লাখো হজযাত্রীর অংশগ্রহণে হজের আনুষ্ঠানিকতা চলছে
Published: 5th, June 2025 GMT
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে হিজরি ১৪৪৬ সনের পবিত্র হজ।
মিনার প্রান্তর প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি হাজি বৃহস্পতিবার একত্রিত হয়ে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ স্লোগানে মুখরিত করেছেন পুরো অঞ্চল।
বৃহস্পতিবার (৯ জিলহজ) সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা মিনায় অবস্থান করবেন। এরপর সন্ধ্যার পর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে হাজিরা, যেখানে রাত কাটিয়ে শয়তানকে পাথর মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করা হবে।
আরো পড়ুন:
আজ পবিত্র হজ, ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু, মিনায় হাজিরা
হজের অন্যতম প্রধান অংশ ‘ওকুফে আরাফা’র প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মিনায় রাত যাপনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে পরদিন ভোর থেকেই হাজিরা আরাফার ময়দানের পথে যাত্রা করবেন। আরাফা মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যেখানে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। এরপর প্রায় ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মুজদালিফায় প্রবেশ করবেন।
আরাফায় অবস্থানের সময় মুসল্লিরা মসজিদে নামিরা থেকে দেওয়া খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ একযোগে আদায় করবেন।
সৌদি আরবের হজমন্ত্রী তৌফিক রাবিয়া জানিয়েছেন, এবারের হজে প্রায় ১৫ লাখ বিদেশি হাজি অংশগ্রহণ করেছেন। গরম এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সৌদি কর্তৃপক্ষ বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি ৪০টিরও বেশি সংস্থা মিলিয়ে মোট ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। গরম থেকে রক্ষা পেতে ৫০ হাজার বর্গমিটার ছায়াযুক্ত এলাকা তৈরি করা হয়েছে। ৪০০টির বেশি শীতলীকরণ ইউনিট ও প্রচুর চিকিৎসক-নার্স নিয়োজিত রয়েছে।
বার্তা সংস্থা আনাদোলুর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর হজে অংশ নিয়েছিলেন ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ১৬৪ জন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ হজযাত্রী ছিলেন ২ লাখ ২১ হাজার ৮৫৪ জন। বিশ্বজুড়ে ২০০টিরও বেশি দেশের মানুষ ঐ হজে অংশ নিয়েছিলেন।
এইবারের হজে ১২ বছরের নিচের শিশুদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনুমতিপত্র ছাড়াই হজে অংশ নিলে পাঁচ হাজার ডলার জরিমানা এবং সৌদি আরবে প্রবেশে দশ বছরের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হজ ইসল ম অবস থ করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।