনি কিছু লোকের টাকা ফেরত দেন। তবে আরও অনেক পাওনাদার অপেক্ষায় ছিলেন। বুধবারও তার ওপর নির্যাতন চলে। একপর্যায়ে তিনি বাসার শৌচাগারে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে দাবি করেছেন ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। বলা হয়, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজন মঙ্গলবার থেকে আটকে নির্যাতন করেন সাভারের বাসিন্দা ওই নারীকে। এতেই তার মৃত্যু হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
৯০ বছর বয়সী এই নারীর বিধবা ভাতার টাকা খোয়া গেল কীভাবে
মুঠাফোনে বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছিলেন ৯০ বছর বয়সী আমেনা বেগম। আশা ছিল ঈদে নিজের জন্য নতুন কাপড় কিনবেন, নাতি-নাতনিদেরও কিছু দেবেন। ভালো কিছু খাবেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার দোকানে গিয়ে টাকা তুলতে গিয়ে জানলেন, যে মুঠোফোন নম্বরে টাকা এসেছে, সেখানে টাকা নেই, অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির কাছে এ কথা শুনে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন আমেনা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, তাঁর ঈদটাই শেষ হয়ে গেল।
আমেনা বেগম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত আবদুল জলিলের স্ত্রী।
বয়স্ক এই নারী বলেন, ছোটবেলায় তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর চার ছেলে ও চার মেয়ে। স্বামী অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করতেন। ছেলেরাও এখন অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ছেলেমেয়েরা নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তিনি ছেলেদের কাছে থাকেন। কিন্তু তাঁরাও হতদরিদ্র, নিজেরাই সংসার চালাতে হিমশিম খায়।
আমেনা বেগম বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছেন। ২৯ মে তাঁর ছেলের মুঠোফোন নম্বরে ভাতার এক বছরের ৬ হাজার ৬০০ টাকা একসঙ্গে আসে। কিন্তু দোকানে গিয়ে শোনেন টাকা অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির ভাষ্য, ওই বৃদ্ধার মুঠোফোন থেকে একটি মুঠোফোন নম্বরে ৩৯ টাকা রিচার্জ করা হয়। পরে ওই নম্বরে ৬ হাজার ৬০০ টাকা ‘সেন্ড মানি’ করা হয়।
মুঠোফোনটি ব্যবহার করেন ওই বৃদ্ধার ছেলে আবদুস সাত্তার। তিনি বুঝতে পারছেন না কীভাবে তাঁর ফোন থেকে ‘সেন্ড মানি’ হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। মা ভাতার টাকা পেলে নিজের প্রয়োজনমতো খরচ করতেন। এবারও টাকা পেয়ে অনেক আশা করেছিলেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। কীভাবে টাকাটা খোয়া গেছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত চান তিনি।
যে নম্বরে ওই বৃদ্ধার টাকা গেছে, সেই নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহারুজ্জামান সবুজ বলেন, ওই নারীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।