রাজধানীর পল্লবীতে পাওনা টাকার জন্য মোছা. ফারজানা (২০) নামে এক এনজিওকর্মীকে আটকে রেখে দফায় দফায় মারধরের পর তিনি 'আত্মহত্যা' করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পল্লবী থানার ওসি শফিউল আলম বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, এমন একটি ঘটনার কথা শুনে বুধবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যায়। পরে আজ মৃতের ভাই বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তার অভিযোগ খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ জানায়, একটি এনজিওর কর্মী ছিলেন ফারজানা। তিনি প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আকর্ষণীয় মুনাফার কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করতেন। এভাবে কেউ কেউ টাকা দিয়ে মুনাফা পেয়েছেন। তবে সম্প্রতি এনজিওটির কার্যালয় বন্ধ পাওয়া যায়। এরমধ্যে ৩০ ও ৩১ মে ফারজানার মাকে মারধর করেন পাওনাদাররা। ওইসময় তারা ফারজানার সন্ধান চান। পরে মঙ্গলবার তাকে পেয়ে পল্লবীর বাউনিয়াবাদ এলাকায় এক ব্যক্তির বাসায় আটকে রাখেন। পাওনাদাররা তখনই তাদের টাকা ফেরত দিতে বলেন। উত্তেজিত লোকজন তাকে গালাগাল ও মারধর করেন। চাপের মুখে তিনি কিছু লোকের টাকা ফেরত দেন। তবে আরও অনেক পাওনাদার অপেক্ষায় ছিলেন। বুধবারও তার ওপর নির্যাতন চলে। একপর্যায়ে তিনি বাসার শৌচাগারে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে দাবি করেছেন ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। বলা হয়, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজন মঙ্গলবার থেকে আটকে নির্যাতন করেন সাভারের বাসিন্দা ওই নারীকে। এতেই তার মৃত্যু হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ